আজকের শিরোনাম :

হাতীবান্ধায় স্বামীর দেয়া গরম দুধে ঝলসে গেছে গৃহবধূ

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ১২ জুন ২০১৯, ১১:৪৯

যৌতুকের বলি লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার আপিয়া বেগম নামে এক গৃহবধূকে গরম দুধে ঝলসে দিয়েছেন তার স্বামী মাসুদ রানা। 

গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় গুরুতর আহত গৃহবধূকে হাতীবান্ধা উপজেলা হাসপাতালে ভর্তি করেন প্রতিবেশীরা। 

এ ঘটনায় ওই গৃহবধূর দেবর সাজুকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। 

লম্পট স্বামী মাসুদ রানা উপজেলার বড়খাতা ইউনিয়নের পশ্চিম সারডুবি গ্রামের আব্দুস সামাদের ছেলে। আপিয়া বেগম মাসুদের স্ত্রী এবং একই গ্রামের আব্দুর রহমানের মেয়ে।

হাসপাতাল ও স্থানীয়রা জানান প্রায় ১৩ বছর আগে ৫০ হাজার টাকা যৌতুকে বিয়ে হয় মাসুদ-আপিয়া দম্পতির। বিয়ের কিছু দিন সংসার ভালভাবে চললেও পরে যৌতুকে চাপ দেন জুয়াড়ি স্বামী মাসুদ রানা। সাধ্যমত জামাইয়ের চাহিদা নিবারণ করেন আপিয়ার বাবা মা। জুয়ায় টাকা হারিয়ে পুনরায় স্ত্রীকে যৌতুকের দাবি করেন স্বামী মাসুদ। সংসার সচল রাখতে ইট ভাটায় শ্রমিকের কাজ নেয় গৃহবধূ আপিয়া।

গত সোমবার পুনরায় যৌতুকের টাকা আনতে আপিয়াকে বাবার বাড়ি যেতে বলেন। কিন্তু না যাওয়ায় তার সাথে বিতন্ডা বাঁধে স্বামী মাসুদের। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে সন্তানের জন্য আপিয়া সেমাই রান্না করছিল। এ সময় সেমাই রান্নার গরম দুধ আপিয়ার শরীরে ঢেলে দেয় স্বামী মাসুদ। 

পরে তার আত্মচিৎকারে স্থানীয়রা এসে তাকে উদ্ধার করে হাতীবান্ধা হাসপাতালে ভর্তি করেন। এরই মধ্যে আপিয়ার পিঠের ওপর গলায় ঝলসে যায়।

হাসপাতালের বেডে আপিয়া কান্না জড়িত কণ্ঠে বলেন ‘আমার স্বামী টাকার জন্য সব সময় আমাকে মারধর করেন। আমি ইট ভাটায় কাজ করে টাকা আয় করে তাকে দেই। আর সেই টাকা দিয়ে আমার স্বামী জুয়া খেলে শেষ করে। গত সোমবারও আমাকে বাবার বাড়ি থেকে টাকা আনতে বলে। আমি টাকা আনতে যায়নি বলেই কড়াই ভর্তি গরম সেমাই শরীরে ঢেলে দিয়েছে মাসুদ। মূলত টাকার জন্যই আমার শরীর গরম সেমাই ঢেলে পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে বলতে বলতে ডুকরে কেঁদে উঠেন আহত গৃহবধূ আপিয়া বেগম।

আপিয়ার মা মর্জিনা বেগম বলেন ‘আমরা গরীব মানুষ তবুও যতটুকু পারি জামাই মাসুদকে টাকা দিয়ে সাহায্য করি। জামাই খুবই খারাপ। বিয়ের পর থেকে আমার মেয়েকে কারণে অকারণে মারধর করেন। আমি এর সঠিক বিচার চাই’।

হাতীবান্ধা হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. নাঈম হাসান নয়ন বলেন আপিয়ার শরীরের কিছু অংশ ঝলছে গেছে। বর্তমানে তিনি চিকিৎসাধীন অবস্থায় রয়েছেন’।

হাতীবান্ধা থানার ওসি ওমর ফারুক লালমনি বলেন এ ঘটনায় থানায় একটি মামলা হয়েছে। গৃহবধূর দেবর সাজুকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকি আসামি গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। 

এবিএন/আসাদুজ্জামান সাজু/গালিব/জসিম
 

এই বিভাগের আরো সংবাদ