আজকের শিরোনাম :

সনাতন ধর্মালম্বীদের অষ্টমী ম্নান শুরু

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ১২ এপ্রিল ২০১৯, ১৯:২৫

সনাতন হিন্দু সম্প্রদায়ের পাপমোচন পুণ্য স্নানার্থে এক অন্যন্য তীর্থ ভূমি নারায়ণগঞ্জ বন্দরের লাঙ্গলবন্দে গতকাল শুক্রবার থেকে শুরু হচ্ছে হিন্দু ধর্মারম্বীদের মহাতীর্থ অষ্টমী স্নান উৎসব।  শুল্কাতিথি অনুযায়ী গতকাল শুক্রবার সকাল ১১ টা ৪৮ সেকেন্ডে লগ্ন শুরু হয়।  দুই দিনব্যপী এ স্নান উৎসব শেষ হবে আগামীকাল শনিবার সকাল ৮ টা ৫৮ মিনিট ১৪ সেকেন্ডে।

আগত পূর্ণার্থীরা জগতের যাবতীয় সংকীর্ণতা ও পঙ্কিলতার আবরণ থেকে মুক্তির বাসনায় নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলার লাঙ্গলবন্দের ব্রহ্মপুত্র নদে অষ্টমী স্নান করেন। দেশি ও বিদেশি আগত ভক্তদের স্নান উৎসব শান্তিপূর্ণ ও নির্বঘ্নে পালন করার লক্ষ্যে পুলিশের পক্ষ থেকে ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।

শুক্রবার সরেজমিনে বন্দরের লাঙ্গলবন্দের ব্রহ্মপুত্র নদের গিয়ে দেখা গেছে, পূর্ণার্থীরা দলে দলে স্নান করছেন।  এবার আড্ডা শ্যামপুর ঘাট, ললিত সাধুর ঘাট, অন্যপূর্ণ ঘাট, রাজ ঘাট, কালীগঞ্জ ঘাট, মাকুঁড়ি সাধুর ঘাট, মহাত্মা গান্ধী ঘাট, ভদ্রেশ্বরী ঘাট, জয়কালি ঘাট, রক্ষাকালী ঘাট, প্রেম তলা ঘাট, চর শ্রীরাম ঘাট, সাবদি ঘাট, বাসনকালী, শিবমন্দির ঘাট, মনোজকান্তি বড়াল ঘাট, নাসিম ওসমান ঘাট ও জগৎবন্ধু ঘাটে স্নান করেন। সনাতন ধর্মাবম্বীদের বিশ্বাস ব্রহ্মপূত্রের জলে পাপমুক্ত করেছিল পরশুরাম মুনি।

হিন্দু ধর্মলবম্বী লোকজন মনে করেন, মহা ভারতের বর্ণনা মতে পরশুরাম মুনি পাপমুক্তির জন্য ব্রহ্মপূত্র নদে যে স্থানের জলে স্নান করেছিলেন, তা লাঙ্গলবন্দ অবস্থিত। সেই থেকে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের বিশ্বাস এ সময়ে বহ্মপূত্র নদে স্নান খুবই পূণ্যের। এ স্নানের ফলে ব্রহ্মার সন্তুষ্টি লাভের মাধ্যমে পাপমোচন হয়। এ বিশ্বাস নিয়ে সুদীর্ঘকাল ধরে এ স্নানে অংশ নেওয়ার জন্য প্রতিবৎসর ভারত, নেপাল, ভুটানসহ বিভিন্ন দেশ থেকে পূর্নাথীদের আগমন ঘটে।  পাপমোচনের এ উৎসবে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের লাখ লাখ মানুষ এসে এখানে সমাবেত হয়েছেন।  পরশুরামের পাপ থেকে মুক্তি হওয়ার কথা স্মরণ করে শ’শ’ বছর ধরে লাঙ্গলবন্দে ব্রহ্মপূত্র নদে অষ্টমী স্নান অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে।

বন্দর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পিন্টু বেপারী জানান, স্নান নির্বঘ্নে করতে জেলা প্রশাসক সব ধরনের ব্যবস্থা নিয়েছেন এবং পূর্ণার্থীরা নির্বিঘ্নে স্নান করছেন।  স্নান ঘাটলাগুলোতে কাপড় পাল্টানোর পর্যপ্ত ব্যবস্থা, বিদ্যুতিক বাতি, বিশুদ্ধ খাবার পানি সরবরাহ, পূণ্যার্থীদের চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করতে ১০ শয্যা বিশিষ্ট অস্থায়ী হাসপাতালসহ ৫টি মেডিকেল টিম সার্বক্ষনিক থাকবে।  

এছাড়াও পূণ্যার্থীদের উন্নত সেবা প্রদানে ১০টি এ্যাম্বোলেন্স সার্ভিস রাখা হয়েছে।  এদিকে পুলিশ সিসি ক্যামেরার আওতায় পুরো স্নান উৎসব এলাকা নিরাপত্তা বেষ্টনীর মধ্যে রেখেছেন।  পূর্নার্থীদের নিরাপত্তায় পুলিশ ওয়াচ টাওয়ারসহ ১৬শ’ পুলিশ ৩ স্তরে নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করছেন। এ পর্যন্ত স্নান উৎসবে কোন প্রকার অপ্রীতিকর ঘটনার সংবাদ পাওয়া যায়নি।

এবিএন/মোঃ নাসির উদ্দিন/জসিম/রাজ্জাক

এই বিভাগের আরো সংবাদ