আজকের শিরোনাম :

শিশু ও নারী ধর্ষণ, হত্যা বন্ধ, সুষ্ঠু ও ন্যায় বিচারের দাবীতে কুমিল্লায় মানববন্ধন

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ১৪ মে ২০১৯, ১৬:২৪ | আপডেট : ১৪ মে ২০১৯, ১৬:৩৫

শিশু ও নারী ধর্ষণ, নির্যাতন, হত্যা বন্ধসহ, সুষ্ঠু ও ন্যায় বিচারের দাবীতে লন্ডনের বিভিন্ন অরাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক ২৪টি সংগঠনের উদ্যোগে কুমিল্লা প্রেস ক্লাবে এক প্রতিবাদ সমাবেশ ও মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।

সমাবেশে স্বাগত বক্তব্য রাখেন দর্পণ এর নির্বাহী পরিচালক মোঃ মাহবুব মোর্শেদ। সাপ্তাহিক অভিবাদন এর সম্পাদক আবুল হাসানাত বাবুলের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন অধ্যক্ষ শফিকুর রহমান, আরএইচডিওর নির্বাহী পরিচালক কাজী মাহতাব, ব্যবসায়ী নেতা আনোয়ার হোসেন চৌধুরী, সাংবাদিক অশোক বড়ুয়া,

বাংলাদেশ উইমেন চেম্বার অব কর্মাস এন্ড ইন্ডাষ্ট্রী কুমিল্লা জেলা শাখার সভাপতি নাগমা মোর্শেদ, রিপোটার্স ইউনিটি কুমিল্লা জেলা শাখার সহ-সভাপতি ওমর ফারুকী তাপস, সাধারন সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন জাকির, মহিলা কল্যাণ সংস্থার সভানেত্রী নাসিমা আক্তার, নারী উদ্যোক্তা মায়া নাসরিন, তাসলিমা আশরাফ লিলি, মরিয়ম আক্তার মনি, সময় টিভির স্টাফ রিপোর্টার বাহার রায়হান, ফটো সাংবাদিক এন. কে রিপন, প্রথম আলোর ফটো সাংবাদিক এমদাদুল হক সোহাগ, দর্পণের সহকারী প্রকল্প পরিচালক নাজনীন আক্তার তপা এবং ডিস্ট্রিক্ট ক্যাম্পেইন ফ্যাসিলেটেটর সালমা আক্তার চৈতি।

সমাবেশে বক্তাগন বলেন, "সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশের বিভিন্ন মাদ্রাসা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, চিকিৎসালয় সহ সর্বস্তরে আশংকা জনক ভাবে শিশু ও নারী ধর্ষণ, যৌন নির্যাতন, হত্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। একই ভাবে সামাজিক অবক্ষয় বৃদ্ধি সহ কমছে দেশব্যাপী নারী ও শিশুর সামাজিক নিরাপত্তা ও স্বাধীনভাবে নিরাপদ চলাচলের সুযোগ। এই অবস্থা থেকে প্রিয় জন্মভুমির ভবিষ্যৎ প্রজন্ম ও নারীকে রক্ষায় বিদেশের মাটি থেকে কাজ করে যেতে চায় লন্ডনের ২৩ টি অরাজনৈতিক এবং সাংস্কৃতিক সংগঠনের সম্মিলিত আমাদের এই প্ল্যাটফর্মটি।"
সমাবেশে বক্তাগন যেসব দাবী উত্থাপন করেন সেগুলো হলোঃ মাদ্রাসায় নারী শিক্ষক নিয়োগসহ, পূরুষ শিক্ষকের পাশাপাশি নারী শিক্ষক নিয়োগ বাধ্যতামূলক করতে হবে, মাদ্রাসা শিক্ষার পাঠ্যপুস্তক ও কারিকুলাম আধুনিকায়ন সহ এই শিক্ষায় সরকারী তদারকি বৃদ্ধি করতে হবে, ধর্মীয় শিক্ষার পাশাপাশি, কারিগরি ও সাধারন শিক্ষার প্রসার ও বিস্তারে জোড় দিতে হবে, ধর্ষণ রোধে সামাজিক ও সাংস্কৃতিক আন্দোলন গড়ে তুলতে মিডিয়া, এন জি ও, সাংস্কৃতিক সংগঠনকে উৎসাহিত করতে হবে।

 প্রয়োজনে সরকার কর্তৃক নির্দেশনা দিতে হবে এবং বাস্তবায়নের তদারকি বৃদ্ধি করতে হবে, ধর্ষণ বন্ধে ধর্ষণ ও যৌন নির্যাতনের কঠোর আইন প্রনয়নসহ বিশেষ ট্রাইবুনাল গঠনের মাধ্যমে ওপেন ট্রায়াল সহ, দ্রুত সময়ে ন্যায় বিচার প্রাপ্তির ব্যবস্থা করতে হবে, সকল জেলায় ধর্ষণ ও যৌন নির্যাতনের ভিক্টিম সাপোর্ট সেন্টারের শাখা খোলা সহ, ভিক্টিম ও তাদের পরিবারকে পুর্নবাসন ও কাউন্সিলিং সেবা দিতে হবে, প্রতিটি জেলা, উপজেলায় সুস্থ সাংস্কৃতিক চর্চা, খেলাধুলার ব্যবস্থা,খেলার মাঠ, পাঠাগার স্থাপন, মুক্ত জ্ঞান বিজ্ঞানের বিকাশ, সাহিত্য সংস্কৃতির বই পড়ার সচেতনতা সহ সম বয়সী ছেলে মেয়েদের সুস্থ্য সামাজিক মেলামেলার সুযোগ তৈরী করতে হবে, ৫ম থেকে ৮ম শ্রেণীর সকল মাদ্রাসাসহ স্কুলের পাঠ্যপুস্তকে নারীর স্বতন্ত্র মর্যাদা, শিশু ও বয়স্কদের শরীরের কোন কোন জায়গায় স্পর্শ করা অপরাধ বা এ্যাবিউজ, বা কেউ অসাধু উপায়ে স্পর্শ করলে শিশু বা ছাত্র/ছাত্রী, মাদ্রাসা বা শিক্ষা কেন্দ্রের কাকে অবহিত করবেন (একজন নারী ও একজন পূরুষ প্রতিনিধি নির্বাচন করা যেতে পারে, প্রতিটি শিক্ষাকেন্দ্র বা মাদ্রাসায় অথবা জেলা/উপজেলা ভিত্তিক ভিক্টিম সাপোর্ট সেন্টারের একটি কাজ হিসাবে এটিকে অন্তর্ভুক্ত করা যেতে পারে)।

একই সাথে শিশু বা ছাত্র ছাত্রী তাদের শরীরে কোনও স্থানে কেউ স্পর্শ করলে পরিবারকে জানাতে হবে এবং পরিবার বা ভিক্টিম কোথায়, নির্ভয়ে ন্যায় বিচার পেতে পারেন, সেই বিষয়সমুহ পড়ানো সহ ধর্ষণ কি এবং তার শাস্তি কি, তা পাঠ্যপুস্তকে স্পষ্টভাবে উল্লেখ্য থাকা প্রয়োজন, ব্রিটেনের আদলে শিশুকে নৈতিকতা, সকল মানুষ,নারী, ভিন্ন বিশ্বাস, ধর্মের প্রতি শ্রদ্ধাশীল ও সহনশীলতা সহ, মাদ্রাসা এবং সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে Safegurding young and Adult পলিসি বাস্তবায়ন করতে হবে এবং Physical and sexual health সম্পর্কিত বিষয়বস্তু, সকল মাদ্রাসা ও স্কুলের ৮ম শ্রেনী বা সমমানের শ্রেনীতে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।

সমাবেশ শেষে কুমিল্লা জেলা প্রশাসক মোঃ আবুল ফজল মীরের কাছে এক স্মারকলিপি প্রদান করেন দর্পণ এর নির্বাহী পরিচালক মোঃ মাহবুব মোর্শেদ। এ সময় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ উইমেন চেম্বার অব কর্মাস এন্ড ইন্ডাষ্ট্রী কুমিল্লা জেলা শাখার সভাপতি নাগমা মোর্শেদ, নারী উদ্যোক্তা নাসিমা আক্তার, মায়া নাসরিন, তাসলিমা আশরাফ, মরিয়ম আক্তার মনি, দর্পণের সহকারী প্রকল্প পরিচালক নাজনীন আক্তার তপা এবং ডিস্ট্রিক্ট ক্যাম্পেইন ফ্যাসিলেটেটর সালমা আক্তার চৈতি।
 

এবিএন/শাকিল মোল্লা/জসিম/তোহা

এই বিভাগের আরো সংবাদ