আজকের শিরোনাম :

ঠাকুরগাঁওয়ে এক গ্রামে ৫ জনের মৃত্যু ‘নিপা ভাইরাসে’

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ০৪ মার্চ ২০১৯, ১০:৪১

জেলার বালিয়াডাঙ্গীতে এক গ্রামে ৫ জনের মৃত্যুর জন্য ‘নিপা ভাইরাস’কে দায়ী করেছেন গবেষকরা। ওই এলাকায় গবেষক দলের সরেজমিন তদন্ত এবং রোগের নমুনা পরীক্ষার পর রবিবার একথা জানিয়েছে রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর)।

রবিবার আইইডিসিআরের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘রোগের কারণ অনুসন্ধানে জানা যায়, মৃত ব্যক্তিদের সকলের জ্বর, মাথাব্যথা, বমি ও মস্তিষ্কে ইনফেকশনের (এনসেফালাইটিস) উপসর্গ ছিল। মৃত ব্যক্তিদের মধ্যে হতে একজনের নমুনা সংগ্রহ করা সম্ভব হয় এবং উক্ত নমুনায় নিপা ভাইরাসের উপস্থিতি পাওয়া যায়।’ নিপা ভাইরাস সাধারণত বাদুড় থেকে ছড়ায়। বাদুড় খেজুরের কাঁচা রস পান করার মাধ্যমে তা মানুষের মধ্যে আসতে পারে এবং আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে আসার মাধ্যমে ছড়ায়।

আইইডিসিআর বলছে, “উপরোক্ত আউটব্রেক ইনভেস্টিগেশনে প্রথম মৃত ব্যক্তির খেঁজুরের কাঁচা রস পান করার সুনির্দিষ্ট ইতিহাস না পাওয়া গেলেও অন্যান্য মৃত ব্যক্তিগণ প্রথম মৃত ব্যক্তির সংস্পর্শে আসার মাধ্যমে আক্রান্ত হয়েছিল বলে আইইডিসিআর ধারণা করছে।”

জীবিত সন্দেহাভাজন রোগীদের রক্তে নিপা ভাইরাসের উপস্থিতি না পেলেও বিভিন্ন সময়ে মৃত ব্যক্তিদের সংস্পর্শে আসা ব্যক্তিদের তালিকা তৈরি করে তাদের পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছে আইইডিসিআর।

ঠাকুরগাঁওয়ের জন্য যে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়, তাদের মাঠ পর্যায়ে তদন্ত শেষে আইইডিসিআরের পরিচালক অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরার কাছে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছিল। অধ্যাপক মীরজাদীই রোববার সংবাদ বিজ্ঞপ্তিটি পাঠান।

এতে বলা হয়, তদন্ত দল বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, ঠাকুরগাঁও সদর হাসপাতাল ও রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এবং বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় তদন্ত কাজ পরিচালনা করে।

তারা হাসপাতালের চিকিৎসক, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মী ও মৃত ব্যক্তিদের পরিবার, প্রতিবেশী, গ্রামবাসীদের কাছ থেকে তথ্য উপাত্ত ও প্রয়োজনীয় নমুনা সংগ্রহ করেন।

উল্লেখ্য, গত ৯ ফেব্রুয়ারি প্রথমে বাবা আবু তাহের (৫৫) মারা যান। আবু তাহেরের বয়স বেশি হওয়ার কারণে বিষয়টি তেমন গুরুত্বের সঙ্গে নেয়নি তার পরিবার। এরপর গত বুধবার আবু তাহেরের জামাই সদর উপজেলার রুহিয়া থানার কুজিশহর গ্রামের কহিম উদ্দীনের ছেলে হাবিবুর রহমান বাবলু (৩৫) একইভাবে আক্রান্ত হয়। পরে বৃহস্পতিবার সকালে ৯টার দিকে রংপুর মেডিকেলে বাবলু মারা যায়। জামাইয়ের এই মৃত্যুর সংবাদ শোনার কিছুক্ষণ পরই আবু তাহেরের স্ত্রী হোসনেয়ারা বেগম (৪৫) একই রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। এরপর রবিবার সকালে একই রোগে আক্রান্ত হয় আবু তাহেরের দুই ছেলে ইউসুফ আলী (২৭) ও মেহেদী হাসান (২৪)। তাদের দুজনকে রংপুর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে নেয়ার পথে ইউসুফ মারা যায় এবং মেহেদী রংপুর মেডিকেল কলেজ  হাসতালের ২য় তলার মেডিসিন বিভাগের ৩নং ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত ৯টার দিকে মারা যান। এ রোগে প্রথমে সারা শরীরে প্রচন্ড ব্যথা ও পরে বুকের ব্যথাসহ শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। জ্বরও আসে।

এবিএন/জনি/জসিম/জেডি


 

এই বিভাগের আরো সংবাদ