আজকের শিরোনাম :

লালমনিরহাটে গেজেট প্রকাশের অজুহাতে ঝুলে আছে সড়কের সংস্কার কাজ

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ৩০ মে ২০১৮, ১৭:১৩

লালমনিরহাট, ৩০ মে, এবিনিউজ : লালমনিরহাট সদর উপজেলার মোস্তফিরহাট-মহেন্দ্রনগর জিসি ভায়া সড়কটির সংস্কার কাজ ঝুলে আছে দীর্ঘ দিন ধরে। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরের কাছ থেকে সড়ক ও জনপথ অধিদফতরের সড়ক বিভাগের আওতায় হস্তান্তরের গেজেট প্রকাশ না হওয়ায় অযুহাতে কাজ শুরু হচ্ছে না। স্থানীয় সংসদ সদস্য এমপি ইঞ্জিনিয়ার আবু সালেহ মো. সাঈদ দুলাল দাবী করেছেন, দ্রুত গেজেট প্রকাশ ও রাস্তাটি মেরামতের জন্য সংশ্লিষ্ট দফতরকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

লালমনিরহাট সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আলী নূরায়েন বলেন, লালমনিরহাট সদর উপজেলার মোস্তফিরহাট থেকে মহেন্দ্রনগর পর্যন্ত ৫ দশমিক ৫৩ কিলোমিটার এলজিইডি’র জিসি ভায়া সড়কটি সওজের সড়ক বিভাগের অধীনে হস্তান্তরের জন্য গেজেট প্রকাশের নির্দেশনার চিঠি পাওয়া গেছে। গেজেট প্রকাশ হলে বুড়িমারী স্থলবন্দর-লালমনিরহাটের মহেন্দ্রনগর-মোস্তফিরহাট হয়ে রংপুরের সঙ্গে মহাসড়কে সংযুক্ত হবে।

এতে লালমনিরহাট সদর উপজেলা থেকে রংপুরের দূরত্ব প্রায় ২০ কিলোমিটার কমে যাবে। আগে লালমনিরহাট সদর থেকে মহেন্দ্রগর হয়ে বড়বাড়ী হয়ে রংপুর-কুড়িগ্রাম মহাসড়কে সংযুক্ত ছিল। এতে ২০ কিলোমিটার অতিরিক্ত পথ ঘুরতে হতো বাস-ট্রাকসহ সবধরনের যানবাহন গুলো। রাস্তাটি হস্তান্তর না হওয়ার কারণে এবং গেজেট প্রকাশ না হওয়ার কারণে সওজ কিংবা এলজিইডি কোনও পক্ষই সংস্কার কাজ করতে পারছে না।

লালমনিরহাট স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরের নির্বাহী প্রকৌশলী এস.এম. জাকিউর রহমান বলেন, হস্তান্তরের সিদ্ধান্ত হলেও গেজেট প্রকাশ না হওয়ার কারণে রাস্তাটির সংস্কার কাজ করা যাচ্ছে না। এজন্য ঝুঁকিপূর্ণ একটি বক্স কালভার্টসহ রাস্তাটি সংস্কার করার কাজও ঝুলে আছে। দ্রুত বিষয়টি নিষ্পত্তি করা গেলে সড়কটি সংস্কার করে ব্যবহারকারীদের দুর্ভোগ কমানো সম্ভব হতো।

লালমনিরহাট চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সাবেক সভাপতি শেখ আব্দুল হামিদ বাবু বলেন, আলোচিত সড়কটি জাতীয় মহাসড়কে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য ব্যবসায়ীদের দাবি দীর্ঘ দিনের। এটি বাস্তবায়ন হলে লালমনিরহাটের ব্যবসা-বাণিজ্য আরও বৃদ্ধি পাবে।

বুড়িমারী স্থলবন্দর পাথর ব্যবসায়ী আকমল হোসেন বলেন, মহেন্দ্রনগর-মোস্তফিরহাট অংশটি জাতীয় মহাসড়ক যুক্ত হলে ব্যবসায়ীদের জন্য অনেক ভালো হবে।

বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে নিয়মিত যাতায়াতকারী ট্রাক চালক বদিয়ার রহমান বলেন, যদি ২০ কিলোমিটার অতিরিক্ত ঘুরতে না হয়, তাহলে যেমন সময় সাশ্রয় হবে তেমিন প্রতিবার যাতায়াতে ৮ লিটার তেলও সাশ্রয় হবে। এক দিকে যেমন মালিকের লাভ হবে তেমনি সরকারের তেলও অপচয় হবে না। আমাদের সময়ও সাশ্রয় হবে। সবদিকেই ভালো হবে।

লালমনিরহাট সদর উপজেলার মহেন্দ্রগর এলাকার বাসিন্দা সফিকুল ইসলাম ও সাহিদুল ইসলাম বলেন, মহেন্দ্রনগর-মোস্তফিরহাট জিসি ভায়া সড়কটি মহাসড়ক হলে অল্প সময়ের মধ্যে রংপুর-লালমনিরহাট পণ্য পরিবহন করা সম্ভব হবে। ব্যবসা-বাণিজ্যের কাজে সড়ক ব্যবহারকারীসহ সাধারণ লোকজনকে মহেন্দ্রনগর-বড়বাড়ী হয়ে আর ২০ কিলোমিটার পথ ঘুরে লালমনিরহাট-রংপুর চলাচল করতে হবে না। সড়কটি মহাসড়ক হলে যেমন প্রস্ত বাড়বে তেমনি ভারী যানবাহন চলাচলের জন্য উপযোগী করা হবে। এই রাস্তাটি মহাসড়ক করার জন্য এলাকাবাসীর দীর্ঘদিনের দাবিও ছিল।

লালমনিরহাট সদর উপজেলার গোকুন্ডা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান গোলাম মোস্তফা স্বপন বলেন, একটি রাস্তা হস্তান্তর এবং গেজেট প্রকাশ করতে কত বছর লাগে? রাস্তাটি সংস্কার না হওয়ায় স্বাভাবিকভাবে মানুষ চলাচল করতে পারছে না। ঝুঁকি নিয়ে লোকজন চলাচল করছে।  

লালমনিরহাট-৩ (সদর) আসনের এমপি ইঞ্জিনিয়ার আবু সালেহ মো. সাঈদ দুলাল বলেন, ২০ কিলোমিটার রাস্তা অতিরিক্ত ঘুরে মহেন্দ্রনগর-বড়বাড়ী হয়ে লালমনিরহাট-রংপুর চলাচল করতে হতো।

এখন সেই পথ যেন ঘুরতে না হয়, সেজন্য মহেন্দ্রনগর-মোস্তফিরহাট জিসি ভায়া সড়কটি এলজিইডির কাছ থেকে সড়ক বিভাগের কাছে হস্তান্তরের জন্য সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়েছে। দ্রুত গেজেট প্রকাশ ও রাস্তাটি মেরামতের জন্য সংশ্লিষ্ট দফতরকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

এবিএন/আসাদুজ্জামান সাজু/জসিম/তোহা

এই বিভাগের আরো সংবাদ