সিরাজগঞ্জে বাল্যবিয়ে থেকে রক্ষা পেলো ৬ স্কুল ছাত্রী

সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলায় একই দিনে ৬ স্কুল ছাত্রীকে বাল্যবিয়ে থেকে রক্ষা করলেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. আনিসুর রহমান। ভ্রাম্যমান আদালত গতকাল শুক্রবার বিকেল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে এ বাল্যবিয়েগুলো বন্ধ করা হয়।

 আদালত সূত্রে জানা যায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সিরাজগঞ্জ পৌর এলাকার চককোবদাসপাড়া মহল্লায় সংগীয় ফোর্স নিয়ে কনের বাড়ীতে উপস্থিত হন ভ্রাম্যমাণ আদালত। তখন কনের বাড়ীতে কনে একই গ্রামের তাইজুল ইসলামের মেয়ে ও অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী তানিয়া খাতুনের (১৩) সাথে বর একই উপজেলার হরিনা গোপাল আদর্শ গ্রামের আঃ রহমানের ছেলে লাদেনের (২৪) বিয়ের আয়োজন চলছিল। বর লাদেন শেখ ও কনের মা রুমা খাতুনের প্রত্যেককে ৫ হাজার টাকা করে জরিমানা করেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। এরপর কাশিয়াহাটা এলাকায় অভিযান চালান ভ্রাম্যমাণ আদালত।

তখন কনের বাড়ীতে কনে কাশিয়াহাটা গ্রামের আঃ আলীমের মেয়ে ও দশম শ্রেণির ছাত্রী খাদিজা খাতুনের (১৫) সাথে বর কাদাই গ্রামের মৃত হাবিবুর রহমানের ছেলে রাসেলের (২১) বিয়ের আয়োজন চলছিল। ভ্রাম্যমাণ আদালত বাল্যবিবাহ বন্ধ করে দেন। চরাঞ্চলের বেড়াবাড়ী গ্রামে কনের বাড়ীতে উপস্থিত হন ভ্রাম্যমাণ আদালত।

তখন কনের বাড়ীতে কনে বেড়াবাড়ী উত্তরপাড়া গ্রামের শুকুর আলীর মেয়ে ও ৬ষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী শিউলি খাতুনের (১২) সাথে বর পৌর এলাকার ঘুড়কা মহল্লার উজ্জল হোসেন মুরলীর (১৫) বিয়ের আয়োজন চলছিল। ভ্রাম্যমাণ আদালত বাল্যবিবাহ বন্ধ করে দেয় এবং বরের বাবা ও কনের বাবা প্রত্যেককে ৫ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়।

এরপর কান্দাপাড়া গ্রামে অভিযান চালান ভ্রাম্যমাণ আদালত। তখন কনের বাড়ীতে কনে কান্দাপাড়া গ্রামের মানিক শেখের মেয়ে ও ৫ম শ্রেণির ছাত্রী মিষ্টি খাতুনের (১১) সাথে বর একই গ্রামের ছাইফুল ইসলামের ছেলে সিরাজ উদ্দিনের (২২) বিয়ের আয়োজন চলছিল। এরপর ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে বাল্যবিবাহ বন্ধ করা হয়।

এরপর মালশাপাড়া মহল্লায় অভিযান পরিচালনা করেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। তখন কনে মালশাপাড়া মহল্লার আঃ হান্নানের মেয়ে ও স্থানীয় হাই স্কুলের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী বৃষ্টি খাতুনের (১৩) সাথে রানীগ্রামের সালামের ছেলে শামীম আহমেদের (২৭) বিয়ের আয়োজন চলছিল। পরে ভ্রামম্যমান আদালত বসিয়ে বর ও কনের বাবা প্রত্যেককে ৫ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়।  হাট সারুটিয়া গ্রামে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান পরিচালিত হয়।

তখন কনের বাড়ীতে কনে হাট সারুটিয়া গ্রামের ইদ্রিস প্রামাণিকের মেয়ে ও অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী রতœা খাতুনের (১৩) সাথে বর দত্তবাড়ী গ্রামের আঃ খালেকের ছেলে চান মিয়ার (২৭) বিয়ের আয়োজন চলছিল। এ বাল্যবিয়ে বন্ধ করে দেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। এ ছয় জন কনের বাবা ও বরের বাবার কাছ থেকে কনে ও বর প্রাপ্তবয়স্ক না হওয়া পর্যন্ত বিয়ে দিবেন না মর্মে মুচলেকা নেয়া হয়। এসময় স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান সবুর শেখ, ইউপি চেয়ারম্যান নবীদুল ইসলাম, পৌর ভূমি সহকারী কর্মকর্তা নজরুল ইসলামসহ পুলিশ সদস্যরা উস্থিত ছিলেন।

এবিএন/এস.এম তফিজ উদ্দিন/জসিম/তোহা