আজকের শিরোনাম :

কমলগঞ্জে নবম শ্রেণীর ছাত্রের সচেতনতায় দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পেলে যাত্রীবাহী ট্রেন

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ০৮ মে ২০১৯, ১৪:৫৪

আবুল হোসেন মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জের কামুদপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণীর ছাত্র। সে শমশেরনগর ইউনিয়নের ঈদগাহ টিলার খোকন মিয়ার ছেলে। 

গতকাল মঙ্গলবার (৭ মে) রাতে ছাত্র আবুল হোসেনের সচেতনতার কারণে অল্পের জন্য বড় ধরণের দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পেয়েছে পাঁচ শতাধিক যাত্রীবাহী চট্টগ্রাম অভিমুখী আন্তনগর উদয়ন এক্সপ্রেস ট্রেন। 

গতকাল মঙ্গলবার রাত ১১টায় এ ঘটনাটি ঘটে শমশেরনগর ইউনয়িনের ঈদগাহ টিলা গ্রাম এলাকার সিলেট-আখাউড়া রেলপথের ৩০৬/২নং রেলপথ এলাকায়।
    
আজ বুধবার (৮ মে) দুপুর ১২টায় সরেজমিন গিয়ে জানা যায়, শমশেরনগর আপ আউটার সিগনালের অদূরে ৩০৬/২নং রেলপথের ঈদগাহ টিলা গ্রাম এলাকার বাঁকে একটি স্থানে রেলপথের একটি পাত ভেঙ্গে ফাঁক হয়ে গিয়েছিল। 

গতকাল মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১০টায় এ গ্রামের ছেলে কামুদপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণীর ছাত্র আবুল হোসেন স্থানীয় সায়েদ কবিরাজের বাড়ি থেকে ফেরার পথে রেলের পাত ভেঙ্গে ফাঁক হয়ে থাকতে দেখে গ্রামবাসীদের অবহিত করে। 

গ্রামবাসীরা এ খবরটি দ্রুত শমশেরনগর ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ড সদস্য শেখ রায়হান ফারুক এর মাধ্যমে শমশেরনগর রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার কবির আহমদ ও শ্রীমঙ্গলস্থ রেলওয়ের গণপূর্ত বিভাগকে অবহিত করেন। 

এ খবর পেয়ে দ্রুত রেলওয়ে কর্তপক্ষ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ভাঙ্গা রেলপাত সরিয়ে সেখানে নতুন এক টুকরো রেলপাত বসিয়ে এক  ঘন্টা পর ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক করেন। এ সময় শমশেরনগর রেলওয়ে স্টেশনে চট্টগ্রাম অভিমুখী আন্তনগর পাঁচ শতাধিক যাত্রীবাহী উদয়ন এক্সপ্রেস শমশেরনগর স্টেশনে আটকা পড়েছিল। আর ঢাকাগামী আন্তনগর উপবন এক্সপ্রেস ট্রেন কুলাউড়া স্টেশনে আটকা পড়েছিল।

নবম শ্রেণীর ছাত্র আবুল হোসেন জানায় সে, গতকাল মঙ্গলবার রাতে একটি কাজে সায়েদ কবিরাজের বাড়ি গিয়েছিল। সেখান থেকে ফেরার সময় টর্চ লাইটের আলোতে দেখতে পান রেলপথের একটি পাত দ্বিখন্ডিত হয়ে পড়েছে।  এ অবস্থায় ট্রেন চলাচল করলে বড় ধরণের দুর্ঘটনার কথা ভেবে সে গ্রামবাসীকে বিষয়টি অবহিত করলে তারা পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করেছেন।

শমশেরনগর ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ড সদস্য শেখ রায়হান ফারুক বলেন, ছাত্রটি সচেতন হয়ে বিষয়টি গ্রামবাসীকে না জানালে তিনিও জানতেন না। ঘটনাস্থল রেলপথের বাঁক এলাকা বলে এ সময় ট্রেন চলাচল করলে বড় ধরনেল দুর্ঘটনা ঘটে যেত। তিনি শমশেরনগর স্টেশন মাস্টারকে এ বিষয়ে জানিয়ে রেলওয়ের গণপূর্ত বিভাগের কর্মকর্তাদের অবহিত করলে তারা দ্রুত ভাঙ্গা রেলপাত সরিয়ে নতুন একটি পাত প্রতিস্থাপনের পর ট্রেন চলাচল করে।

শমশেরনগর স্টেশন মাস্টার কবির আহমদ বলেন, আসলেই ছাত্র আবুল হোসেনের সচেতনতায় সম্ভাব্য একটি রেল দুর্ঘটনা থেকে বাঁচা গেল। তিনি খবর শুনে রেলওয়ে গণপূর্ত বিভাগের শ্রীমঙ্গলস্থ উর্ধ্বতন উপ-সহকারী প্রকৌশলী মনির হোসেনকে অবহিত করলে তিনি গ্যাঙম্যানদের নিয়ে এসে দ্রুত ভাঙ্গা রেলপাত সরিয়ে নতুন একটি পাত স্থাপন করলে প্রায় আধাঁ ঘন্টা পর ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়। 

শ্রীমঙ্গলস্থ রেলওয়ে গণপূর্ত বিভাগের উর্ধ্বতন উপ-সহকারী প্রকৌশলী মনির হোসেন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, এখন এ রেলপথ ঝুঁকিমুক্ত আছে। 

তিনি আরও বলেন, সময়মত স্কুল ছাত্র খবরটি না জানালে আসলেই একটি দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারতো।

এবিএন/প্রনীত রঞ্জন দেবনাথ/গালিব/জসিম
 

এই বিভাগের আরো সংবাদ