আজকের শিরোনাম :

সিরাজগঞ্জে বাল্যবিয়ে থেকে রক্ষা পেল ৭ স্কুল ছাত্রী

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ০৮ জুন ২০১৯, ১৯:০৪

সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলায় এক রাতে ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযানে বাল্যবিয়ে থেকে রক্ষা পেল ৭ স্কুল ছাত্রী। গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যা থেকে গভীর রাত পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে এই বাল্যবিয়েগুলো বন্ধ করলেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. আনিসুর রহমান।

 এ নিয়ে এলাকায় ব্যপক জনসচেতনতা ও চাঞ্চল্যর সৃষ্টি হয়েছে। ভ্রাম্যমাণ আদালত সূত্রে জানা যায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে শুক্রবার সন্ধ্যার দিকে সিরাজগঞ্জ সদন উপজেলার পোটল ছোনগাছা গ্রামে সংগীয় ফোর্স নিয়ে কনের বাড়ীতে উপস্থিত হন ভ্রাম্যমাণ আদালত। তখন কনের বাড়ীতে কনে ওই গ্রামের মোঃ আঃ জলিল খানের মেয়ে ও স্থানীয় হাই স্কুলের দশম শ্রেণীর ছাত্রী শারমিন সুলতানার (১৪) সাথে বর কামারখন্দ উপজেলার চালা গ্রামের আছাব উদ্দিনের ছেলে রিপন হোসেনের (২৪) বিয়ের আয়োজন চলছিল।

এ ঘটনায় ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে বিয়ে বন্ধ করা হয় এবং বর রিপন হোসেনকে ৫ হাজার টাকা জরিমানা করা। এরপর একই এলাকার ফুলবয়ড়া গ্রামে অভিযান চালান ভ্রাম্যমাণ আদালত। তখন কনের বাড়ীতে কনে ওই গ্রামের মোখলেছুর রহমানের মেয়ে ও স্থানীয় হাই স্কুলের দশম শ্রেণীর ছাত্রী মহুয়া খাতুনের (১৪)  সাথে বর শ্যামপুর গ্রামের আব্দুল গণির ছেলে রায়হান আলীর (২৭) বিয়ের আয়োজন চলছিল।

এরপর ভ্রাম্যমাণ আদালত বাল্যবিবাহ বন্ধ করে দিয়ে বর রায়হান আলীকে ৫ হাজার টাকা জরিমানা করেন। এরপর রুপেরবেড় গ্রামে কনের বাড়ীতে উপস্থিত হন ভ্রাম্যমাণ আদালত। তখন কনের বাড়ীতে কনে ওই গ্রামের গোলাম রব্বানীর মেয়ে ও স্থানীয় হাই স্কুলের দশম শ্রেণীর ছাত্রী সুবর্ণা খাতুন মীমের (১৪) সাথে বর কাজীপুর উপজেলার বাঐখোলা গ্রামের মৃত শামসুল হকের ছেলে আলমগীর হোসেনের (১৪) বিয়ের আয়োজন চলছিল। এরপর ভ্রাম্যমাণ আদালত বাল্যবিয়ে বন্ধ করে দিয়ে কনের বাবা গোলাম রব্বানী ও বর আলমগীর প্রত্যেককে ৫ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়। এরপর কদমপাল গ্রামে অভিযান চালান ভ্রাম্যমাণ আদালত। তখন কনের বাড়ীতে কনে ওই গ্রামের মফিজ উদ্দিনের মেয়ে ও স্থানীয় হাই স্কুলের দশম শ্রেণীর ছাত্রী তামান্না খাতুনের (১৫) সাথে বর পৌর এলাকার সয়াধানগড়ার জাহাঙ্গীর হোসেনের ছেলে জাহিদুল ইসলামের (২২) বিয়ের আয়োজন চলছিল।

এরপর ভ্রাম্যমাণ আদালত বাল্যবিয়ে বন্ধ করে এবং কনের বাবাকে ৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। এরপর ধুকুরিয়া দক্ষিণপাড়ায় অভিযান পরিচালনা করেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। তখন কনে ওই গ্রামের ফেরদৌস শেখের মেয়ে ও স্থানীয় হাই স্কুলের ৭ম শ্রেনীর ছাত্রী ফারজানা খাতুনের (১৩) সাথে বর কামারখন্দ উপজেলার মধ্যভদ্রঘাট গ্রামের ছুরুতজাম নের ছেলে শামছুল আলমের (২২) বিয়ের আয়োজন চলছিল। ভ্রাম্যমান আদালত বসিয়ে কনের বাবাকে ৫ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়। পরে কৃঞ্চপুর ভূইয়াপাড়া গ্রামে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান চালায়। তখন কনের বাড়ীতে কনে ওই গ্রামের মৃত নায়েব আলী শেখের মেয়ে ১০ম শ্রেণির ছাত্রী হোসনেয়ারা খাতুনের (১৬) সাথে বর একই গ্রামের মৃত মোস্তফার ছেলে হাসান আলীর (১৭) বিয়ের আয়োজন চলছিল।

ভ্রাম্যমান আদালত বসিয়ে বাল্যবিয়ে বন্ধ করে দিয়ে বরের ভাই ফিরোজ আহমেদ ও কনের ভাই ফুলার হোসেন প্রত্যেককে ৫ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়। এরপর কুড়িপাড়া গ্রামে ভ্রাম্যমাণ আদালত অভিযান চালান। তখন কনের বাড়ীতে কনে ওই গ্রামের বাবলু মন্ডলের মেয়ে ও স্থানীয় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণীর ছাত্রী মিম খাতুনের (১১) সাথে বর মহিষামূড়া গ্রামের বিশা মিয়ার ছেলে আনিছুর রহমানের (২৫) বিয়ের আয়োজন চলছিল। পরে ভ্রাম্যমান আদালত বসিয়ে বাল্যবিয়ে বন্ধ করা হয়। প্রত্যেক প্রযোজ্য ক্ষেত্রে কনের বাবা ও বরের বাবার কাছ থেকে কনে ও বর প্রাপ্তবয়স্ক না হওয়া পর্যন্ত বিয়ে দিবেন না মর্মে মুচলেকাও নেয়া হয়।

 

এবিএন/এস.এম তফিজ উদ্দিন/জসিম/তোহা

এই বিভাগের আরো সংবাদ