আজকের শিরোনাম :

১৭ কলসি পুকুরের পানির দাম ১৫০টাকা

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ০৮ মার্চ ২০১৯, ১৮:৪৫ | আপডেট : ০৮ মার্চ ২০১৯, ১৮:৫৭

তীব্র পানি সংকটে বাগেরহাটের কচুয়াবাসী বৃষ্টির পানির উপর নির্ভরশীল।কিন্তু সংরক্ষন অভাবে তাদেরকে এখন পান করতে হচ্ছে পুকুরের পানি। সেটাও আবার টাকা দিয়ে কিনে। হ্যা, এখানে ১৭ কলসি পুকুরের পানির দাম ১৫০ টাকা।

পুকুরের পানি পান করায় ডায়রিয়া আমাশাসহ পেটের বিভিন্ন অসুখে আক্রান্ত হচ্ছে সেখানকার আপামর জনগন। বিশুদ্ধ পানির সংকট নিরসনের দাবি উপজেলাবাসীর। উপজেলা জনস্বাস্থ্য বিভাগ সিমিত সংখ্যক রেইন প্লান ওয়াটার, পিএসেফ ও অগভির নলকুপ বিতরন করেছে।দীর্ঘদিন সংস্কার না করায় অকেজো হয়ে পড়ে আছে অধিকাংশ পিএসেফ ও অগভির নলকুপ। আর্সোনিকযুক্ত অগভির নলকুপের পানি পান করতে পারছে না। 

জানা গেছে,উপজেলার সাতটি ইউনিয়নের ১৯ হাজার পরিবারের লক্ষাধীক মানুষের বিশুদ্ধ পানির সমস্য সমাধানে লক্ষে উপজেলা জনস্বাস্থ্য বিভাগ এপর্যন্ত ৫৩৭টি রেইন প্লান ওয়াটার (পানির ট্যাংকি), ১৯৯৪টি অগভীর নলকুপ(টিউবয়েল) এবং ৩৮৪টি পিএসেফ বিতরন করেছে যা জনসংখ্যার তুলনায় অতি সামান্য। বিতরনকৃত ৩৮৪টি পিএসেফ এর মধ্যে কতটি অকেজো তার সঠিক সংখ্যা বলতে পারেনি উপজেলার জনস্বাস্থ্য বিভাগ। 

গজালিয়া ইউনিয়নে অগভীর নলকুপ ৩২৬,পিএসেফ ৪৬,পানির ট্যাংকি ৫৯,ধোপাখালী ইউনিয়নে অগভীর নলকুপ ২৭১, পিএসেফ ৫৭, পানির ট্যাংকি ১০৮,মঘিয়া ইউনিয়নে অগভীর নলকুপ ৩০৯, পিএসেফ ৫৪,পানির ট্যাংকি ৪৯,কচুয়া ইউনিয়নে অগভীর নলকুপ ৩৭৮, পিএসেফ ৫৯,পানির ট্যাংকি ৭৬,গোপালপুর ইউনিয়নে অগভীর নলকুপ ২৩৭,পিএসেফ ৪৬,পানির ট্যাংকি ৯৩,রাড়ীপাড়া ইউনিয়নে অগভীর নলকুপ ২৫৪, পিএসেফ ৭০, পানির ট্যাংকি ৪০, বাধাল ইউনিয়নে অগভীর নলকুপ ২১৯,পিএসেফ ৫২,পানির ট্যাংকি ১১৫টি বিতরন করেছে। 
রঘুদত্তকাঠী,বাধাল সহ কয়েটি গ্রামে ঘুরে দেখাগেছে, মসনী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে, মসনী স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যান কেন্দ্র, মসনী সরকারি পুকুর, রঘুদত্তকাঠি কালী পুকুরপাড়, বাধাল সরকারি পুকুরের পিএসেফ সহ জনস্বাস্থ্য বিভাগের নির্মিত সব গুলো পিএসেফ সংস্কার অভাবে অকেজো হয়ে পড়ে আছে। 

মসনী গ্রামের মিনতী রানী দাস বলেন, আমি পঙ্গু বিধাব আমার আয় করার কেহ নাই। বাড়ি থেকে ১ কিঃমিঃ দুরের মসনী স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যান কেন্দ্রর পুকুর থেকে খাওয়ার জন্য ১ শত ৫০ টাকা ভ্যান ভাড়া দিয়ে ১৭ কলসি পানি আনিয়েছি। রফিকুল ইসলাম,কমলেশ দাস ও সেকেল শেখ সহ অনেকে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন,এলাকার সবকটি পিএসেফ নষ্ট। কিছু সংখ্যক পানির ট্যাংকি দেওয়া হলেও দরিদ্র লোকেরা পায়নি। আমাদের এলাকা সরকারি পুকুর গুলো জেলা পরিষদ ডাকদেয় বিভিন্ন লোক ডাক নিয়ে বিভিন্ন প্রজাতির মাছ চাষ করে। সম্প্রতি জেলা পরিষদ কিছু পুকুর সংস্কার করলেও  সব গুলো এখন পর্যন্ত ব্যবহারে উপযোগী হনি। বৃষ্টির পানি ধরে রাখার মতো বড় ট্যাংকি ক্রয়ের সমাথ তাদের নেই । নিরুপায় হয়ে এসব অসংরক্ষিত পুকুরে পানি পান করছে। 

উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান নাজমা সরোয়া বলেন, বিশুদ্ধ খাবার পানির সমস্যা সমাধানের লক্ষে কাজ চলছে জনস্বাস্থ্য বিভাগ মাধ্যমে মসনী একটি বড় স্থায়ী পানির প্লান দেওয়া হয়েছে বাস্তবায়ন হলে ওই এলাকার মানুষ বিশুদ্ধ খাবার পানি পাবে। একটি বেসরকারি সংস্থার কচুয়া এরিয়া প্রোগ্রাম ম্যানেজার তপন কুমার মন্ডল বলেন, এলাকার খাবার পানির সংকট নিরশনের লক্ষে উপজেলার গোপালপুর, রাড়ীপাড়া, বাধাল ও মঘিয়া ইউনিয়নে ৫শত ১ হাজার  পরিবারকে ১ হাজার  লিটারে পানির ট্যাংকি  এবং  ৫টি সোলার পিএসেফ বিতারন করা হয়েছে। সংস্থার পক্ষথেকে ডিপ টিউবয়েল স্থাপনের চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছি। পরিক্ষা নিরিক্ষা করে দেখাগেছে অত্র এলাকায় ডিপ টিউবয়েলের জন্য সঠিক নয়। 

উপজেলা জনস্বাস্থ্য কর্মকর্তা আলী হোসেন বলেন, এ উপজেলায় বিশুদ্ধ খাবার পানির সমস্যা রয়েছে। আমাদের বিভিন্ন কার্যক্রম আছে তা বাস্তবায়ন করছি। কিছু সংখ্যক ৩ হাজার লিটারে পনির ট্যাংকি দেওয়া হয়েছে। বৃষ্টির পানি ধরে রাখলে দুটি পরিবারে লোক  পান করতে পারবে। আমরাও চাই উপজেলার প্রতি ঘরে একটি করে পানির ট্যাংকি যেন পায়।উপজেলা নির্বাহী অফিসার তাসমিন ফারহানা বলেন, এখানে খাবার পানির সমস্যা আছে সরকারি ও বেসরকারি দপ্তরহতে বিভিন্ন প্লান ও উপকরন দেওয়া হয়েছে তবে তা জনসংখ্যার তুলনায় অপ্রতুল।
অগভির নলকুপের পানি আর্সোনিকযুক্ত,পিএসেফ সংস্কার অভাতে অকেজো হয়ে পড়ে থাকে। অভিজ্ঞ মহল মনে করেন, পিএসেফ বা তিন হাজার লিটারের পরিবর্তে দুই হাজার বা দেড় হাজার লিটার পানির ট্যাংকি প্রতিটি পরিবারকে দেওয়া হলে উপজেলা বাসীর খাবার পানির সমম্য লাঘব হবে।

এবিএন/শুভংকর দাস বাচ্চু/জসিম/রাজ্জাক

এই বিভাগের আরো সংবাদ