আজকের শিরোনাম :

শরণখোলায় মন্দিরের জমি দখল করে প্রতিষ্ঠান নির্মাণের অভিযোগ

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ১৯ মার্চ ২০১৯, ২০:১৪

হাটের শরণখোলায় উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যানের ভাইয়ের বিরুদ্ধে কালী মন্দিরের সম্পত্তি জবর দখলের অভিযোগ উঠেছে।  ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার সাউথখালী ইউনিয়নের তাফালবাড়ী বাজার এলাকায়।  এ ঘটনায় স্থানীয় হিন্দুদের মাঝে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে।  

৪নং সাউথখালী ইউনিয়নের দক্ষিণ তাফালবাড়ী গ্রামের বাসিন্দা ও তাফালবাড়ী সার্বজনীন কালী মন্দিরের সাধারণ সম্পাদক অনিমেষ শিকদার এক লিখিত অভিযোগে দাবি করেন, ২০১৬ সালে তিনি সহ তার দুই বন্ধু মিলে ১০নং সোনাতলা মৌজার ৮৩৮ ও ১২৪৫ নং খতিয়ানে রায়েন্দা এলাকার বাসিন্দা তার শশুর ডা. স্বপন হালদারের ভোগ দখলীয় জমি থেকে ৭ শতক জমি ভাড়া নিয়ে ক্লাসিক কিন্ডার গার্ডেন নামের একটি শিশু শিক্ষা স্কুল প্রতিষ্ঠা করেন।

কিছু দিন পর একই এলাকার বাসিন্দা আব্দুল হক হাওলাদারের ছেলে ও উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মো. হাসানুজ্জামান পারভেজের ছোট ভাই পলাশ মাহমুদ তাদের সাথে ওই স্কুলে শিক্ষক হিসাবে যোগ দেন।  কয়েক মাস পর পলাশ ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে অনিমেষ সহ তার দুই বন্ধুকে স্কুল থেকে বের করে দেয়।  পরবর্তীতে স্থানীয় ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা আব্দুল আজিজুল হকের যোগ সাজশে পলাশ ওই জমি ডিসিয়ারের নামে ভুয়া কাগজপত্র তৈরী করেন।  পরে স্কুল সংলগ্ন তাফালবাড়ী সার্বজনীন কালী মন্দিরের জমি দখল করে রাস্তা নির্মান শুরু করলে এতে স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন সহ মন্দির কমিটির সদস্যরা বাধা দেন।  পলাশ তাদেরকে নানা হুমকী দামকী দিয়ে মন্দিরের উন্নয়ন কাজ বন্ধ করে দেয়।  

এছাড়া বিভিন্ন সময় হিন্দুদের ধর্মীয় কাজে পলাশ ও তার সহযোগীরা বাঁধা দেন বলে অভিযোগ করেন স্থানীয় হিন্দু সমাজের লোকেরা।  মন্দির কমিটির সভাপতি বিপুল দাস অভিযোগ করে বলেন, বিষয়টি পলাশের আপন কাকা সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগ নেতা মুক্তিযোদ্ধা মোজাম্মেল হোসেন কে অবহিত করা হলে তিনি পলাশের সাথে সমজোতা করার পরামর্শ দেন।  

এছাড়া উপজেলা হিন্দু, বৈদ্য ঐক্য পরিষদের নেতাদের কাছে বিষয়টি অবগত করা হলেও তারাও এ পর্যন্ত কোন পদক্ষেপ নেয়নি।  তাই মন্দিরের সম্পত্তি উদ্ধার সহ হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন যাতে নির্ভয়ে তাদের ধর্মীয় সকল অনুষ্ঠান পালন করতে পারে সেজন্য তিনি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সহ প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।  

তবে উপজেলা হিন্দু, বৈদ্য খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি সাংবাদিক বাবুল দাস বলেন, বিষয়টি তিনি আবগত আছেন।  ওই মন্দির ছাড়াও উপজেলার আরও কয়েকটি মন্দিরের সম্পত্বির উপর একটি কূচক্রী মহলের লুলোপ দৃষ্টি পড়েছে বিষয়টিতে প্রশাসনের নজর দেওয়া উচিত।  এবং ইউনিয়ন ভুমি কর্মকর্তা মোঃ আজিজুল হক বলেন, যোগ সাজশের বিষয়টি সঠিক নয়।  

পলাশ ওই জমির ডিসিয়ার নিয়েছে।  এছাড়া স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হোসেন বলেন, বিষয়টি তিনি অবগত আছেন এবং শীঘ্রই সমাধান করা হবে।  অপরদিকে, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান হাসানুজ্জামান পারভেজ জানান, তার ভাই অবৈধ কোন দখলের সাথে জড়িত থাকলে বিষয়টি প্রশাসন নজরে নিয়ে ফয়সালা করতে পারেন। এছাড়া মন্দির কমিটির কেউ এবিষয়টি তাকে কেউ অবহিত করেননি।

অন্যদিকে, ক্লাসিক কিন্ডার গার্ডেনের পরিচালক পলাশ মাহমুদ দাবী করেন, বৈধ ভাবে ডিসিয়ার নিয়ে সাত শতক জমিতে তিনি স্কুল প্রতিষ্ঠা করেছেন মন্দিরের কোন জমি তিনি দখল করেননি। সামাজিক ভাবে তাকে ও তার পরিবারকে ছোট করতে একটি স্বার্থেন্নেষী মহল বদনাম রটাচ্ছে।  এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা লিংকন বিশ্বাস জানান, বিষয়টি তার জানা নেই, তবে খোঁজ খবর নিয়ে দেখবেন।

এবিএন/নজরুল ইসলাম/জসিম/রাজ্জাক

এই বিভাগের আরো সংবাদ