আজকের শিরোনাম :

ভূঞাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স

লাইট জ্বলছে, ফ্যানও ঘুরছে শুধু ডাক্তার নেই

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ০১ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ২২:২৫

পাচঁ মাসের গর্ভবতী লিমা বেগম। বয়স ২২ বছর।  অতিরিক্ত রক্তক্ষরণজনিত সমস্যা নিয়ে এসেছেন ভূঞাপুর হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে। দীর্ঘ সময় জরুরী বিভাগে বসে কাতরাচ্ছেন ব্যথায়।  নেই কোন ডাক্তার, স্বাস্থ্য সহকারি এমনকি ওয়ার্ড বয়ও। তালাবন্ধ রয়েছে উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার কার্যালয়। তবে জরুরী বিভাগে লাইট জ্বলছে, ফ্যানও ঘুরছে ঠিকই। রোগীর স্বজনদের চেঁচামেচিতে জরুরী বিভাগে আসেন স্বাস্থ্য সহকারি নুরুল ইসলাম।

রোগীর সমস্যার কথা ভালোভাবে শুনেই টাঙ্গাইল শেখ হাসিনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থনান্তরের একটি স্লিপ ধরিয়ে দেন স্বজনদের হাতে। বুধবার বিকাল ৪টায় হাসপাতালে গিয়ে এমন দৃশ্যই দেখা গেছে। ডাক্তার ও প্রয়োজনীয় সংখ্যক জনবল না থাকায় লিমা বেগমের মতো হাজার হাজার রোগী বঞ্চিত হচ্ছে চিকিৎসাসেবা থেকে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, ভূঞাপুর ৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে জনবল সংকটসহ বিভিন্ন সমস্যায় জর্জরিত। দীর্ঘদিন ধরে ডাক্তার সংকটের কারণে উপজেলার প্রায় ৫ লাখ জনগোষ্ঠী বঞ্চিত হচ্ছে সেবা থেকে। হাসপাতালটি ৪টি উপজেলার সীমান্তবর্তী হওয়ায় উপজেলাসহ পার্শ্ববর্তী ঘাটাইল, গোপালপুর ও কালিহাতী উপজেলা থেকে রোগীরা চিকিৎসাসেবা নিতে আসেন। কিন্তু প্রয়োজনের তুলনায় চিকিৎসক, নার্স, প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি সংকটের কারণে কোনো সেবা না পেয়ে ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন রোগীরা।

সরকারি বিধি মোতাবেক বিশেষজ্ঞসহ ২৭ চিকিৎসকের অনুমোদন রয়েছে। সেখানে কাগজে-কলমে ডাক্তারের পদ শূন্য রয়েছে ১২টি। বাকি ১৫ জনের মধ্যে ৮ জন রয়েছেন ডেপুটেশনে। এর মধ্যে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা একজন, ইউনানি একজন, ডেন্টাল সার্জন একজন, গাইনি একজন, অর্থপেডিকস একজন, শিশু বিশেষজ্ঞ একজন ও জেনারেল ফিজিশিয়ান রয়েছে একজন। এসব ডাক্তাররা সপ্তাহে ২ থেকে ৩ দিনের বেশি অফিস করেন না।

স্বাস্থ্য সহকারী, টেকনিশিয়ান, ল্যাবরেটরি এসিস্ট্যান্ট ও এমএলএসএস পদে ১টি করে পদ থাকলেও কোনো জনবল নেই। অফিস সহকারী ৩ জনের মধ্যে রয়েছে মাত্র ১ জন, স্বাস্থ্য সহকারীর পদ শূন্য রয়েছে ৫টি। সিকিউরিটি গার্ড থাকার কথা ৩ জন, সেখানে রয়েছে মাত্র ১ জন। হাসপাতালে একটি এক্সরে মেশিন দীর্ঘ তিন বছর ধরে অচল অবস্থায় পড়ে রয়েছে।  আল্ট্রসনোগ্রাম মেশিন থাকলেও সনোলজিস্ট না থাকায় সেটিও বিকল।
প্যাথলজিক্যাল ল্যাবে নামেমাত্র কিছু পরীক্ষা করা হয়। দীর্ঘদিন ধরে বিকল হয়ে হাসপাতাল কম্পাউন্ডে পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে দুটি অ্যাম্বুলেন্স।

হাসপাতালের বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা.আবু সামা বলেন, টাঙ্গাইল মিটিং থাকার কারনে ওইদিন হাসপাতালে যেতে পারিনি। আর প্রয়োজনের তুলনায় চিকিৎসক না থাকায় চিকিৎসাসেবা কিছুটা ব্যহত হচ্ছে। তবে আশা করছি খুব তাড়াতাড়ি এ সমস্যার সমাধান হবে।

এবএিন/কামাল হোসেন/জসমি/রাজ্জাক

এই বিভাগের আরো সংবাদ