আজকের শিরোনাম :

বোয়ালখালীতে লেবুর বাম্পার ফলনে কৃষকের মুখে হাসি

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ১২ জুন ২০১৯, ১২:৩৬

বোয়ালখালী উপজেলার পাহাড়ে উৎপাদিত লেবুর চাহিদা রয়েছে সারাদেশে। উপজেলার শ্রীপুর-খরণদ্বীপ ইউনিয়নের জ্যৈষ্ঠপুরা, আমুচিয়া ও কড়লডেঙ্গা ইউনিয়নে প্রায় ৫ শতাধিক লেবু বাগান। গেল রমজানে লেবুর চাহিদা ছিলো কয়েকগুণ।

এ দিকে লেবুর ভালো ফলনে কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে। এবার গ্রীষ্ম মৌসুমে খুচরা বাজারে লেবুর চাহিদা রয়েছে প্রচুর। ফলে ভালো দাম পাচ্ছেন কৃষক। উপজেলার বিভিন্ন বাগান থেকে গড়ে প্রতিদিন ২০-২৫ লাখ টাকার লেবু বাজারজাত করা হচ্ছে। গত এক মাসে  বোয়ালখালী থেকে ৫-৬ কোটি টাকার লেবু দেশের বিভিন্ন স্থানে বাজারজাত করা হয়েছে বলে জানান চাষিরা ।

বোয়ালখালী উপজেলার পূর্বাঞ্চলের পাহাড়ি এলাকায় ছোট-বড় প্রায় ৫ শতাধিক লেবু বাগান রয়েছে। এসব বাগানে ১০ থেকে ১৫ হাজার শ্রমিক কাজ করেন। নিয়মিত পরিচর্যার কারণে প্রায় হাজার একরের লেবু বাগানে এবার ফলন হয়েছে আগের বারের তুলনায় ৪০ থেকে ৪৫ শতাংশ বেশি।
ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায় উপজেলার কর্ণফুলী থেকে শুরু করে বোয়ালখালী-পটিয়া সীমান্ত পর্যন্ত জ্যৈষ্ঠপুরা গুচ্চগ্রাম, আমুচিয়া নয়া বাজার, কড়লডেংগা মৌলভীবাজার, তালুকদার পাড়া, লুদি সিকদার পাড়া পয়েন্টে দৈনিক ৯০০ থেকে এক হাজার বস্তা লেবু সরবরাহ হয়। বাজার দাম অনুসারে দৈনিক ২৫ থেকে ২৮ লাখ টাকার লেবু সরবরাহ হচ্ছে এখন। ঢাকার শ্যামবাজার, কাওরান বাজার, কুমিল্লার নিমসা বাজার, নোয়াখালী বাজার, চট্টগ্রাম নগরীর রিয়াজ উদ্দিন বাজারের পাইকারি আড়তে এসব লেবু সরবরাহ করা হয়। খুচরা বাজারে আকার অনুযায়ী প্রতি লেবু ৫-১০ টাকায় বিক্রি করছেন ব্যবসায়ীরা।

উপজেলার জ্যৈষ্ঠপুরার লেবু চাষি মো. মোজাম্মেল হক বকুলের লেবু বাগান রয়েছে ১৫০ একর। মো. রহমানের ৪০ একর, মো. এরশাদের ৪০ একর, নূর হোসেনের ২৫ একর, মকবুল আহমদের ২২ একর, আমুচিয়া ও কড়লডেঙ্গা এলাকার আবু তাহেরের ১০০ একর, রাসেলের ৬০ একর ও রুবেলের ৫০ একর লেবু বাগান রয়েছে। 

তারা জানান ফলন ভালো হওয়ায় ও বাজারে দাম থাকায় এবার তারা লাভের আশা করছেন। আগের বছরে চাহিদা থাকলেও ফলন তেমন ভালো হয়নি। ফলে খরচ তুলতে হিমশিম খেতে হয়েছে।

২০১৪ সালে জাতীয় পুরস্কার পাওয়া জ্যৈষ্ঠপুরা পাহাড়ের লেবু চাষি মোজাম্মেল হক বকুল জানান পাহাড়ি ভূমিতে তার লেবু বাগান রয়েছে প্রায় ১৫০ একর। এবার বাগানে সেচ দেয়ার ফলে ফলন ভালো হয়েছে। চলতি বছরে গত তিন মাসে ৪ লাখ টাকার লেবু বিক্রি করেছেন তিনি।  

তিনি বলেন, লেবু চাষে সরকারি কোনো সহযোগিতা নেই বললেই চলে। সরকারি সহযোগিতা ও কৃষি অধিদপ্তরের মনিটরিং থাকলে উৎপাদন অনেকাংশে বৃদ্ধি পেত।

স্থানীয় লেবু চাষি ও ব্যবসায়ী সাইদুল ইসলাম রাসেল সরকারের কাছে আবেদন জানিয়ে বলেন 'আমাদের দেশে পানীয় ডিটারজেন্ট ও সাবান উৎপাদনকারী যেসব প্রতিষ্ঠান আমদানিকৃত লেবুর উপাদান ব্যবহার করে সেসব প্রতিষ্ঠান যদি আমাদের উৎপাদিত লেবু ব্যবহার করে তবে তাদের জন্যও উপকার হতো, দেশের লেবু চাষি ও ব্যবসায়ীরাও লাভবান হতেন। এ ছাড়া পাহাড়ে উৎপাদিত ফসল সংরক্ষণে হিমাগারের দাবি জানান তিনি'
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. আতিক উল্লাহ্ বলেন 'সাধারণত যারা পাহাড়ে লেবু চাষ করেন তারা বাগানে পর্যাপ্ত পরিচর্যা না করায় ফলন কম হয়। এবার বাগানে পানি সেচসহ পরিচর্যা করায় লেবুর ফলন ভালো হয়েছে। ফলন বাড়াতে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করার পাশাপাশি চাষিদের প্রযুক্তিগত সহায়তা করি আমরা।

এবিএন/রাজু দে/গালিব/জসিম

এই বিভাগের আরো সংবাদ