আজকের শিরোনাম :

জগন্নাথপুরে অনুমোদন ছাড়াই বাড়ছে সিলিন্ডারেরে ব্যবসা

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ১০ মার্চ ২০১৯, ১৮:৩০

জগন্নাথপুরে গ্যাস সংযোগ না থাকায়, কাঠের লাকড়ির দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় বেড়েছে সিলিন্ডার গ্যাসের চাহিদা। এই চাহিদাকে পুঁজি করে উপজেলার ১টি পৌরসভা ও ৮টি ইউনিয়নে অবৈধভাবে গজিয়ে ওঠেছে গ্যাস সিলিন্ডারের ব্যবসা। অনেক আবাসিক এলাকায়ও সিলিন্ডারের দোকান খুলে বসেছেন ব্যবসায়ীরা। 

অনুমোদন ছাড়াই ঝুঁকিপূর্ণভাবে গ্যাস সিলিন্ডারের দোকান খুলে বসায় বাড়ছে ঝুঁকি। সম্প্রতি রাজধানীর চকবাজারে ভয়াবহ অগ্নিকান্ডের পর ঝুঁকিপূর্ণভাবে সিলিন্ডার বিক্রির বিষয়টি ফের আলোচনায় ওঠে এসেছে। 

জগন্নাথপুর উপজেলার পান দোকান, মুদি দোকান, ওষুধের দোকান, লন্ড্রির দোকান, সিমেন্ট বিক্রির দোকান, কসমেটিকের দোকান, চায়ের দোকানসহ ফুটপাতের ছোটখাটো দোকানেও অবাদে বিক্রি হচ্ছে  গ্যাস সিলিন্ডার। প্রতিটি দোকানেই অন্যান্য জিনিসপত্রের পাশাপাশি ৫ থেকে ২০টি সিলিন্ডার রাখা হয় বিক্রি জন্য। 

সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী, জ্বালানি কাজে ব্যবহার্য সিলিন্ডার গ্যাস কোনো আবাসিক এলাকা বা মার্কেটে বিক্রি করা নিষিদ্ধ। গ্যাস সিলিন্ডার রোদে না রাখা, নিরাপদ দূরত্বে সিলিন্ডার মজুদ করা, উপড় থেকে সিলিন্ডার নিচে না ফেলার নির্দেশনাও রয়েছে। 

এ ছাড়াও এই সিলিন্ডার বিক্রি করতে গেলে ট্রেড লাইসেন্স ছাড়াও বিস্ফোরক পরিদপ্তরের লাইসেন্স ও অগ্নিনির্বাপক কর্তৃপক্ষের ছাড়পত্র নিতে হয়। তবে এসব নিদের্শনা আর নিষেধাজ্ঞা মানছেন না জগন্নাথপুরের ব্যবসায়ীরা।

সরজমিনে দেখা যায়, জগন্নাথপুরে সিলিন্ডার বিক্রি ও ব্যবহার  কোনো ক্ষেত্রে কোনো বিধি নিষেধই মানা হচ্ছে না। কোনো নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা ও লাইসেন্স ছাড়াই বাণিজ্যিক এলাকার পাশাপাশি আবাসিক এলাগুলোতেও ঝুঁকি নিয়ে চলছে সিলিন্ডার গ্যাস ব্যবসা। 

জগন্নাথপুর উপজেলার বিভিন্ন বাজারে ও আবাসিক  এলাকার সিলিন্ডার ব্যবসায়ীদের মধ্যে বেশির ভাগের নেই বিস্ফোরক পরিদপ্তরের লাইসেন্স ও অগ্নিনির্বাপক কর্তৃপক্ষের ছাড়পত্র। 

এ ব্যাপারে সুনামগঞ্জ ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের পরিদর্শক ওয়ার হাউজ পুলেন্দ্র সিংহ বলেন, ‘অগ্নিনির্বাপক যন্ত্রপাতি এবং সরঞ্জামাদি ছাড়া গ্যাস সিলিন্ডার ব্যবসা করা অনেক বিপদজনক। গ্যাস সিলিন্ডার ডিলাররা ফায়ার সার্ভিসের লাইসেন্স নিয়ে ব্যবসা করলেও খুচরা ও পাইকারি ব্যবসায়ীরা শুধুমাত্র ট্রেড লাইসেন্স দিয়েই ব্যবসা করছেন। যাদের লাইন্সে নেই তাদেরকে নোটিশ করা হয়েছে। 

বিস্ফোরক আইন ১৮৮৪-এর বিধির ৭১নং ধারায় বলা আছে, আগুন নেভানোর জন্য স্থাপনা বা মজুদাগারে যথেষ্ট পরিমাণে অগ্নিনির্বাপক যন্ত্রপাতি এবং সরঞ্জাম মজুদ রাখতে হবে। এ আইন অমান্য করলে ওই ব্যবসায়ী ন্যূনতম দুবছর এবং অনধিক পাঁচ বছরের জেল এবং অনধিক ৫০ হাজার টাকার অর্থদন্ডে-দন্ডিত হবেন এবং অর্থ অনাদায়ী থাকলে অতিরিক্ত আরো ছয় মাস পর্যন্ত  কারাদন্ডের বিধান রয়েছে। জগন্নাথপুর উপজেলার অনেক সচেতন নাগরিক বলেন, ‘বাংলাদেশের মত অধিক জনসংখ্যার দেশে অগ্নিকান্ডে ব্যাপক প্রাণহানীর ঘটনা ঘটে। এর জন্য আমাদের দাহ্য পদার্থ ব্যাবহারের অবাধ স্বাধীনতা দায়ী। 

জগন্নাথপুরে যত্রতত্র গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রির জন্য মজুত করে রাখা হয়। আবাসিক এলাকায় গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রি করা হচ্ছে। এমনও দেখেছি ওয়েল্ডিং কারখানা, খাবার হোটেলের পাশে গ্যাস সিলিন্ডার মজুত করে রাখা। এসব দেখতে বেশি দূর যাওয়া লাগে না। পৌর এলাকায় গেলেই দেখা যায়। হোটেলের বাইরে রান্না হচ্ছে আর দুই পাশে দুই দোকানের সিলিন্ডার মজুদ করা আছে। বড় ধরনের কোনো দুর্ঘটনা ঘটার আগে অনুমোদন ছাড়া নিয়মনীতিহীন এসব গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রয় কেন্দ্র অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে। 

গ্যাস সিলিন্ডার ব্যবসায়ীদের পাশাপাশি জনসাধারণকে সিলিন্ডার ব্যবহারে সতর্ক থাকার প্রয়োজন শুধু ব্যবসায়ীদের নয় সিলিন্ডার ব্যবহারকারীদেরও সতর্ক হতে হবে। রাস্তার পাশে চা, সিগারেটের টং দোকানেও সিলিন্ডার গ্যাস ব্যবহার হচ্ছে। যততত্র সিলিন্ডার ব্যবহাকারীদেরও নিয়ন্ত্রণে আনতে হবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে। 

এ ব্যাপারে জগন্নাথপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাহ্ফুজুল আলম মাসুম বলেন, অবৈধভাবে যারা গ্যাস সিলিন্ডার ব্যবসা করছে তাদের তালিকা তৈরী করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ।

এবিএন/রিয়াজ রহমান/গালিব/জসিম


 

এই বিভাগের আরো সংবাদ