আজকের শিরোনাম :

নওগাঁর আমের মোকামগুলো ল্যাংড়া ও হিম সাগরের দখলে

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ১৪ জুন ২০১৯, ১০:৫৫

বর্তমানে দেশের ঐতিহাসিক জেলা নওগাঁ আমের দ্বিতীয় রাজ্য বলে পরিচিতি পেয়েছে। এখন নওগাঁর ঠাঁ ঠাঁ বরেন্দ্র অঞ্চলে উৎপাদিত আমের সুনাম দেশ জুড়ে।

শুধু দেশেই নয় লাল সবুজের গণ্ডি পেরিয়ে এখন বিদেশেও ছড়িয়ে পড়েছে নওগাঁর আম বিশেষ করে নওগাঁর মাটিতে জন্ম নেওয়া নাকফজলী। এর পাশাপাশি রয়েছে নওগাঁয় উৎপাদিত ল্যাংড়া ও হিম সাগর আমের সুনাম।

নওগাঁর বরেন্দ্র অঞ্চল পোরশা, সাপাহার, নিয়ামতপুর, পত্নীতলা ও ধামইরহাট উপজেলা। এর মধ্যে সাপাহার উপজেলা সদরে রাস্তার দু’পার্শ্বে প্রায় দুই কিলোমিটার এলাকা জুড়ে স্থাপিত কয়েক শ’ আমের আড়ৎ এখন দেশের বরেন্দ্র ভূমিতে উৎপাদিত সুমিষ্ট রসালো ফল হিমসাগর ও ল্যাংড়া আমের দখলে।

মধু মৌসুমের শুরু থেকেই দেশের এ সর্ববৃহত আমের মোকামে গুটি, গোপালভোগ, খিরশাপাতি, (হিমসাগর) ও ল্যাংড়া আম ব্যাপক হারে আমদানি হতে দেখা গেছে। স্থানীয়ভাবে সাপাহার উপজেলাসহ আশে পাশের সকল উপজেলায় আম বাগান তৈরি হওয়ার কারণে এখানে আমের বৃহৎ মোকাম গড়ে উঠেছে।

দেশের রাজধানী ঢাকা সহ চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার শত শত আম ব্যাবসায়ীরা এখানে এসে আমের আড়ৎ খুলে প্রতিদিন হাজার হাজার মন আম কেনা বেচা করছেন। বিশেষ করে সরকারিভাবে আমের বাজার নিয়ন্ত্রনে চলতি বছরে গাছ থেকে আম পাড়ার তারিখ নির্ধারণ করে দেয়ার কারণে আড়ৎগুলোতে প্রতিদিন প্রচুর পরিমাণে অনুমোদিত বিষমুক্ত ও পরিপক্ক আম আমদানি করা হচ্ছে।

বিষাক্ত রাসায়নিক দ্রব্যের ব্যবহার রোধে প্রশাসনের কঠোর ভূমিকা থাকায় স্বাস্থ্য সম্মত ফরমালিন মুক্ত আম এই এলাকায় উৎপাদন অব্যাহত রয়েছে। সাপাহারে উৎপাদিত হিমসাগর ও লেংড়া আমের কারণে দেশের সর্ব স্থরের মানুষের নিকট এ উপজেলা ইতোমধ্যে বিশেষভাবে পরিচিত হয়ে উঠেছে।

বর্তমানে উত্তরবঙ্গের সর্ব বৃহৎ এ আমের মোকামে প্রতিদিন যে পরিমান আম আমদানি ও কেনা বেচা হচ্ছে তাতে রুপালী ও নাকফজলী আম বাজারে আসলে মোকামের চিত্র অনেকটাই পাল্টে যাবে বলেও আম ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি শ্রী কার্তিক শাহা জানিয়েছেন। উপজেলার কৃষকগন এবারে ধানের মূল্য বিভ্রাটে কিছুটা হিমশিম খেলেও আমের বাজার ভাল থাকায় ধানের সে ক্ষতি কিছুটা হলেও আমের উপর উঠে আসবে বলেও আম বাগান মালিকগণ মনে করছেন।

সাপাহার উপজেলা কৃষি অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ি উপজেলায় প্রায় ৫হাজার হেক্টর জমিতে বিভিন্ন প্রকার উন্নত জাতের আম চাষ করা হয়েছে। কৃষি বিভাগের হিসেব মতে প্রতি হেক্টর জমিতে ১৭ মে:টন আম উৎপাদন হয়।

সাপাহার উপজেলায় এবারে ৮০ থেকে ৯০ হাজার মে:টন আম উৎপাদন হবে। যার আনুমানিক বাজার মূল্য প্রায় ৩০কোটি টাকা। প্রতি বছর আমের মৌসুমে আম ব্যবসা ও বাজারজাত করনে এলাকার হাজার হাজার শ্রমজীবী মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে।

বৃহত্তর এই আমের মোকাম ও উৎপাদিত আমের কারনে উপজেলার সর্বস্তরের মানুষ অর্থনৈতিক ভাবে উপকৃত হচ্ছেন। অপরদিকে সর্ব বৃহৎ এ আমের মোকামের আড়ৎদার, আম ব্যবসায়ী, আম চাষি ও বাগান মালিকদের সকল প্রকার নিরাপত্তা নিশ্চিত করনে প্রতিদিন প্রশাসনের পক্ষ থেকে সদরে বিভিন্ন পয়েন্টে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। সব মিলিয়ে এ উপজেলার সর্বত্র আম কেন্দ্রীক উৎসব ও আমেজ বিরাজ করছে।

এবিএন/শংকর রায়/জসিম/পিংকি

এই বিভাগের আরো সংবাদ