আজকের শিরোনাম :

প্রধান শিক্ষকের অপসারণের দাবি

মদনে দুই দিন ধরে ক্লাসে যাচ্ছে না শিক্ষার্থীরা

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ২৪ মার্চ ২০১৯, ১৮:৫১

নেত্রকোনার মদন উপজেলার ১০ নং রত্নপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নন্দিতা ভট্টাচার্য কে অপসারণ না করা পর্যন্ত বিদ্যালয়ের এস এম সি কমিটির সদস্যরা ও অভিভাবকরা তাদের শিক্ষার্থীদের গত দু-দিন ধরে ক্লাসে দিচ্ছেন না। ফলে বিদ্যালয়ের ২শ৯৭ জন শিক্ষার্থীর ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়ছে।

সহকারী শিক্ষা অফিসার মো. মোজাহিদুল ইসলাম জানান, বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদেরকে ক্লাসে দিচ্ছে না এমন সংবাদের প্রেক্ষিতে বিদ্যালয়ে রোববার গেলে কোন শিক্ষক ব্যতিত কোন শিক্ষার্থী পাওয়া যায়নি। বিদ্যালয়ের এস এম সি কমিটির সভাপতি ও অভিভাবকদের সাথে কথা বললে তারা জানান,প্রধান শিক্ষক নন্দিতা ভট্টাচার্য কে অপসারণ না করা পর্যন্ত এ দাবি অব্যাহত থাকবে। বিষয়টি উপজেলা শিক্ষা অফিসারকে অবগত করেছি।

আজ রবিবার দুপুরে বিদ্যালয়ে সরজমিনে গেলে প্রধান শিক্ষকসহ ৬ জন শিক্ষককে উপস্থিত পাওয়া গেলেও কোনো শিক্ষার্থীকে উপস্থিত পাওয়া যায়নি। শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয়ে না আসার বিষয়টি শিক্ষকদের কাছে জানতে চাইলে তারা কোনো সদুত্তর না দিয়ে এড়িয়ে যান।

জানা যায়, প্রধান শিক্ষকের অনিয়ম, স্বেচ্ছাচারিতা ও বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত থাকার ব্যাপারে বিভিন্ন কর্তৃপক্ষের বরাবরে অভিযোগ দায়ের করেন এসএমসি কমিটি ও অভিভাবকগণ।

এরই প্রেক্ষিতে উপজেলা সহকারি শিক্ষা অফিসার মোঃ মোজাহিদুল ইসলাম ১৮ জুলাই ২০১৮ এবং অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক(শিক্ষা ও আইসিটি) মির্জা শাকিলা দিল হাছিল ৮ নভেম্বর ২০১৮ ইং তারিখে বিদ্যালয় পরিদর্শন করে প্রধান শিক্ষক নন্দিতা ভট্টাচার্যকে অনুপস্থিত ও অন্যান্য কার্যক্রমে অব্যবস্থাপনায় সু-স্পষ্ট নিদর্শন পান। এমনকি একটি শ্রেনিতে কোনো শিক্ষার্থীকে উপস্থিত পাওয়া যায়নি প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছেন।

২০ নভেম্বর ও ০২ ডিসেম্বর ২০১৮ ইং তারিখে তদন্তকারী দুই কর্মকর্তা সংশ্লিষ্ট দপ্তরে পৃথক প্রতিবেদন দাখিল করলেও কোনা ব্যবস্থা না নেওয়ায় শিক্ষার্থী ,অভিভাবক  ও ম্যানেজিং কমিটির সদস্যগণ ক্ষুদ্ধ হয়ে শনিবার থেকে শিক্ষার্থীদের ক্লাস বর্জন কর্মসূচী দিয়ে প্রতিবাদ জানান। প্রধান শিক্ষককে অন্যত্র বদলি না করা পর্যন্ত এ আন্দোলন অব্যাহত থাকবে বলে উপস্থিত অভিভাবক ও ম্যানেজিং কমিটির সদস্যগণ জানিয়েছেন।

শিক্ষার্থী অভিভাবক আহমেদ আলী,ইউপি সদস্য নজরুল ইসলাম ও জিলু মিয়া জানান, প্রধান শিক্ষক নন্দিতা ভট্টাচার্য বদলি না করা পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের ক্লাস বর্জন অব্যাহত থাকবে।

বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মো. আলী আকবর জানান, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নন্দিতা ভট্টাচার্যের স্বেচ্ছাচারিতা ও অব্যবস্থাপনার বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ বিভিন্ন কর্তৃপক্ষের বরাবর দায়ের করলে জেলা প্রশাসকসহ উপজেলা শিক্ষা অফিস তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করলেও সংশ্লিষ্ট বিভাগ কোন পদক্ষেপ না নেওয়ার প্রতিবাদে শনিবার থেকে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ক্লাস বর্জন শুরু করেছে। বিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি ফিরে আনার লক্ষে দ্রুত প্রধান শিক্ষককে অন্যত্র বদলির দাবি জানান তিনি।

অভিযুক্ত বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নন্দিতা ভট্রাচার্য জানান, বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ক্লাসে না আসার বিষয়টি আমার জানা নেই।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা স্বপন কুমার সূত্রধর জানান,এ বিষয়টি আমার দপ্তরসহ জেলা প্রশাসকের কার্যলয় কর্তৃক তদন্ত প্রতিবেদন যথাযথ ভাবে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার নিকট দাখিল করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত কেন তার বিরুদ্ধে শাস্তি মূলক  ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি তা আমার জানা নেই। বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা দু-দিন ধরে ক্লাস বর্জনের বিষয়টি জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে অবগত করা হয়েছে।

এ ব্যাপারে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ওবায়দুল্লাহ শাহীন জানান, কিছুক্ষণ আগে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার মাধ্যমে রতœপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ক্লাস বর্জনের বিষয়টি শুনে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে অবগত করেছি এবং সংশ্লিষ্ট বিভাগে তদন্ত প্রতিবেদন প্রেরণ করা হয়েছে। আশা করি দ্রুত উক্ত প্রধান শিক্ষককে অন্যত্র বদলি করা হবে।
 

এবিএন/তোফাজ্জল হোসেন/জসিম/তোহা

এই বিভাগের আরো সংবাদ