আজকের শিরোনাম :

নাসিরনগরে পাওনা টাকাকে কেন্দ্র করে ভয়াবহ সংঘর্ষ : আহত ৫০

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ২৪ মার্চ ২০১৯, ১৭:২৩

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে পাওনা টাকাকে কেন্দ্র করে ভয়াবহ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। আজ (২৪ মার্চ) রোজ রবিবার  সকাল ৯টা থেকে ১১টা পর্যন্ত  ২ ঘন্টা ব্যাপী  সংঘর্ষে পুরো এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। এ সময় লাখাই নাসিরনগর ও সরাইল মহাসড়কের যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকে বেশ  কিছুক্ষণ। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে নাসিরনগর থানা পুলিশ ৮২ রাউন্ড রাবার বুলেট নিক্ষেপ করেছে বলে জানা গেছে।
 
ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার বুড়িশ্বর ইউনিয়নের আশুরাইল গ্রামে। নাসিরনগর বাজারের দুই সার ব্যবসায়ী  আশুরাইল গ্রামের চৌকিদার বাড়ির মৃত জমাদার মিয়ার ছেলে কাজল মিয়া ও মৌলভী বাড়ির রহমত আলীর ছেলে হাজী সামছু মিয়ার মধ্যে ৭হাজার ৫শত টাকার লেনদেন নিয়ে গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় বাজারে বাকবিতন্ডা হয়। পরে উভয়পক্ষের মধ্যে হাতাহাতি হলে কাজল মিয়ার ছেলে রিপন মিয়া আহত হয়। উভয় পক্ষকে থানায় বসে আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করতে বলেন নাসিরনগর থানার এসআই কাউছার আহমদ। তবে কোন পক্ষই থানায় বসতে রাজি হয়নি বলে জানান এসআই কাউছার।

 আজ রবিবার সকালে আবারও দুই পক্ষের মধ্যে এ ঘটনার  পুণরাবৃত্তি হয়। পরে বিষয়টি গ্রামে জানাজানি হলে শুরু হয় উভয় পক্ষের মধ্যে ভয়াবহ সংর্ঘষ।  সংঘর্ষ থামাতে জেলা সদর থেকে দাঙ্গা পুলিশ আনা হয়েছে। সংঘর্ষে জড়িত থাকার অভিযোগে ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ  এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত তুই পক্ষের প্রায় ২০ জনকে আটক করেছে।

কাজল মিয়া অভিযোগ করে বলেন, সংঘর্ষ চলাকালে আমাদের পক্ষের সকল লোকজন ছিল মাঠে। কেউ কৃষি কাজে ব্যস্ত ছিকু কেউ ছিল গ্রামের বাজারে। বাড়িতে পুরুষ না থাকায় হাজী সামছুর লোকজন ঘর-বাড়ি লুটপাট,ভাংচুরসহ গৃহপালিত পশুকেও তারা পিটিয়ে আহত করে। নাসিরনগর সদর ইউনিয়নের আনন্দপুর গ্রামের আবুল খায়ের অভিযোগ করে বলেন, সংঘর্ষ চলাকালে আমি কাজল মিয়ার পক্ষের লোক নুরুউদ্দিন মেম্বারের বাড়িতে রাজমিস্ত্রীর কাজ করছিলাম।

এমন সময় হাজী সামছু মিয়ার লোকজন আমার উপর হামলা করে। আশুরাইল গ্রামের চৌকিদার বাড়ির জাহাঙ্গির মিয়ার মেয়ে ফাতেমা বলেন আমার বাবা বাড়িতে নেই। আমার বাড়ি খালি পেয়ে আমার কান ও গলা হতে স্বর্ণের চেইন ও হাতের রুলি নিয়ে যায়।

ইয়াছিন মিয়ার দুই মেয়ে লাভলি ও শমলাল বেগম অভিযোগ করে বলেন, আমার বাবার জমি বিক্রি করে ৭ লাক্ষ টাকা রেখেছিল চাউলের ড্রামে। তারা এ টাকা ও ঘরে থাকা ৩ ভরি স্বর্ণালংকার নিয়ে যায়। টাকা নেয়ায় আমার বাবা ষ্টোক করে এখন জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি আছে। ওই গ্রামের একজন কবির মিয়া। সিএনজি চালিয়ে তার সংসার চলে। তিনি অভিযোগ করে বলেন, আমি কোন পক্ষের সাথেই জড়িত না। আমায় না পেয়ে ঘরে থাকা আমার গবাদী তিনটি পশু(গরুকে)পিটিয়ে মারাত্ব ভাবে জখম করে।

হাজী সামছু মিয়ার সাথে মোবাইল ফোনে কথা হলে সে এ প্রতিবেদককে জানায় আমি টাকা পাই কাজল মিয়ার কাছে। টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে আমার লোকদের সাথে তর্কাতর্কি হয়। হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে কাজল মিয়ার পক্ষের কাজল(৪৫) রিমন(২০) রহুল আমিন (৫০) সোহাগ (২৫) ফাইজুল(৩৫) নজু মিয়া(৪৫) মহিউদ্দিন(২২) শাহেদুল(২৮) মারাত্বক ভাবে আহত হয়েছে। অপরদিকে হাজী সামছু মিয়ার পক্ষে কাইছার(৪৮) সুমন মিয়া(২৫) আজাহারুল(৩০) জালাল(৩৫) মিজান (৪০) আহত হয়।

সংঘর্ষের পর ঘটনাস্থল পরির্দশনে আসেন সরাইল সার্কেল মনিরুজ্জামান ফকির ও নাসিরনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ সাইফুল কবির। সরাইল সার্কেল মনিরুজ্জামান ফকির এ প্রতিনিধিকে জানান, পরিস্থিতি এখন শান্ত আছে।

 
এবিএন/আব্দুল  হান্নান/জসিম/তোহা

এই বিভাগের আরো সংবাদ