আজকের শিরোনাম :

চিতলমারীর অধিকাংশ কৃষক সরকারি গুদামে ধান বিক্রি করতে পারেননি

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ২১ জুন ২০১৯, ২২:৪২

বাগেরহাটের সুরশাইল গ্রামের কৃষক আব্দুল মোমিম (এমবিএ)। এ বছর ৪ একর জমিতে বোরো ধানের চাষ করেছিলেন। ফলনও হয়েছিল বাম্পার। মোট উৎপাদন হয়েছিল ১২ মেট্রিকটন (৩০০ মন) ধান। বহু দৌড়-ঝাপ করে তার ও তার পিতার কৃষি কার্ডে সরকারি ভাবে এক মেট্রিকটন ধান বিক্রয়ের তালিকায় গেলেও শেষ পর্যন্ত এক কেজি ধানও তিনি সরকারি গুদামে বিক্রয় করতে পারেননি।

একই উপজেলার কুরমনি গ্রামের রেজাউল দাড়িয়া তার নামও সরকারি তালিকায় ছিল। কিন্তু তিনিও এককেজি ধান বিক্রি করতে পারেননি সরকার নির্ধারিত মূল্যে।
শুধু মোমিন শেখ আর রেজাউল নয় এ উপজেলার তালিকাভুক্ত কৃষকের মধ্যে অধিকাংশ কৃষক এখনও সরকারি ভাবে এক তোলা ধানও বিক্রি করতে পারেননি। যোগাযোগ ব্যবস্থার সমস্যা, স্থানীয়ভাবে গোডাউন না থাকা এবং কর্তৃপক্ষের দূর্ব্যবহারের কারণে এ জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে বলে কৃষকরা অভিযোগ তুলেছেন।

কৃষক সুধাংশু মন্ডল, হরেকৃষ্ণ বিশ্বাস, অনুপ বিশ্বাস, বুদ্ধ বসু, মুজিবর বিশ্বাস, পরিমল মজুমদার ও আলমগীর তরফদারসহ অসংখ্য কৃষক প্রায় অভিন্নসুরে জানান, চিতলমারী থেকে বাগেরহাট সদর, কচুয়া ও মোল্লাহাটের দূরত্ব কমপক্ষে ২০ কিলোমিটার। রাস্তার অবস্থা খুব খারাপ। এই ভাঙা রাস্তায় একজন কৃষকের ৫০০ কেজি ধান বিক্রি করতে গেলে লাভের চেয়ে লোকসানটাই বেশী। স্থানীয় ভাবে গোডাউন না থাকায় এ সংকট সৃষ্টি হয়েছে। এছাড়া গোডাউনের লোকজন কৃষকরা সরাসরি ধান বিক্রি করতে গেলে নানা খুত ধরে ও চরম দূর্ব্যবহার করে।  

চিতলমারী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ঋতুরাজ সরকার জানান, এ বছর এ উপজেলার ৭টি ইউনিয়নের ২১টি ব্লকে প্রায় ৩০ হাজার একর জমিতে কমপক্ষে ৯০ হাজার মেট্রিটকন বোরো ধান উৎপাদিত হয়েছে। এখানের ৮১৩ জন চাষির নাম তালিকায় দেয়া হয়েছে। তারা সরকারি নির্ধারিত মূল্যে মোট ৪০৩ মেট্রিকটন ধান বিক্রি করতে পারবেন।
 
এ ব্যাপারে চিতলমারী উপজেলা খাদ্য পরিদর্শক আদুরী রাণী ব্রহ্ম জানান, এ বছর সরকারি ভাবে প্রতি কেজি ধানের দাম ২৬ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। তালিকাভুক্ত চাষিরাই শুধু সরকার নির্ধারিত দামে ধান বিক্রয় করার সুযোগ পাবেন। তার মধ্যে বাগেরহাট সদর গোডাউনে ২৫০ মেট্রিকটন, কচুয়ায় ১০০ মেট্রিকটন ও মোল্লাহাট গোডাউনে ৫৩ মেট্রিকটন ধান সংগ্রহ করা হবে। এ পর্যন্ত এক তৃতীয়াশং কৃষকের ধান সংগ্রহ হয়েছে। চিতলমারীতে খাদ্য গুদাম না থাকায় কৃষকদের ধান বিক্রিতে কিছুটা ভোগান্তি  পোহাতে হচ্ছে বলে তিনি জানান।

তবে জেলা ভারপ্রাপ্ত খাদ্য নিয়ন্ত্রক একেএম শহিদুল হক মুঠোফোনে জানান, আগামী আগষ্ট মাস পর্যন্ত ধান সংগ্রহ চলবে। এখানে দূর্নীতির কোন সুযোগ নেই। তালিকাভুক্ত চাষির ধান সংগ্রহের পর তার ব্যাংক একাউন্টে টাকা পৌছে যাবে।
এবিএন/এস এস সাগর/জসিম/রাজ্জাক

এই বিভাগের আরো সংবাদ