নুসরাত হত্যা মামলার বাদীর সাক্ষ্যগ্রহণ সমাপ্ত, আসামীদের জামিন নামঞ্জুর
অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ৩০ জুন ২০১৯, ১৮:৫৮ | আপডেট : ৩০ জুন ২০১৯, ১৯:০১
সোনাগাজীর মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে পুড়িয়ে হত্যা মামলায় বাদী নুসরাতের ভাই মাহমুদুল হাসান নোমানের সাক্ষ্যগ্রহণ আজ রবিবার (৩০ জুন) সমাপ্ত হয়েছে। আদালতের বিচার কাজ সকাল সাড়ে ১১টায় শুরু হয়ে বিকেল ৫ টায় সমাপ্ত হয়। আসামী পক্ষের আইনজীবিরা বাদীকে দীর্ঘ সময় ধরে জেরা করেন।
এর আগে সকালে মামলার আসামী অধ্যক্ষ সিরাজ-উদ-দৌলা, নূর উদ্দিন, শাহাদাত হোসেন শামীম, সোনাগাজীর পৌর কাউন্সিলর মাকসুদ আলম, সাইফুর রহমান মোহাম্মদ জোবায়ের, জাবেদ হোসেন ওরফে সাখাওয়াত হোসেন জাবেদ, হাফেজ আব্দুল কাদের, আবছার উদ্দিন, কামরুন নাহার মনি, উম্মে সুলতানা ওরফে পপি ওরফে তুহিন ওরফে শম্পা ওরফে চম্পা, আব্দুর রহিম শরীফ, ইফতেখার উদ্দিন রানা, ইমরান হোসেন ওরফে মামুন, মোহাম্মদ শামীম, আওয়ামী লীগ সভাপতি রুহুল আমীন ও মহিউদ্দিন শাকিলকে কড়া নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে ফেনীর নারী শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়।
আদালতের পিপি হাফিজ আহাম্মদ জানান,আসামীদের উপস্থিতিতে মামলার বাদী নুসরাতের ভাই মাহদুল হাসান নোমানকে জেরা করেন তাদের আইনজীবিরা। আসামী পক্ষের আইনজীবিরা দুই কার্য দিবসে তাদের জেরা সমাপ্ত করেন। একই দিন মামলার অপর দুই স্বাক্ষী নুসরাতের দুই সহপাঠী নিশাত সুলতানা ও নাসরিন সুলতানার সাক্ষ্য নেওয়ার দিন ধার্য থাকলেও তাদের স্বাক্ষ্য গ্রহন না করে আদালতের কার্যক্রম মুলতবী করেন। বিচারক সোমবার(০১ জুলাই) তাদের স্বাক্ষ্য গ্রহনের দিন ধার্য করেন।
জেরা সমাপ্ত হওয়ার পর আসামীদের আইনজীবিরা আদালতে তাদের জামিন প্রার্থনা করেন। আসামী কামরুন নাহার মনির আইনজীবি এডভোকেট নুর ইসলাম আদালতে বলেন, পিবিআই ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মনিকে জবানবন্দি দিতে বাধ্য করে, মনি অত্র আদালতে সেই জবানবন্দির বিরুদ্ধে নারাজি পিটিশন দাখিল করেছে। ম্যাজিস্ট্রেট জাকির হোসেন গত ২০ এপ্রিল মনির জবানবন্দি গ্রহন করেন কিন্তু তিনি সেই জবানবন্দি স্বাক্ষর করেন ১৯ এপ্রিল। তিনি আদালতকে আরো বলেন,মনির কাছ থেকে সাদা কাগজে স্বাক্ষর নিয়ে ম্যাজিস্ট্রেট পরে ইচ্ছেমত বক্তব্য লিপিবদ্ধ করেন। ম্যাজিস্ট্র্রেট সঠিকভাবে তার হলফনামা পর্যন্ত লিপিবদ্ধ করেননি। তার মক্কেল অন্তঃসত্ত্বা তাই মানবিক কারনে জামিন পাওয়ার অধিকার রয়েছে । এরপর আসামী রুহুল আমিনের আইনজীবি কামরুল হাসান, মকছুদের আইনজীবি গিয়াস উদ্দিন নান্নু সহ অপর আসামীর আইনজীবিরা তাদের জামিন আবেদন করেন। আসামী পক্ষের আইনজীবিদের শুনানির পর রাষ্ট্র পক্ষের আইনজীবিরা আসামীদের জামিনের তীব্র বিরোধীতা করেন। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে আদালতের বিচারক মামুনুর রশিদ জামিনের আবেদন না মঞ্জুর করেন।
এর আগে গত ২৮ মে ফেনীর আমলি আদালতের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম মো. জাকির হোসাইনের আদালতে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) পরিদর্শক ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মো. শাহ আলম ১৬ জনকে অভিযুক্ত করে ৮০২ পৃষ্ঠার অভিযোগপত্র দাখিল করেন। এরপর গত ৩০ মে মামলার ধার্য তারিখে আসামিদের আদালতে হাজির করা হলে আদালত শুনানি না করে মামলাটি ফেনীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালতে পাঠানোর আদেশ দেন। ১০ জুন মামলাটি আমলে নিয়ে শুনানি শুরু হয় এবং ২০ জুন আসামীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন।
আসামিদের আইনজীবীরা এ মামলাটি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ গঠনের বৈধতা বিষয়ে বিচারকের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। তারা মামলার ধারার (নারী ও শিশুনির্যাতন দমন আইন ২০০০ (সংশোধিত ২০০৩) এর ৪ (১) ও ৩০ ধারা) বিষয়ে আদালতের আপত্তি জানান। ‘পরে আসামিরা তাদের বক্তব্য শুনতে বিচারকের কাছে আর্জি জানান। আদালত একে একে ১৬ আসামির বক্তব্য শোনে। তাদের মধ্যে ১২ আসামি ১৬৪ ধারায় দেওয়া জবানবন্দি প্রত্যাহার চেয়ে আবেদন করেন।
প্রসঙ্গত, সোনাগাজীর ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসার আলিম পরীক্ষার্থী নুসরাত জাহান ওরফে রাফিকে গত ৬ এপ্রিল গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয় দুর্বৃত্তরা। ১০ এপ্রিল চিকিৎসাধীন অবস্থায় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি বিভাগে মারা যান তিনি। এ ঘটনায় নুসরাতের ভাই মাহমুদুল হাসান নোমান বাদী হয়ে আট জনকে আসামি করে সোনাগাজী থানায় মামলা করেন। পরে মামলাটি পিবিআইতে স্থানান্তর করা হয়। পুলিশ ও পিবিআই এই মামলায় ২১ জনকে গ্রেফতার করে। তাদের মধ্যে ১২ জন আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।
এর আগে গত ২৭ মার্চ নিজ কক্ষে ডেকে নুসরাতকে শ্লীলতাহানি করেন অধ্যক্ষ সিরাজ উদ্দৌলা। এ ঘটনায় নুসরাতের মা বাদী হয়ে সোনাগাজী মডেল থানায় মামলা করলে পুলিশ সিরাজ উদ্দৌলাকে গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠায়। ওই মামলা তুলে না নেওয়ার কারণে আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করা হয় নুসরাতকে।
এবিএন/আবুল হোসেন রিপন/জসিম/তোহা
এর আগে সকালে মামলার আসামী অধ্যক্ষ সিরাজ-উদ-দৌলা, নূর উদ্দিন, শাহাদাত হোসেন শামীম, সোনাগাজীর পৌর কাউন্সিলর মাকসুদ আলম, সাইফুর রহমান মোহাম্মদ জোবায়ের, জাবেদ হোসেন ওরফে সাখাওয়াত হোসেন জাবেদ, হাফেজ আব্দুল কাদের, আবছার উদ্দিন, কামরুন নাহার মনি, উম্মে সুলতানা ওরফে পপি ওরফে তুহিন ওরফে শম্পা ওরফে চম্পা, আব্দুর রহিম শরীফ, ইফতেখার উদ্দিন রানা, ইমরান হোসেন ওরফে মামুন, মোহাম্মদ শামীম, আওয়ামী লীগ সভাপতি রুহুল আমীন ও মহিউদ্দিন শাকিলকে কড়া নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে ফেনীর নারী শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়।
আদালতের পিপি হাফিজ আহাম্মদ জানান,আসামীদের উপস্থিতিতে মামলার বাদী নুসরাতের ভাই মাহদুল হাসান নোমানকে জেরা করেন তাদের আইনজীবিরা। আসামী পক্ষের আইনজীবিরা দুই কার্য দিবসে তাদের জেরা সমাপ্ত করেন। একই দিন মামলার অপর দুই স্বাক্ষী নুসরাতের দুই সহপাঠী নিশাত সুলতানা ও নাসরিন সুলতানার সাক্ষ্য নেওয়ার দিন ধার্য থাকলেও তাদের স্বাক্ষ্য গ্রহন না করে আদালতের কার্যক্রম মুলতবী করেন। বিচারক সোমবার(০১ জুলাই) তাদের স্বাক্ষ্য গ্রহনের দিন ধার্য করেন।
জেরা সমাপ্ত হওয়ার পর আসামীদের আইনজীবিরা আদালতে তাদের জামিন প্রার্থনা করেন। আসামী কামরুন নাহার মনির আইনজীবি এডভোকেট নুর ইসলাম আদালতে বলেন, পিবিআই ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মনিকে জবানবন্দি দিতে বাধ্য করে, মনি অত্র আদালতে সেই জবানবন্দির বিরুদ্ধে নারাজি পিটিশন দাখিল করেছে। ম্যাজিস্ট্রেট জাকির হোসেন গত ২০ এপ্রিল মনির জবানবন্দি গ্রহন করেন কিন্তু তিনি সেই জবানবন্দি স্বাক্ষর করেন ১৯ এপ্রিল। তিনি আদালতকে আরো বলেন,মনির কাছ থেকে সাদা কাগজে স্বাক্ষর নিয়ে ম্যাজিস্ট্রেট পরে ইচ্ছেমত বক্তব্য লিপিবদ্ধ করেন। ম্যাজিস্ট্র্রেট সঠিকভাবে তার হলফনামা পর্যন্ত লিপিবদ্ধ করেননি। তার মক্কেল অন্তঃসত্ত্বা তাই মানবিক কারনে জামিন পাওয়ার অধিকার রয়েছে । এরপর আসামী রুহুল আমিনের আইনজীবি কামরুল হাসান, মকছুদের আইনজীবি গিয়াস উদ্দিন নান্নু সহ অপর আসামীর আইনজীবিরা তাদের জামিন আবেদন করেন। আসামী পক্ষের আইনজীবিদের শুনানির পর রাষ্ট্র পক্ষের আইনজীবিরা আসামীদের জামিনের তীব্র বিরোধীতা করেন। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে আদালতের বিচারক মামুনুর রশিদ জামিনের আবেদন না মঞ্জুর করেন।
এর আগে গত ২৮ মে ফেনীর আমলি আদালতের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম মো. জাকির হোসাইনের আদালতে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) পরিদর্শক ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মো. শাহ আলম ১৬ জনকে অভিযুক্ত করে ৮০২ পৃষ্ঠার অভিযোগপত্র দাখিল করেন। এরপর গত ৩০ মে মামলার ধার্য তারিখে আসামিদের আদালতে হাজির করা হলে আদালত শুনানি না করে মামলাটি ফেনীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালতে পাঠানোর আদেশ দেন। ১০ জুন মামলাটি আমলে নিয়ে শুনানি শুরু হয় এবং ২০ জুন আসামীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন।
প্রসঙ্গত, সোনাগাজীর ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসার আলিম পরীক্ষার্থী নুসরাত জাহান ওরফে রাফিকে গত ৬ এপ্রিল গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয় দুর্বৃত্তরা। ১০ এপ্রিল চিকিৎসাধীন অবস্থায় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি বিভাগে মারা যান তিনি। এ ঘটনায় নুসরাতের ভাই মাহমুদুল হাসান নোমান বাদী হয়ে আট জনকে আসামি করে সোনাগাজী থানায় মামলা করেন। পরে মামলাটি পিবিআইতে স্থানান্তর করা হয়। পুলিশ ও পিবিআই এই মামলায় ২১ জনকে গ্রেফতার করে। তাদের মধ্যে ১২ জন আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।
এর আগে গত ২৭ মার্চ নিজ কক্ষে ডেকে নুসরাতকে শ্লীলতাহানি করেন অধ্যক্ষ সিরাজ উদ্দৌলা। এ ঘটনায় নুসরাতের মা বাদী হয়ে সোনাগাজী মডেল থানায় মামলা করলে পুলিশ সিরাজ উদ্দৌলাকে গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠায়। ওই মামলা তুলে না নেওয়ার কারণে আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করা হয় নুসরাতকে।
এবিএন/আবুল হোসেন রিপন/জসিম/তোহা
এই বিভাগের আরো সংবাদ