আজকের শিরোনাম :

সেই মতিন সরকারের সব সম্পদ জব্দ : ব্যাংক হিসাব স্থগিতের নির্দেশ

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ০৫ মার্চ ২০১৯, ১৫:৩৮

ধর্ষণের পর মা মেয়ের মাথা ন্যারাকারী তুফান সরকারের ভাই যুবলীগের বহিস্কৃত নেতা আব্দুল মতিন সরকারের অবৈধ সম্পদ ক্রোক এবং তার ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের হিসাব ফ্রিজ করার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আবেদনের প্রেক্ষিতে সিনিয়র স্পেশাল জজ নরেশ চন্দ্র সরকার ওই আদেশ দিয়েছেন। বিজ্ঞ আদালতের নির্দেশ হওয়ায় মতিন সরকার অবৈধভাবে অর্জিত সম্পদ অন্য কারও কাছে হস্তান্তর স্থানান্তর এবং ব্যাংকে রাখা অর্থ কারও কাছে স্থানান্তর করতে পারবেন না।

গতকাল সোমবার বিকালে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পিপি এস এম আবুল কালাম আজাদ এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

বিভিন্ন মহলের অভিযোগ পেয়ে বগুড়ার আলোচিত মতিন ও তুফান সরকারের অবৈধভাবে উপার্জিত সম্পদের অনুসন্ধান শুরু করে দূদক। পরে দুদকের পক্ষ থেকে ২০১৮ সালের ৬ মার্চ মতিন সরকার এবং ৭ মার্চ তুফান সরকারকে চিঠি দিয়ে তাদেরকে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সম্পদ বিবরণী দাখিল করতে বলা হয়। দুদকের নির্দেশনা অনুযায়ী মতিন সরকার ২৫ মার্চ এবং তার ভাই তুফান সরকার ২৭ মার্চ সম্পদ বিবরণী দাখিল করেন।

তদন্তে নেমে দুদক মতিন সরকারের বিরুদ্ধে অসাধু উপায়ে ৩ কোটি টাকার সম্পদ অর্জন এবং আরও প্রায় সোয়া ২ কোটি টাকার সম্পদ গোপনের প্রমাণ পায়। একইভাবে তার ছোট ভাই তুফান সরকারের বিরুদ্ধেও অসাধু উপায়ে প্রায় ১ কোটি ৬০ লাখ টাকা সম্পদ অর্জন এবং আরও প্রায় ৩০ লাখ টাকার সম্পদ গোপন করার প্রমাণ মেলে।

দীর্ঘ প্রায় ৯ মাসের তদন্ত শেষে অবৈধ সম্পদ অর্জন এবং অর্জিত সম্পদের তথ্য গোপনের অভিযোগে দুদক বগুড়া কার্যালয়ের সহকারি পরিচালক আমিনুল ইসলাম ২০১৮ সালের ৩১ ডিসেম্বর বগুড়া সদর থানায় আব্দুল মতিন সরকার ও তার ভাই তুফান সরকারের বিরুদ্ধে পৃথক দু’টি মামলা দায়ের করেন।

বগুড়ায় দুদকের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) আবুল কালাম আজাদ জানান, আব্দুল মতিন সরকারের মামলাটি তদন্ত চলছে। আব্দুল মতিন সরকার অবৈধভাবে অর্জিত তার সম্পদ ও অর্থ অন্যদের কাছে যাতে হস্তান্তর এবং স্থানান্তর করতে না পারেন এ জন্য দুদকের পক্ষ থেকে গত ১১ ফেব্রুয়ারি বগুড়ার সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালতে আব্দুল মতিনের অবৈধ সম্পদ ক্রোক এবং ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের হিসাব ফ্রিজ করার আবেদন জানানো হয়।

তিনি আরও জানান, আদালতের এ ধরনের আদেশের ফলে অবৈধভাবে অর্জিত সম্পদগুলো আব্দুল মতিনের দখলেই থাকবে কিন্তু তিনি তা কাউকে হস্তান্তর এবং স্থানান্তর করতে পারবেন না। একইভাবে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমা করা অর্থও স্থানান্তর করতে পারবেন না।

দেশজুড়ে আলোচিত কিশোরী ধর্ষণ মামলার প্রধান আসামি বহিষ্কৃত শ্রমিক লীগ নেতা তুফান সরকারের বড় ভাই আব্দুল মতিন সরকার। ভালো কলেজে ভর্তি করানোর প্রলোভন দেখিয়ে তুফান সরকার ২০১৭ সালের ১৭ জুলাই ওই কিশোরীকে ধর্ষণ করে।

ঘটনার ১০দিন পর তুফানের স্ত্রীর নেতৃত্বে একদল সন্ত্রাসী ২৮ জুলাই ওই কিশোরী ও তার মাকে মারধরের পর মাথা ন্যাড়া করে দেয়। ওই ঘটনায় মামলার পর পুলিশ তুফান ও তার স্ত্রীসহ ১০ জনকে গ্রেফতার করে। পরবর্তীতে অন্য আসামিরা জামিনে বেরিয়ে আসলেও তুফান সরকার এখনও কারাগারে আটক রয়েছেন।

ওই নির্যাতনের খবর সেই সময় সবগুলো গণমাধ্যম গুরুত্ব সহকারে প্রকাশ করে। ঘটনার পরপরই শ্রমিক লীগ বগুড়া শহর কমিটির আহবায়ক তুফান সরকারকে সংগঠন থেকে বহিষ্কার করা হয়। পরবর্তীতে তার বড় ভাই শহর যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মতিন সরকারকেও বহিষ্কার করা হয়।

 

এবিএন/খালিদ হাসান/জসিম/তোহা

এই বিভাগের আরো সংবাদ