নানা অব্যবস্থাপনায় চলে নৈরপুকুরপাড় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়
অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ১৮:১৩
প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষক ছাড়াই ক্লাস চালিয়ে যাওয়া ও সঠিক সময়ে ক্লাসসহ সকল ধরণের কার্যক্রম অনুষ্ঠিত হয় না মুমুন্সীগঞ্জ সদরের ৪৭নং নৈরপুকুরপাড় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। এমন অভিযোগের ভিত্তিতে ঐ বিদ্যালয়ে প্রতিবেদনের জন্য সরেজমিন পরির্দশন করেন সাংবাদিকদের একটি টিম। টিমটি বিদ্যালয়ে সকাল ৯টা থেকে প্রায় এক ঘন্টা যাবৎ অবস্থান করে নানা অনিয়মের প্রমাণ পেয়েছেন।
সাংবাদিকরা জানান, বিদ্যালয়টিতে মোট ৭জন শিক্ষক রয়েছে। এ সাতজন শিক্ষকের মধ্যে সহকারী শিক্ষক শ্রাবণী সুলতানা ও নিতাই চন্দ্র দাস ছাড়া বাকি শিক্ষকরা অনুপস্থিত রয়েছে। অন্যান্য শিক্ষকদের বিষয়ে জানতে চাইলে উপস্থিত শিক্ষকরা বলেন, উনারা চলে আসবেন। এরমাঝে দীর্ঘ ৩০ মিনিট অতিবাহিত হওয়ার পরও পৌনে দশটা পর্যন্ত কোন শিক্ষককে বিদ্যালয়ে দেখা যায়নি। শিক্ষক হাজিরা খাতায়ও দুজন শিক্ষককে স্বাক্ষর করতে দেখা যায় বাকি শিক্ষকদের স্বাক্ষর নেই। সোয়া নয়টায় বিদ্যালয়ে সকল শিক্ষক ও শিক্ষার্থীর উপস্থিতিতে এসেম্বলি হওয়ার কথা। কিন্তু দেখা যায় এসেম্বলিও হচ্ছে না এবং সকল শিক্ষকও উপস্থিত নেই।
বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষিকা নাজমা চৌধুরীসহ অন্যান্য শিক্ষকরাও প্রতিনিয়তই বিদ্যালয়ে উপস্থিত না থেকেই হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করেন বলে অভিযোগ রয়েছে। অভিযোগে আরো বলা হয়েছে যে, কোন একদিন বিদ্যালয়ে উপস্থিত হয়ে অন্যান্য দিনগুলোর স্বাক্ষর দিয়ে থাকেন তারা। প্রধান শিক্ষিকা সরকারি বিভিন্ন প্রোগ্রামের নামেও নিয়মিতই বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত থাকে বলে অভিযোগ। প্রধান শিক্ষিকা বিদ্যালয়ের প্রত্যেক শিক্ষার্থীদের জন্য শাহজালাল ক্লথ ষ্টোর থেকে স্কাউটিং ড্রেস তৈরী করা বাধ্যতামূলক করেছে বলেও অভিযোগ রয়েছে। যেখানে শতকরা নব্বই শতাংশ অভিভাবকই দরিদ্র। পোষাক থাকা সত্ত্বেও হঠাৎ করেই নতুন পোষাক তৈরী করতে শিক্ষার্থীদের বাধ্যতামূলক করেছে বলে অনেকেরই অভিযোগ।
বিদ্যালয়ের ফলাফল দেখিয়ে উপস্থিত শিক্ষকরা বলেন, আমরা যদি নিয়মিত ক্লাস না করি, তাহেল ফলাফল ভালো হয় কিভাবে? এমন উত্তরের চিত্রে দেখা যায়, এই বিদ্যালয় থেকেই প্রায় প্রতি বছর বিভিন্ন পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁস করে শিক্ষার্থীদের ফলাফল ভালো করানো হয় বলেও একাধিক সূত্রে জানা গেছে।
জানা যায়, জেলা শিক্ষা অফিস থেকে এসেম্বলির বিষয়ে কোন অফিসিয়াল নোটিশ করা হয়নি বা প্রত্যেক বিদ্যালয়ে নোটিশ পৌছানোও হয়নি। ফলে কিছু কিছু বিদ্যালয়ে সকালের শিফটে এসেম্বলি করানো হচ্ছে আর নৈরপুকুরপাড় বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা মৌখিকভাবে বা ফেসবুকের মাধ্যমে জেনেই এসেম্বলি থেকে বিরত রয়েছে।
বিদ্যালয়ে অনুপস্থিতি ও নানা অনিয়মের বিষয়ে বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষিকা নাজমা চৌধুরীর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, আমি আপনার কোন প্রশ্নের জবাব দিতে রাজি না। এসেম্বলি সম্পর্কে বলা হলে তিনি সকালে এসেম্বলি করার কোন নিয়ম নেই বলে জানান।
এ বিষয়ে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার তাপস কুমার অধিকারী বলেন, আমি সদরের প্রতিটি বিদ্যালয়েরই খোঁজ খবর রাখি। যদি কোন বিদ্যালয়ে অনিয়ম হয়ে থাকে তাহলে অবশ্যই তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এসেম্বলির বিষয়ে সকল বিদ্যালয়ে নোটিশ করে দেওয়া আছে তারা সেভাবেই কার্য-পরিচালনা করে যাচ্ছেন।
এবিএন/আতিকুর রহমান টিপু/জসিম/রাজ্জাক
এই বিভাগের আরো সংবাদ