আজকের শিরোনাম :

প্রীতিলতা কমপ্লেক্সের সম্প্রসারণ

পটিয়া ১৯ কোটি টাকার প্রকল্প মন্ত্রণালয়ে লাল ফিতায় বন্দি

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ২২:১৪

ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের অগ্রদূত দেশের প্রথম নারী শহীদ বীরকন্যা প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদারের নামে পটিয়ার ধলঘাটে নির্মিত বীরকন্যা প্রীতিলতা কমপ্লেক্সের সম্প্রসারণ প্রকল্পের ১৯ কোটি টাকার একটি প্রকল্পর প্রস্তাবনা মন্ত্রণালয়ে ঝুলে আছে। যাহা পটিয়ার মানুষ মনে করে এ প্রকল্পের কাজ মন্ত্রণালয়ের লাল ফিতায় বন্দি। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে একটি আধুনিক সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানে রূপ নেবে এবং নতুন প্রজন্মের কাছে বিপ্লবী বীরকন্যা প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদারের সংগ্রামী ইতিহাস তুলে ধরতে এ কমপ্লেক্সটি ব্যাপক ভূমিকা রাখবে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

অনুসন্ধানে জানা যায়, সাহিত্য ও সংস্কৃতিতে ঐতিহ্য পটিয়ায় বীরকন্যা প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদারের নামে পূর্ণাঙ্গ সাংস্কৃতিক কমপ্লেক্স গড়ার দাবি ছিল পটিয়ার মানুষের দীর্ঘদিনের। পরে পটিয়া আসনের সংসদ সদস্য হুইপ সামশুল হক চৌধুরীর সহযোগিতায় সাড়ে ৪ কোটি টাকা ব্যয়ে পটিয়া উপজেলার ধলঘাট বীরকন্যার গ্রামের বাড়িতে নির্মিত হয়েছে ‘প্রীতিলতা সাংস্কৃতিক কমপ্লেক্স’।

২০১৭ সালের ২০ অক্টোবর তৎকালীন সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নুর এমপি কমপ্লেক্সটির উদ্বোধন করেন। ৬ তলা বিশিষ্ট ভবনটিতে প্রীতিলতা গণসাংস্কৃতিক মঞ্চ, মাষ্টার দা সূর্যসেন রিসার্চ সেন্টার, সংগ্রহশালা ও গ্রন্থাগার, প্রীতিলতা শিশুকানন বিদ্যানিকেতন, কল্পনা দত্ত যোশী সাংস্কৃতিক চর্চাকেন্দ্র, নারী উন্নয়ন প্রকল্প দিপালী সংঘ, বিপ্লবী মাতা সাবিত্রী দেবী সেমিনার কক্ষ, আবাসিক ভবন পুষ্প কুন্তলা, প্রীতিলতা ট্রাস্ট কার্যালয়, কিচেন, ডাইনিং ও গাড়ি পার্কিং এর ব্যবস্থা রয়েছে। এখানে সব ধরনের কার্যক্রম চলে প্রীতিলতা ট্রাস্টের অর্থায়নে।

ট্রাস্টের সভাপতি পঙ্কজ চক্রবর্ত্তী বলেন, পটিয়ার সংসদ সদস্য ও বর্তমান হুইপ সামশুল হক চৌধুরীর সহযোগিতায় প্রায় সাড়ে ৪কোটি টাকা ব্যয়ে প্রীতিলতা সাংস্কৃতিক কমপ্লেক্স নির্মাণ হয়েছে। এখন এ কমপ্লেক্সটির সম্প্রসারণের জন্য ১৯ কোটি টাকা ব্যয়ে আরেকটি প্রস্তাবনা সংস্কৃতিক মন্ত্রণালয়ে জমা দেয়া হয়েছে। এ প্রস্তাবনায় সৌন্দর্য বর্ধন, গ্যালারী নির্মাণ, ইন্টেরিয়র ডেকোরেশন, আলাদা শিক্ষা ভবন ও আয় বর্ধক প্রকল্প রয়েছে। তাছাড়া প্রায় দুই শত বিপ্লবীর দৃষ্টিনন্দন ম্যুরাল নির্মাণের প্রস্তাব রয়েছে।

তিনি আরো বলেন, বিগত জাতীয় নির্বাচনের প্রায় ৩ মাস আগে আমরা প্রস্তাবনাটি দিয়েছিলাম। এর মধ্যে জাতীয় নির্বাচন হয়েছে, মন্ত্রী সভায় রদবদল এসেছে। আমরা আশা করছি প্রীতিলতা কমপ্লেক্সের সার্বিক উন্নয়নের জন্য এই প্রকল্প গুরুত্বসহকারে বিবেচনা করে মন্ত্রণালয় দ্রুততম সময়ে প্রকল্পের অনুমোদন দেবেন।

প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে সবমিলিয়ে পূর্ণাঙ্গ রূপ নিবে বীরকন্যা প্রীতিলতা কমপ্লেক্স। যেখান থেকে চট্টগ্রামের মানুষ, বাংলাদেশের মানুষ বিপ্লবের ইতিহাস জানবে। যেখানে ভারত উপ-মহাদেশের ইতিহাস রচিত হয়েছিল। বর্তমানে নিজেদের অর্থায়নে কমপ্লেক্সে সব ধরনের কর্মসূচি পরিচালনা করা হচ্ছে বলে তিনি জানান।

এ ব্যাপারে পটিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হাবিবুল হাসান বলেন, প্রীতিলতা কমপ্লেক্স এর সম্প্রসারণ প্রকল্পের প্রায় ১৯ কোটি টাকার একটি প্রকল্প আমরা সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছি। পরবর্তীতে মন্ত্রণালয় থেকে একটি পরিদর্শন টিম গঠন করা হয়। ওই কমিটি প্রকল্পের স্থান ও প্রস্তাবিত প্রকল্পের প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে যাচাই বাছাই করে প্রতিবেদন দিলেই প্রকল্প বাস্তবায়নের বিষয়ে মন্ত্রণালয় থেকে পদক্ষেপ নেবে।

উল্লেখ্য, ১৯১১ সালে ৪মে পটিয়া উপজেলার ধলঘাট ইউনিয়নে জন্মগ্রহণ করেন বীরকন্যা প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদার। ১৯৩২ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর পাহাড়তলী ইউরোপীয়ান ক্লাব আক্রমণের সময় ব্রিটিশ সৈন্যদের হাতে ধরা পড়ার আগেই তিনি আত্মাহুতি দেন।

এবিএন/সেলিম চৌধুরী/জসিম/রাজ্জাক

এই বিভাগের আরো সংবাদ