আজকের শিরোনাম :

উপজেলা পরিষদ নির্বাচন

কাউখালীতে আওয়ামী লীগ ও জেপি সরব, বিএনপি নিরব

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ৩০ জানুয়ারি ২০১৯, ১৬:০৯

আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনকে ঘিরে পিরোজপুরের কাউখালীতে আওয়ামী লীগ ও জেপির সম্ভাব্য প্রার্থীদের প্রচার প্রচারণায় নির্বাচনী আমেজ বইছে। তৃণমূলের ভোটারদের মাঝে চলছে নানা জল্পনা কল্পনা।  তবে কেন্দ্রের নির্দেশনাহীন বিএনপি এখনও নিরব।

এদিকে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের যেমন একাধিক প্রার্থী ও তেমনি জাতীয় পার্টির (জেপি) মনোনয়ন প্রত্যাশী একাধিক প্রার্থীরা সরবে নেতা কর্মী সমর্থকদের নিয়ে মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন। চায়ের টেবিল থেকে রাজনীতির টেবিল পর্যন্ত কাউখালীর সর্বত্র চলছে আগামী উপজেলা নির্বাচন এবং সম্ভাব্য প্রার্থীদের নিয়ে আলোচনা। ব্যানার ফেস্টুনে ও পোস্টারে ছেঁয়ে গেছে কাউখালীর হাট-বাজার আর প্রত্যন্ত জনপদ।

উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে দলীয় প্রতীকে নির্বাচন হওয়ায় প্রার্থীরা দলীয় মনোনয়ন পেতে  আটঘাট বেঁধে মাঠে নেমেছেন। এলাকায় শুরু হয়েছে আওয়ামীলীগ ও জাতীয় পার্টি (জেপি) থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশীদের নির্বাচনী নানা প্রচারণা । অপরদিকে বিএনপি নির্বাচনে আসবে কি আসবেনা কেন্দ্রীয় ভাবে দলীয় সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছে। আওয়ামীলীগের দলীয় মনোনয়ন দৌড়ে নবীন-প্রবীণ দেড় ডজন প্রার্থীর পদচারণায় কাউখালীর সর্বত্র এখন নির্বাচনী আমেজ শুরু হয়েছে। প্রার্থীরা এলাকা  চষে বেড়াচ্ছেন।

 যাচ্ছেন ভোটারদের বাড়ি। প্রার্থীদে লক্ষ্য যে করেই হোক দলীয় মনোনয়ন পেতে হবে। স্থানীয়দের সূত্রে জানাগেছে, ইতিমধ্যে আওয়ামীলীগ থেকে একাধিক মনোনয়ন প্রত্যাশীরা এলাকায় গণসংযোগে ব্যস্ত সময় পার করছেন। চেয়ারম্যান পদে আওয়ামীলীগ থেকে সম্ভাব্য প্রার্থীরা হলেন, উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়াম্যান মোঃ মনিরুজ্জামান তালুকদার পল্টন,

উপজলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও বর্তমান উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান মিঠু, কাউখালী সদর ইউপি চেয়ারম্যান ও উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি আমিনুর রশীদ মিল্টন,  উপজেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সভাপতি এডভোকেট আব্দুস শহীদ, আওয়ামী মহিলা লীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদের সদস্য শাহাজাদি শাহীন রেবেকা চৈতী, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপ-কমিটির সদস্য ও কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সহ-সাধারণ সম্পাদক বিশ্বজিৎ পাল, জেলা পরিষদের সদস্য ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সদস্য মামুন হোসাইন বাবলু জমাদ্দার ।

উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে মনোনয়ন প্রত্যাশী হিসেবে ইতিমধ্যে মাঠে গণসংযোগ করেছেন জেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি, কাউখালী উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাংবাদিক মোঃ মৃদুল আহম্মেদ সুমন, উপজেলা জাতীয় পার্টি জেপির সাধারন সম্পাদক শাহ আলম নসু,

 উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক লাইয়েকুজ্জামান মিন্টু তালুকদার, উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য মোঃ শাহীন মাহামুদ, কাউখালী সদর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান, উপজেলাা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারন সম্পাদক পলাশ সিকদার।

উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে মনোনয় প্রত্যাশী হিসাবে ইতিমধ্যে মাঠে গণসংযোগ করেছেন উপজেলা যুব মহিলালীগের সভাপতি শাহিদা হক, জেলা তাঁতী লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক নার্গিস আক্তার হাদিয়া, যুব মহিলালীগের সাংগঠনিক সম্পাদক লিপি আক্তার হ্যাপি। এছাড়া বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান ফাতেমা ইয়াসমিন পপি গতবার নির্বাচনে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী ছিলেন কিন্তু এবারের নির্বাচনে সে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে নির্বাচন করবেন।

আওয়ামী লীগের ও জাতীয় পার্টির সম্ভাব্য প্রার্থীদের মাঠে গণংসযোগ করতে দেখা গেলেও বিএনপি ও অন্য দলের কাউকে এখনও মাঠে দেখা যাচ্ছে না।

মনিরুজ্জামান পল্টন চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করার জন্য উপজেলা জুড়ে চষে বেড়াচ্ছেন এবং ভোটারদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে শুভেচ্ছা বিনিময় করছেন। তিনি উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ভাইস চেয়ারম্যান হওয়ার পর বিভিন্ন ইউনিয়নের রাস্তাঘাটে ব্যাপক উন্নয়ন করেছেন। তিনি ছাত্রজীবন থেকে ছাত্রলীগ, যুবলীগ সব শেষ উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন।

কামরুজ্জামান মিঠু তিনি উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান হিসেবে গত পাঁচ বছর ধরে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। তিনিও চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করার লক্ষ্যে গণসংযোগ করছেন। তিনি ছাত্রজীবন থেকেই আওয়ামী লীগের দলীয় রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। রাজনৈতিক নানা প্রতিবন্ধকতার মাঝেও তিনি নিজের যোগ্যতায় অবস্থান ধরে রেখেছেন।

আমিনুর রশীদ মিল্টন তিনি কাউখালী সদর ইউনিয়নের দুইবারের নির্বাচিত ইউপি চেয়ারম্যান। তিনি ছাত্রলীগের সভাপতি থাকা অবস্থায় চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। সামাজিক বিভিন্ন দরবার সালিশে দল মতের ঊর্ধ্বে থেকে নিরপেক্ষভাবে কাজ করায় এলাকায় ব্যাপক পরিচিতি লাভ করেছেন। বর্তমানে তিনি উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় গণসংযোগ অব্যাহত রেখেছেন।

এছাড়া এক নম্বর সয়না রঘুনাথপুর ইউনিয়নের দুইবার নির্বাচিত চেয়ারম্যান ও  জেপি নেতা আবু সাঈদ মিয়া মনু। তিনিও উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় গণসংযোগ অব্যাহত রেখেছেন।

উল্লেখ্য, কাউখালী উপজেলা পরিষদের প্রথম নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় ১৯৮৫ সালে। প্রথম উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন জাতীয় পার্টির কাজী হারুন আর রশীদ। ১৯৯০ সালে দ্বিতীয়বার উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন কাজী হারুন আর রশীদ। ১৯৯২ সালে উপজেলা পরিষদ বাতিল হওয়ায় ২০০৮ সাল পর্যন্ত উপজেলা পরিষদের নির্বাচন হয়নি।

২০০৯ সালে পুনরায় উপজেলা পরিষদের নির্বাচন হলে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন কাউখালী উপজেলা বিএনপির সভাপতি এস.এম আহসান কবীর। ২০১৪ সালেও তিনি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়ে অদ্যবর্তী পর্যন্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করে আসছেন।

উপজেলা নির্বাচনে কাউখালীতে বিএনপির অবস্থান সৃদৃঢ় থাকলেও এবারের হিসেব ভিন্ন। সাংগঠনিক নানা সংকট ও কেন্দ্রীয় বিএনপি উপজেলা নির্বাচনে আসা না নিয়ে কোন সিদ্ধান্ত না থাকায় বিএনপির কোন কর্মতৎপরতা নেই মাঠে। ফলে ক্ষমতাসীন আ.লীগ ও জাতীয় পার্টি  জেপি) প্রার্থীরাই নির্বাচনের মাঠে ভোটের আমেজ ধরে রেখেছেন।


এবিএন/সৈয়দ বশির আহম্মেদ/জসিম/তোহা

এই বিভাগের আরো সংবাদ