আজকের শিরোনাম :

সুনামগঞ্জে সাংবাদিকের ওপর হামলা

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ১৪:২৭

সুনামগঞ্জে দৈনিক কালের ছবি পত্রিকার সাংবাদিক ও ব্যবসায়ীর ওপর হামলা ও টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে।

এ ঘটনার প্রেক্ষিতে আহত সাংবাদিক সাবজল হোসেন বাদী হয়ে আব্দুর রাজ্জাকসহ মোট ৫ জনকে আসামি করে আজ ১৬.০২.১৯ ইং শনিবার দুপুর ২টায় তাহিরপুর থানায় মামলা দায়ের করেছেন।

এ ব্যাপারে দায়েরকৃত মামলা ও থানা সূত্রে জানা যায়, জেলার তাহিরপুর সীমান্ত সংলগ্ন বালিয়াঘাট গ্রামের বাসিন্দা আব্দুর রাজ্জাক নিজেকে একাধিক দৈনিক ও অনলাইন পত্রিকার সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে পত্রিকার সম্পাদকদের নাম ভাংগিয়ে কয়লা চোরাচালান, ইয়াবা, মদ ও অস্ত্র ব্যবসাসহ চাঁদাবাজি করে গত ২ বছরে কোটিপতি হয়েছে। তার চাঁদাবাজি ও মাদক ব্যবসার বিরুদ্ধে কথা বলায় গত শুক্রবার (১৫,০২,১৯) রাত ৭টায় আব্দুর রাজ্জাক তার ভাই আব্দুল কদ্দুস, শহিদ মিয়া, ভাতিজা রুবেল মিয়া, সোহাগ মিয়াগং দেশীয় অস্ত্র ও লাটিসুটা দিয়ে নতুন বাজারে সাংবাদিক সাবজল হোসেনের ওপর হামলা চালিয়ে আহত করে নগদ ৮ হাজার ৭ শত ৩০ টাকা ছিনিয়ে নেয়।

পরে এলাকাবাসী ওই সাংবাদিককে উদ্ধার করে স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা দিয়ে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। এর আগে বালিয়াঘাট গ্রামের গৃহবধূ নাজমা বেগম চাঁদা না দেওয়ায় আব্দুর রাজ্জাক তার বাহিনী নিয়ে বাড়িঘর ভাংচুর ও লুটপাট করাসহ শারীরিক নির্যাতনের ঘটনায় নাজমা বেগম বাদী হয়ে গত ০৮.০৫.২০১১ইং আদালতে আব্দুর রাজ্জাক, তার ভাই আব্দুল কদ্দুসসহ মোট ১৬ জনের বিরুদ্ধে দ.বি. আইনের-৪৪৮/৩৮৫/৩৮০/ ৪২০/৪২৭/৩২৩/ ৩৫৪/৩৪ ধারায় মামলা দায়ের করেন।

এ ছাড়াও আব্দুর রাজ্জাক ও তার ভাই আব্দুল কুদ্দুস সোর্স কালাম মিয়া, জানু মিয়া, ল্যাংড়া বাবুল ও জিয়াউর রহমান জিয়াকে নিয়ে ভারত থেকে কয়লা ও মাদকদ্রব্য পাচাঁর করে নৌকা বোঝাই করার সময় বিজিবি নৌকা ও অবৈধ মালামালসহ আব্দুল কুদ্দুসকে গ্রেফতার করার পর বালিয়াঘাট বিজিবি ক্যাম্প কমান্ডার আক্তারুজ্জামান বাদী হয়ে আব্দুর রাজ্জাক, তার ভাই আব্দুল কুদ্দুস ও সোর্সদের বিরুদ্ধে তাহিরপুর থানায় মামলা নং-৯, তারিখ-১৭.০৯.০৭ইং দায়ের করেন।

পরে এসআই নারায়ন মামলাটি তদন্ত করে আব্দুর রাজ্জাক ও তার ভাই কুদ্দুসের বিরুদ্ধে গত ১১.০১.০৮ইং আদালতে চার্জশীট পাঠান। বর্তমানে আদালতে মামলা নং-৬/২০০৮ইং হিসেবে চলমান রয়েছে।

এ ঘটনায় ক্ষিপ্ত হয়ে আব্দুর রাজ্জাক বিজিবির এক নায়েকের বউয়ের সাথে পরকিয়া করে তাকে ভাগিয়ে নিয়ে যায়। এ ছাড়া রাজ্জাক তার পাশের গ্রামের এক হিজরাকে বিয়ে করে টাকা-পয়সা আত্মসাৎ করে ছেড়ে দিয়েছে বলে এলাকাবাসী জানান। তার সোর্স জিয়াউর রহমানের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি মামলা নং-১৬৩/০৭, জানু মিয়ার বিরুদ্ধে কয়লা পাচাঁর মামলা নং-২০১/১৫, আব্দুল আলী ভান্ডারীর বিরুদ্ধে বিজিবির ওপর হামলার মামলা নং-১০৭/১৪ ও লাকমা গ্রামের ইয়াবা ব্যবসায়ী ল্যাংড়া বাবুল, রজনীলাইন গ্রামের ফিরোজ মিয়ার বিরুদ্ধে মাদক,অস্ত্র পাচাঁর ও চাঁদাবাজির মামলা রয়েছে। আর ইয়াবার চালানসহ মাদক স¤্রাজ্ঞী আংগুরী বেগমকে ২ বার জেল-হাজতে পাঠানোসহ সোর্স কালাম মিয়াকে ইয়াবাসহ গ্রেফতার করে গত ০১.০২.১৯ইং শুক্রবার জেলহাজতে পাঠানো পর আব্দুর রাজ্জাক স্থানীয় সাংবাদিক, বিজিবি ও পুলিশ প্রশাসনের ওপর ক্ষেপে যায়।

কিন্তু গত ২ দিনে বিজিবি অভিযান চালিয়ে মদ ও অস্ত্র তৈরি সরঞ্জামসহ চোরাচালানী সিরাজুল ইসলাম ও আবুল কাসেমকে গ্রেফতার করলেও আব্দুর রাজ্জাককে গ্রেফতার না করায় সীমান্ত অপরাধ বন্ধ হচ্ছে না বলে জানা গেছে।

এ ব্যাপারে নির্যাতিত গৃহবধূ নাজমা বেগম বলেন, আমি গরীব ও অসহায় বলে আজ পর্যন্ত সুবিচার পায়নি। দায়েরকৃত মামলার তদন্ত কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম বলেন, আব্দুর রাজ্জাকের বিরুদ্ধে অভিযোগ দাখিল হয়েছে, এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

তাহিরপুর থানার (ওসি) নন্দন কান্তি ধর এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

এবিএন/জাহাঙ্গীর আলম ভূঁইয়া/গালিব/জসিম

 

এই বিভাগের আরো সংবাদ