আজকের শিরোনাম :

পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় ধর্ষকদের পক্ষে মানববন্ধন

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ২৯ এপ্রিল ২০১৯, ২০:২০

পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় গৃহবধূকে গণধর্ষণের চাঞ্চল্যকর মামলার আসামীদের পক্ষে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ সোমবার সকালে উপজেলার ধূলাসার ইউনিয়নের চাপলি বাজারে অভিযুক্ত আসামীদের পরিবারের উদ্যোগে অর্ধশত মানুষ এ মানববন্ধনে অংশ নেয়। এতে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ জাতীয় শ্রমিকলীগ’র মহিপুর থানা শাখার সদস্য সচিব মো. মশিউর রহমান সহ আসামীদের পরিবারের সদস্যরা। বক্তারা মামলার বাদী সিদ্দিককে চিহ্নিত সন্ত্রাসী, পতিতা ও মাদক ব্যবসায়ী বলে স্থানীয় নির্দোষ ব্যাক্তিদের নামে দায়েরকৃত মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারে দাবী করেন।

এর আগে ১৫ এপ্রিল রাতে উপজেলার ধূলাসার ইউনিয়নের পশ্চিম চাপলী গ্রামে সন্ত্রাসী শাহ আলম, শাহিন, রবিউল, আল-আমিন, আ: রশিদ ও শাকিল মৃধা সহ অজ্ঞাত ৭/৮ যুবক সিদ্দিকের স্ত্রীকে প্রথমে ঘরে আটকে এবং পরে একটি মাছের ঘেরের ঝুপড়ি ঘরে নিয়ে রাতভর পালাক্রমে ধর্ষণ করে। ১৬ এপ্রিল মঙ্গলবার সকালে গুরুতর অবস্থায় চিকিৎসার জন্য ভিকটিমকে কলাপাড়া হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেল (ওসিসি) এর প্রোগ্রাম অফিসার মো. ইদ্রিস আলম ভিকটিমের মনো কাউন্সেলিং শেষে মহিপুর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার কাছে আইনি সহায়তার জন্য ওসিসি থেকে ফরোয়ার্ডিং সহ ভিকটিমকে পাঠালেও মহিপুর থানা পুলিশ কোন পদক্ষেপ নেয়নি। ১৭এপ্রিল বুধবার ভিকটিমের স্বামী মো: সিদ্দিক বিজ্ঞ পটুয়াখালী নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে গণধষর্ণের অভিযোগে মামলা দায়ের করার পর বিজ্ঞ ট্রাইব্যুনালের বিচারক নিতাই চন্দ্র সাহা মহিপুর থানা পুলিশকে এজাহার গ্রহনের আদেশ দেন। গনধর্ষনের এ ঘটনার পর পুলিশের গাফেলতির বিষয়টি গনমাধ্যমে ও ট্রাইব্যুনালে প্রকাশ পেলে নড়ে চড়ে বসে মহিপুর থানা পুলিশ।

আসামীদের গ্রেফতারে তৎপরতা শুরু করে পুলিশ এবং মামলার এজাহারভূক্ত আসামী রবিউল (২৮) ও সন্দিগ্ধ আসামী মামুন খলিফা (৩০) কে উপজেলার পশ্চিম চাপলি এলাকা থেকে গ্রেফতারের পর কলাপাড়া সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে ৫ দিনের রিমান্ড আবেদন সহ সোপর্দ করে তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো: মাহবুব।

এরপর শুনানী শেষে বিজ্ঞ আদালত দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করার পর আসামীদের জিজ্ঞাসাবাদ শেষে কারাগারে প্রেরন করা হয়। কিন্তু রহস্যজনক কারনে ফৌজদারী কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় আসামীদের জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়নি বলে বাদীর অভিযোগ। মামলার গুরুত্বপূর্ন আলামত সংরক্ষন করা হয়নি। এমনকি ডাক্তারী পরীক্ষায় তদ্বির লবিং সহ মামলাটি এবার ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা করা হচ্ছে মর্মে অভিযোগ ভিকটিম পরিবারের।
প্রসংগত, ধর্ষনের মত জঘন্য ঘটনার সামাজিক প্রতিরোধ ও আইনের কঠোর প্রয়োগ না থাকায় ১৫ এপ্রিলের পর ২৪ এপ্রিল রাত সাড়ে ১১টার দিকে কলাপাড়া উপজেলার চাকামইয়া ইউনিয়নের মৌলভীতবক গ্রামে এক নববধূ ফের ধর্ষণের শিকার হয়।

 ঘটনার পর স্থানীয়দের সংবাদের ভিত্তিতে পুলিশ ভিকটিমকে উদ্ধার করে ডাক্তারী পরীক্ষা সম্পন্ন করা সহ ৪ জনের নামে মামলা রেকর্ড করলেও অদ্যবধি গ্রেফতার হয়নি কেউ। এরপর ২৬ এপ্রিল কুয়াকাটায় বেড়াতে গিয়ে সৈকতের গঙ্গামতি লেকের পশ্চিম পাশের ঝাউবাগান এলাকায় প্রকাশ্য দিবালোকে দশম শ্রেণীর শিক্ষার্থী তাসলিমা ও তার বোন নাসরিন বখাটেদের হাতে লাঞ্চিত হয়। পর্যটকদের হস্তক্ষেপে জঘন্য ঘটনা না ঘটলেও কুয়াকাটা হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা নিতে হয়েছে তাদের।


এবিএন/তুষার হালদার/জসিম/তোহা

এই বিভাগের আরো সংবাদ