আজকের শিরোনাম :

নাসিরনগরের সহকারী ভূমি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ১০ জুন ২০১৯, ১০:৪৫

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগর সদরের ঘোষ পাড়ার বাসিন্দা মনোরঞ্জন গোপের পৈতৃক জমি ভূয়া আবেদনকারী সাজিয়ে দালাল চক্রের মাধ্যমে নামজারী করে জবরদখলের পায়তারা করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। 

সদর ইউনিয়ন সহকারী ভূমি কর্মকর্তা বজলুর হক সাগর অন্যান্য কর্মকর্তাদের যোগসাজসে, নাসিরনগর মৌজার এস এ ২৮৩৬ হালে ৯০২১ দাগে ৪০ শতক জমি নামজারী ও জমা খারিজ করে দিবে বলে ভূক্তভোগী মনোরঞ্জন গোপের কাছে ২ লক্ষ টাকা ঘুষ দাবি করে। অসহায় মনোরঞ্জন গোপ ২ লক্ষ টাকা ঘুষ দেওয়া তার পক্ষে সম্ভব নয় বলায় সহকারী ভূমি কর্মকর্তা বজলুল হক সাগর মনোরঞ্জন গোপকে গালিগালাজ করে তার অফিস থেকে বের করে দেয়। বলে টাকা না দিলে ওই জমি অন্যের নামে খারিজ করে দিবে। 

পরবর্তীতে উক্ত সহকারী ভূমি কর্মকর্তা জনৈক বাসনি রানী দত্ত নামে একজন আবেদনকারী ৪০ শতক জমি নামজারী জমা খারিজের জন্য সহকারী কমিশনার ভূমি নাসিরনগর অফিসে আবেদন করেন। 

উক্ত ঘটনা ভূক্তভোগী মনোরঞ্জন গোপ জানার পর সহকারী কমিশনার ভূমি নাসিরনগরের নিকট তার প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দেন। খারিজ করার পূর্বে শুনানীর মাধ্যমে উভয়পক্ষকে হাজির রাখার জন্য সহকারী কমিশনার ভূমি মহোদয়ের কাছে অনুরোধ করেন। তৎকালীন সহকারী কমিশনার ভূমি মনোরঞ্জন গোপের আবেদনের প্রেক্ষিতে তাহার কার্যালয়ের সার্ভেয়ার দ্বারা নালিশা জমি সরজমিনে তদন্ত করান। সার্ভেয়ার তদন্ত রিপোর্টে উল্লেখ করেন নালিশা জমি দীর্ঘদিন যাবৎ মনোরঞ্জন গোপের দখলে আছে এবং উক্ত নালিশা জমিতে মনোরঞ্জন গোপের চাষকৃত ধান রয়েছে। 

সহকারী কমিশনার ভূমি নাসিরনগর নামজারী জমা খারিজ মোকদ্দমা নং-৫৫৩/১৮-১৯ না মঞ্জুর করেন। আইনঅনুযায়ী ১৯৮৪ বি.এল.ডি এ ডি ১৫৯ এস.এ.টি এক্ট এর ১৪৩ এ ধারা অনুযায়ী খতিয়ান সংশোধনের ব্যাপারে গুরত্বপূর্ণ বিষয় হলো দখলের বিষয় বিবেচনা করা স্বত্বের বিষয় নয়। যে, নালিশা জমি আবেদনকারীর ভোগ দখলে নাই এবং উক্ত বি. এস ১/১ খতিয়ানভূক্ত বিধায় পরবর্তীতে সহকারী কমিশনার (ভূমির) আদেশের বিরুদ্ধে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) ব্রাহ্মণবাড়িয়া আদালতে সহকারী ভূমি কর্মকর্তা বজলুল হক ও এস এ শাখার সার্ভেয়ার মো. আলী মনসুরের সহযোগিতা জনৈক বাসনি রানী দত্তের নামে আপিল মামলা দায়ের করে। 

এতে ভূক্তভোগী মনোরঞ্জন গোপের আইনজীবী গত ১৫ মে তারিখে আপিল আবেদনকারীকে ন্যাশনাল আইডি কার্ডসহ মাননীয় আদালতে হাজীর থাকার আবেদন করেন। কিন্তু ধার্য তারিখে আদালত আবেদনকারীকে হাজিরের কোনো ব্যবস্থা না নিয়ে সহকারী কমিশনার ভূমি নাসিরনগরের নামজারী ও জমাখারিজ মামলা বাতিল করে অ্যাপিলেন্ট পক্ষের নিকট থেকে নতুন আবেদন নিয়ে নামজারী ও জমাখারিজ করে দেওয়ার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য গত ১৩ মে নির্দেশ প্রধান করেন । 

উক্ত আদেশের বিরুদ্ধে ভূক্তভোগী মনোরঞ্জন গোপ বিভাগীয় কমিশনার (রাজস্ব) চট্টগ্রাম আদালতে আপিলের জন্য সার্টিফাইট কপি পাওয়ার জন্য আবেদন করে। ২৯ মে কপি পেয়ে ৩০ মে অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (রাজস্ব) আদালতে আইনজীবীর মাধ্যমে আদেশের বিরুদ্ধে আপিল করেন। আপিল মামলা দাখিল করার পর মনোরঞ্জন গোপ সহকারী কমিশনার ভূমির কার্যালয়ে স্বশরীরে হাজির হয়ে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) আদেশের বিরুদ্ধে আপিল করবেন বলে লিখিতভাবে জানান। 

আপিল মামলা চলাকালীন অবস্থায় ২২/০৫/২০১৯ তারিখে সহকারী কমিশনার ভূমি অফিস নাসিরনগর ১৫১৪ নং নামজারী জমা খারিজের জন্য ১৮-১৯ আবেদন করেন। ২৮/০৫/২০১৯ তারিখে উক্ত খারিজটি সহকারী কমিশনার ভূমি তরিগরি করে ৬ দিনের ভিতরে নামজারিটি অনুমোদন করেন। নিয়ম অনুযায়ী বা আইন অনুযায়ী নামজারী জমা খারিজ মোকদ্দমা নং-৫৫৩/১৮-১৯ নং মোকদ্দমাটি অনুমোদন হবে। কিন্তু নতুন করে আবেদন নিয়ে নামজারী করাটা সঠিক নয়।  অভিযুক্ত জমিটি পুনরায় খারিজ করে দেয়। যা নিয়ে আদালতে মামলা বিচাররাধীন থাকার পরেও দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের কারণে আতংক বিরাজ করছে বলে জানান মনোরঞ্জন গোপ। 

এ বিষয়ে নামজারি জমাখারিজে আবেদনকারী ও জমির মালিক দাবিদার বাসনি রানীর দত্তের সাথে তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনে জানতে চাইলে তিনি এ প্রতিনিদিকে জানান নাসিরনগরে আমাদের কোনো জমি আছে কিনা তা আমি জানি না এবং জানতেও  চাই না। আবেদন পত্রে স্বাক্ষর করেছেন কিনা জানতে চাইলে, তিনি বলেন আমি বা আমরা কেউ কোনো কাগজপত্রে স্বাক্ষর করিনি। 

এবিএন/মো. আব্দুল হান্নান/গালিব/জসিম
 

এই বিভাগের আরো সংবাদ