আজকের শিরোনাম :

বুড়িমারী ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ০৬ মে ২০১৯, ১৪:৫০

আমার মা জমির বিচারের জন্য নিশাদ চেয়ারম্যানের কাছে গিয়ে ছিলো। চেয়ারম্যান জমির বিচার না করে উল্টো আমার মাকে পতিতা বানানোর নাটক সাজায়। 

সেই নাটক অনুযায়ী পূর্ব পরিকল্পিতভাবে মধ্য গত মঙ্গলবার রাতে চেয়ারম্যান ও তার লোকজন আমাদের বাড়িতে গিয়ে আমার মাকে মারধর করে বাড়ি ঘর ভাংচুর করেন। 

এভাবে সাংবাদিকদের কাছে লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার বুড়িমারী ইউনিয়ন চেয়ারম্যান আবু সাঈদ নেওয়াজ নিশাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন গৃহবধূ মাহিমা বেগমের পুত্র নুরুজ্জামান। 

এ ঘটনায় ওই চেয়ারম্যান ও তার লোকজনের বিরুদ্ধে থানায় গত বুধবার রাতে মামলা হলেও গত ৫ দিনেও কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। উল্টো মামলা করে হাসপাতালের বেডে আতংকে দিন কাটাচ্ছে গৃহবধূ মাহিমা বেগম ও তার পরিবারের লোকজন। 

গত মঙ্গলবার মধ্য রাতে উপজেলার বুড়িমারী উফারমারা গুড়িয়াটারী এলাকায় গৃহবধূ মাহিমা বেগমকে মারধর করে বুড়িমারী ইউনিয়ন চেয়ারম্যান আবু সাঈদ নেওয়াজ নিশাদ ও তার লোকজন। গৃহবধূ মাহিমা বেগম ওই এলাকার শামসুল হকের স্ত্রী। আহত গৃহবধূ মাহিমা বেগম এখন রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। ঘটনার পরের দিন থেকে গা ঢাকা দিয়েছে চেয়ারম্যান আবু সাঈদ নেওয়াজ নিশাদ। তাকে গ্রেফতারে পুলিশ বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালাছে। 

গৃহবধূ মাহিমা বেগমের পুত্র নুরুজ্জামান বলেন, মতিয়ার রহমান নামে এক ব্যক্তি আমাদের জমি জবর দখল করে। 

এ ঘটনায় আমার মা নিশাদ চেয়ারম্যানকে বিচার দিলে চেয়ারম্যান বিচার না করে উল্টো মতিয়ারের পক্ষে অবস্থান নেয়। এ কারণে কয়েক দিন আগে চেয়ারম্যানের সাথে আমার মায়ের বাক বিতন্ডার ঘটনা ঘটে। ওই সময় চেয়ারম্যান নিশাদ আমার মাকে প্রকাশ্য হুমকি দেয়। চেয়ারম্যান নিশাদ ক্ষিপ্ত হয়ে রাতে কয়েকটি মটরসাইকেলযোগে তার লোকজন নিয়ে আমাদের বাড়ীতে এসে আমার মাকে পতিতা বলে ও বিভিন্ন স্থান থেকে মহিলা এনে আমরা দেহ ব্যবসা করি এমন মিথ্যা অভিযোগ তুলে। আমার মাকে পতিতা বানানোর নাটক তৈরী করা হয়। চেয়ারম্যান ও তার সঙ্গে থাকা লোকজন আমাদের ঘর বাড়ি ভাংচুর করে ও আমার মায়ের উপর হত্যার উদ্দেশ্যে হামলা চালায়। 

পরে আমি স্থানীয় লোকজনের সহযোগিতায় মাকে উদ্ধার করে প্রথমে পাটগ্রাম হাসপাতালে পরে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করি। আমার মায়ের অবস্থা এখনো ভালো নয়। আমরা গত বুধবার পাটগ্রাম থানায় একটি মামলা করেছি কিন্তু এখন পর্যন্ত কোনো আসামি গ্রেফতার করা হয়নি। শুনেছি নিশাদ চেয়ারম্যান নাকি ভারতে গেছেন।

বুড়িমারী ইউনিয়ন চেয়ারম্যান আবু সাঈদ নেওয়াজ নিশাদ বলেন, লোকমুখে শুনেছি মাহিমা অনেক আগে থেকে পতিতা বৃত্তির সাথে নাকি জড়িত। বিভিন্ন জায়গা থেকে মেয়ে নিয়ে এসে তার বাড়িতে দেহ ব্যবসা চালাতো। তাই এলাকার লোকজন ক্ষিপ্ত হয়ে গত মঙ্গলবার রাতে তার বাড়িতে একটি মেয়েসহ আটক করে তার বাড়ি ভাংচুর ও তাকে মারতে থাকে। 

এ সময় আমি আমার ইউনিয়নের কয়েকজন সদস্য ও গ্রাম পুলিশসহ তার বাড়িতে গিয়ে তাকে জনতার হাত থেকে তাকে উদ্ধার করেছি মাত্র। তাকে মারধরের প্রশ্নেই আসে না।  আমাকে রাজনৈতিকভাবে হয়রানী করতেই মিথ্যা মামলা দেয়া হয়েছে।

পাটগ্রাম থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মনসুর আলী বলেন, গৃহবধূ মাহিমা বেগমকে মারধরের ঘটনায় একটি মামলা হয়েছে। বিষয়টি গুরুত্বের সহকারে তদন্তের পাশাপাশি আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। 

পাটগ্রাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুল করিম বলেন, আদালত থেকে প্রমাণিত না হওয়া পর্যন্ত কাউকে পতিতা বলা যাবে না। চেয়ারম্যান যদি ওই গৃহবধূকে পতিতা বলে থাকেন তাহালে তিনি তা ঠিক করেনি।

এবিএন/আসাদুজ্জামান সাজু/গালিব/জসিম
 

এই বিভাগের আরো সংবাদ