আজকের শিরোনাম :

ঠাকুরগাঁওয়ে শিশুর টিউমারের ভেতর আরেক শিশু

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ১১ মে ২০১৯, ১৪:২৮

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা রহিমানপুর ইউনিয়নের গোয়ালপাড়া গ্রামের বাবুল রায়ের ১২ বছরের শিশুকন্যা বিথিকা রায়। সে স্থানীয় মলানপুকুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণীর ছাত্রী। গত দশদিন আগে হঠাৎ করেই শিশু বিথিকার শারীরিক পরিবর্তন ঘটতে শুরু করে। তার পেট হঠাৎ করেই ফুলতে থাকে। এতে ঘাবড়ে যায় পরিবারের লোকজন।

সবার ধারণা হয় শিশু বিথিকা হয়তো কোন লম্পটের দ্বারা ধর্ষণের শিকার হয়ে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েছে। ভয় থেকেই ছুটে যায় ডাক্তারের কাছে। তবে স্থানীয় ডাক্তারের কাছে না গিয়ে যায় রংপুরের এক ডাক্তারের কাছে। ডাক্তার প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে জানায় শিশু বিথিকার পেটে বড় আকারের টিউমার রয়েছে। যা জরুরী ভিত্তিতে অপারেশন করা প্রয়োজন।

এদিকে পেশায় দিনমজুর বাবুল রায় রংপুরে অপারেশন করার সামর্থ্য না থাকায় তার শিশু মেয়েকে নিয়ে ঠাকুরগাঁও হাসান এক্স-রে ক্লিনিকে ভর্তি করে ডা. মো. নুরুজ্জামান জুয়েলের শরণাপন্ন হন। ডা. জুয়েল ঝুঁকিপূর্ণ অপারেশন হওয়ায় প্রথমে রাজী হননি। পরে বাবুলের আর্থিক অবস্থা বিবেচনা করে অপারেশনের সিদ্ধান্ত নেন।

শুক্রবার বিকেলে অপারেশন করে দেখা যায় শিশু বিথির পেটে প্রায় চার কেজি ওজনের টিউমার। টিউমার অপসারণ শেষে টিউমারটি কেটে তার চোখ ছানাবড়া। টিউমারের ভেতরে আরেক শিশুর বসবাস।সেখানে শরীরের হাত, কলিজাসহ নানা অংশ বিদ্যমান।

এ ব্যাপারে ডা.মো.নুরুজ্জামান জুয়েল বলেন, মেডিক্যাল সায়েন্সে এটাকে বলে “Fetus in feto” অর্থাৎ বাচ্চার পেটের ভিতরে বাচ্চা। জন্মগত ভাবে বিথিকা জমজ কিন্তু কোন কারণ বশত আরেক শিশু পৃথিবীর মুখ দেখতে পায়নি। তাই এটা বিথিকার জন্মের সময় থেকে তার পেটে থেকে যায়। বর্তমানে তার শারীরিক অবস্থা ভালো। আশা করা যায় আর কোন ঝুঁকি নেই।

অপর দিকে ক্লিনিক সূত্রে জানা গেছে, ডা.নুরুজ্জামান জুয়েল ঢাকা বঙ্গবন্ধু শিশু সার্জারী বিভাগের সহকারী অধ্যাপক হিসাবে কর্মরত আছেন। তার গ্রামের বাড়ি পঞ্চগড় জেলার বোদায় অবস্থিত। শুধুমাত্র বাবা-মায়ের আদেশ পালন করার জন্য তিনি বৃহস্পতিবার-শুক্রবার এলাকার গরীব-অসহায় রোগীদের কোন প্রকার টাকা না নিয়ে অপারেশন করেন। শিশু বিথিকার অপারেশন ও কোন প্রকার খরচ নেন নাই ডা. জুয়েল।
 

এবিএন/রবিউল এহ্সান রিপন/জসিম/তোহা

এই বিভাগের আরো সংবাদ