আজকের শিরোনাম :

৯ ঘন্টার চেষ্টার পর সড়কের গর্ত থেকে উঠল বালুভর্তি ট্রাক!

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ২২ জুন ২০১৯, ২২:২৫

ঘড়ির কাঁটায় সময় তখন রাত ১১ টা পুরো সড়ক জুড়ে আছে একটি ট্রাক। চেষ্টা সড়কে সৃষ্ট গর্ত থেকে উঠার। কিন্তু যত ট্রাকটি উঠার চেষ্টা করছে ততই মনে হচ্ছিল আরও অসম্ভব হয়ে পড়ছে গর্ত থেকে মুক্তি পাওয়ার। সারারাত প্রতিক্ষার পর সকালে ট্রাক থেকে বালু নামিয়ে ৯ ঘন্টা পর অবশেষে ট্রাকটি উঠাতে সক্ষম হয় ড্রাইভার এমনটি জানান রাতে ট্রাকটিকে দেখে যাওয়া এবং সকালে গর্ত থেকে উঠার চেষ্টার প্রত্যক্ষদর্শী একজন।

ঘটনাটি শুধু একদিনের নয় এটি প্রতিনিয়ত ঘটে বলে জানান সড়কের পাশে থাকা দোকানীরা। উপজেলা সদরের কোন সড়ক এমনটি হয় কিনা সেটাও মানতে নারাজ ট্রাক ড্রাইভার সবুজ।  সড়কটি বালিয়াকান্দি উপজেলা সদরের ওয়াপদা সংলগ্ন ওয়াপদা-মধুখালী সড়কে যাতায়াতকারী যানবাহন চালকের প্রতিনিয়ত দুর্ভোগের চিত্র এটি।
 
মঙ্গলবার পাংশার হাবাসপুর থেকে বালু লোড দিয়ে মাগুরা যাচ্ছিল ট্রাক চালক সবুজ। রাত ১১টার সময় বালিয়াকান্দি ওয়াপদা সংলগ্ন দীর্ঘদিনের খানাখন্দ সড়কে আটকে যায় তার ট্রাক। বুধবার সকাল ৮ টার পর ট্রাকের বালু গাড়ী থেকে নামানোর পর পিছনে ইঞ্চিন চালিত বাহন দিয়ে ধাক্কা দিয়ে গর্ত থেকে উঠাতে সক্ষম হয়।
 
ট্রাক ড্রাইভার সবুজ বলেন, পাংশা থেকে মাগুরা যাওয়ার উদ্দেশ্যে বালিয়াকান্দি সদরের ওয়াপদায় এসে আমার ট্রাকটি সড়কের মাঝ খানে আটকে যায়। সড়কে পানি থাকায় বুঝতে পারিনি গর্তটি বড় ছিল। উপজেলা সদরের সড়কের এই হাল হয় সেটি আমার জানা ছিল না। যাই হোক ৯ ঘন্টা চেষ্টার পর সকালে আল্লাহ মুক্তি দিয়েছে।
 
বালিয়াকান্দি হাসপাতাল থেকে চৌরাস্তা হয়ে বাজারের মধ্যে দিয়ে যাওয়া সোনাপুর সড়কটির অবস্থা খুবই ভালো। সম্প্রতি থানা রোড পাকাকরণ করা হয়েছে। বালিয়াকান্দি স্টেডিয়াম মাঠ থেকে সাধু মোল্যার মোড়, সাধু মোল্যার মোড় থেকে ওয়াপদা মোড়, ওয়াপদা মোড় থেকে তালপট্টি, বালিয়াকান্দি চৌরাস্তা থেকে ঘিকমলা প্রায় ১৪ কিলোমিটার বালিয়াকান্দি থানা গেট থেকে চন্দনা ব্রিজের সড়কের অধিকাংশ জায়গাতে ভাঙাচোরা সড়কে ধুলোবালির প্রলেপ সৃষ্টি হয়েছে। বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতা আর শুকনো মৌসুমে যানবাহন চলার সময় ধুলাবালিতে একাকার হয়ে যায়ে। সড়কের পাশে বাড়িগুলোতে ধুলার আস্তরণ পড়ে রয়েছে। দীর্ঘদিন যাবত সদরের সড়কের এই অবস্থা থাকায় সাধারণ মানুষের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হচ্ছে।

   ক্ষোভ ঝেড়েছেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যক্তি তারা বলছেন কোনমতো যানবাহন চলাচলের যোগ্য করে তোলার জন্য সামান্য কয়েকশত ইট দিলেই সম্ভব এও কি আশা করতে পারেনা স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের নিকট যানবাহন চালকরা ?

তবে খুব শীঘ্রই সড়কের চিত্র বদলাচ্ছেনা বলে সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে। উপজেলা চেয়ারম্যান বলছেন, এটা এলজিইডির বিষয়, এলজিইডির দাবী আমরা বিষয়টির সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে উর্দ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাচ্ছি। জেলা নির্বাহী প্রকৌশলী সড়কের বেহাল দশার বিষয়টি স্বীকার করে বলেন সড়কটি প্রকল্পভুক্ত হওয়ায় সময় লাগবে, তবে আশা করছি খুব শীঘ্রই হবে। ২০১৯ সালের মধ্যে হবে কি না এমনটি নিশ্চিত করতে পারেন নি হতে পারে বলে জানিয়েছেন।

বালিয়াকান্দি থেকে নারুয়া এবং বালিয়াকান্দির ওয়াপদা থেকে মধুখালী সড়ক দীর্ঘদিন খানাখন্দ সৃষ্টি হওয়ায় চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে সড়কে যাতায়াতকারীদের। বিষয়টি আমাদের খুবই লজ্জাকর অবস্থায় ফেলছে। প্রতিনিয়ত বালিয়াকান্দি উপজেলা প্রকৌশল দপ্তর থেকে উর্দ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হচ্ছে। তিনি বলেন, আরসিআইপি নামে একটি প্রকল্পে সড়কগুলো অন্তর্ভুক্ত হয়েছে আসা করছি দ্রুত সড়কগুলো মেরামতের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান বালিয়াকান্দি উপজেলা প্রকৌশলী সজল কুমার দত্ত।

উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আবুল কালাম আজাদ জানান, সড়কগুলো এলজিইডি দেখভাল করছে। ৬ মাস আগে আমরা ৬ লাখ টাকা খরচ করে ইট, খোয়া দ্বারা মেরামত করেছি।

রাজবাড়ীর নির্বাহী প্রকৌশলী খান এ শামীম বলেন, বালিয়াকান্দি সদরকেন্দ্রিক সড়ক এবং বালিয়াকান্দি থেকে নারুয়া, ওয়াপদা-মধুখালী সড়কের অবস্থা খুবই খারাপ। সড়কগুলো আরসিআইপি প্রকল্পভুক্ত হয়েছে। ইতোমধ্যে সড়কগুলোর স্টেটিমেট মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে, এখনো আমরা টেন্ডার করার অনুমতি পাইনি। আশা করছি খুব শীঘ্রই আমরা টেন্ডারে অনুমতি পাব, এরপরই সড়কের দৃশ্যমান উন্নয়ন ঘটাতো পারব। সড়কটি যাতায়াতের অযোগ্য হয়ে পড়েছে এমন প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, অপেক্ষা করতে হবে খুব তাড়াতাড়ি ঠিক হয়ে যাবে।

এবিএন/খন্দকার রবিউল ইসলাম/জসিম/রাজ্জাক

এই বিভাগের আরো সংবাদ