শার্শায় গোগা ইউনিয়নে সন্ত্রাসী হামলায় ইউপি সদস্যসহ আহত ৫
অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ১০ মে ২০১৯, ১২:৪৫
যশোরের শার্শা উপজেলার গোগা ইউনিয়নের অগ্রভুলাটে সন্ত্রাসী হামলায় আহত হয়েছেন ইউপি সদস্যসহ পাঁচ জন।
গত বুধবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে অগ্রভূলাট বাজারে এই সন্ত্রাসী হামলার ঘটনাটি ঘটে। গোগা ইউপি সদস্য তবিবর রহমান এই সন্ত্রাসী হামলার শিকার হন। তবিবর রহমানের দোকান, অফিসসহ দলীয় ফেস্টুন, ব্যানার ভাংচুর করা হয়।
এই সন্ত্রাসী হামলার শিকার হয়ে শার্শা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ভর্তি রয়েছে একই গ্রামের শরবত আলীর ছেলে আবুল কাশেম (৩৫) আব্দুল গনির ছেলে শফিউল্লাহ (৩০), কাদের বিশ্বাসের ছেলে তহিদুল বিশ্বাস (৩৩), আবু তালেব মন্ডলের ছেলে লালন হোসেন (৩১)।
আহতদের মধ্যে ফকির চানের পুত্র নবিছদ্দীর (৪০) অবস্থা আশঙ্কাজনকভাবে প্রথমে শার্শা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পরে অবস্থার অবনতি হলে যশোর ২৫০ শয্যা হাসপাতালে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।
শার্শা উপজেলার গোগা ইউনিয়নের সদস্য তবিবর এই হামলার জন্য ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুর রশিদকে দায়ী করেন। তিনি বলেন, রশিদ চেয়ারম্যানের মদদপুষ্ট সন্ত্রাসীরা আমারসহ নিরীহ মানুষের ওপর অতর্কিত হামলা চালিয়েছে।
তবিবর রহমান আরো বলেন, পূর্ব শত্রুতার জের ধরে আমার কর্মীদের উপর দেশি-বিদেশি অস্ত্রসস্ত্র, বোমা, হকিস্টিক, রামদা নিয়ে হামলা চালিয়েছে চেয়ারম্যান আব্দুর রশিদের ক্যাডার বাহিনী। রশিদ বাহিনীর উদ্দেশ্যে ছিল আমাকে মেরে ফেলার। আমার কর্মীদের ওপর যখন হামলা করেছে ঠিক তখন রশিদ বাহিনী মারছে আর বলছে যা সংবাদ সম্মেলন কর, পেপারে কি লিখবি লেখ, সাংবাদিকদের ডেকে নিয়ে আই। আরো অকথ্য ভাষায় গালাগালি করছে। আমি এই ন্যাক্কারজনক হামলার সুষ্ট বিচার দাবি করছি।
শার্শা উপজেলা থানা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আহত ব্যক্তিরা সাংবাদিকদের বলেন, তাদের ওপর যারা হামলা করেছে তারা এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসী ইদ্রিস, খোকন, হযরত, শিমুল, সুজন, শরিফ, আশিক, পলাশ, কামাল, সাহেব, মিজানসহ আরো অনেকেই এরা সবাই একই গ্রামের বাসিন্দা।
প্রত্যক্ষদর্শী ফকির চানের আরেক পুত্র লুৎফর বলেন, অগ্র-ভুলাট সীমান্ত দিয়ে গরু আসার যে খাটাল তৈরি করা হয় সহিংসতার সূত্রপাত সেই গরুর খাঠাল নিয়েই। গোগা ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান আব্দুর রশিদ ও ইউপি সদস্য তবিবর রহমানের মধ্যে গরুর খাটাল নিয়ে বিবাদের সৃষ্টি হয়।
আহতদের স্বজনরা জানান, পূর্ব শত্রুতার জের ধরে, চেয়ারম্যান আব্দুর রশিদের পোষ্য সন্ত্রাসীরা অতর্কিত হামলা চালিয়ে তবি মেম্বরের অফিসসহ দোকানপাট ভাংচুর করেছে। শুধুমাত্র এতেই ক্ষ্যান্ত হয়নি এমনকি তারাবী নামাজরত অবস্থায় তিন জনকে ধরে মারপিট করে চেয়ারম্যান রশিদের সন্ত্রাসী বাহিনী।
এ বিষয়ে আহত আবুল কাশেম বলেন, আমি তারাবী নামাজ শেষ করে বাজারে আসা মাত্রই কিছু বুঝে উঠার আগে আমারসহ আমাদের এলাকার কিছু খেটে খাওয়া অসহায় মানুষের ওপর হামলা চালায় রশিদ চেয়ারম্যানের সন্ত্রাসী বাহিনী। আমার কাছে জমি বন্দকের দুই লক্ষ বিশ হাজার টাকা ছিল, সেই টাকা ছিনিয়ে নেয় শিমুল নামের এক সন্ত্রাসী। আর আমার মাথায় পিস্তল দিয়ে গুলি করে নিশানা সঠিক না হওয়ায় সৌভাগ্যক্রমে আমি বেঁচে যায়।
গোগা ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুর রশিদ বলেন, কিছুদিন আগে গাছের আম নিয়ে ওই গ্রামে একটা বিবাদ সৃষ্টি হলে তখন হযরত আলীকে তবি মেম্বারের লোকজন মারধর করে। পরে হযরত আলী মামলা করে। মামলা হওয়ার পর আসামিদেরকে পুলিশ ধরতে অভিযান চালালে আসামিরা পুলিশকে দেখে পালিয়ে যায়। সেই আসামিরা পরবর্তীতে ক্ষুব্ধ হয়ে আবুল হোসেনের পুত্র অহেদকে ইট মারে। সেখানে বেধে যায় হট্টগোল। অহেদ এখন যশোর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে।
তিনি তবি মেম্বারসহ অন্যান্যদের ওপর তার সন্ত্রাসী বাহিনী দ্বারা হামলার বিষয়টি অস্বীকার করেন।
এ বিষয়ে শার্শা থানার এস, আই আবুল হাসানের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এই বিষয়ে মামলা হয়েছে, সুষ্ঠ তদন্ত করে আসামিদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এবিএন/মো. আয়ুব হোসেন পক্ষী/গালিব/জসিম
এই বিভাগের আরো সংবাদ