মাধ্যমিকে শিক্ষার্থী ঝড়ে পড়ার আশঙ্কা
খোকসায় দুই হাজার শিক্ষার্থীর উপবৃত্তি বন্ধ
অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ২৮ মে ২০১৮, ১২:০৩
খোকসা (কুষ্টিয়া) , ২৮ মে, এবিনিউজ : সেকায়েপ প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ায় কুষ্টিয়ার খোকসায় মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষার্থী ঝড়ে পরা ও বাল্য বিয়ের আশঙ্কার দেখা দিয়েছে বলে দাবি শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের। প্রকল্পটি বন্ধের ফলে চলতি শিক্ষাবর্ষের প্রায় ২ হাজার শিক্ষার্থী উপবৃত্তিসহ অন্যান সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষার্থী ঝড়ে পরা ও বাল্য বিবাহ রোধে উপজেলা ৩২টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও মাদ্রাসায় ৯ বছর আগে সেকেন্ডারী এডুকেশন কোয়ালিটি এন্ড আকসে এনহান্সমেন্ট প্রজেক্ট (সেকায়েপ) মডেল প্রকল্পটি চালু করা হয়। প্রতি শিক্ষাবর্ষে ৬ষ্ঠ থেকে ১০ শ্রেণি পর্যন্ত গড়ে ১১ থেকে ১৩ হাজার শিক্ষার্থী এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অধ্যায়ন করে। মোট শিক্ষার্থীর মধ্যে প্রায় ১৫ শতাংশ শিক্ষার্থী এ প্রকল্প থেকে উপবৃত্তিসহ নানা সুবিধা পেয়ে আসছিল।
বাল্য বিয়ে প্রবন এ এলাকায় সর্বশেষ অনুষ্ঠিত জেএসসি পরীক্ষায় খোকসা পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে অধিনে ১০টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে এক হাজার ২১৬ জন শিক্ষার্থী ফরম পুরন করে। কিন্তু এর মধ্যে ৩১ জন শিক্ষর্থী পরীক্ষায় অনুপস্থিত থাকে, যার মধ্যে ২৮ জন মেয়ে। অনুপস্থিত মেয়েরা বাল্য বিয়ের শিকার হয়েছে বলে শিক্ষকরা দাবি করে।
প্রকল্পটির মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার পর নতুন করে প্রকল্প গ্রহন না করায় উপজেলা মাধ্যমিক স্তরের প্রায় ২ হাজার শিক্ষার্থী উপবৃত্তির টাকা সহ অন্যান সুবিধা বন্ধ হয়ে গেছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে শিক্ষকরা বলছে, রমাজানের ছুটির আগেই অনেক শিক্ষার্থী বিদ্যালয়ে অনিয়মিত হয়ে পরেছে। অনেক ছাত্র সংসারের তাগিতে আয়মুলক কাজে যোগ দিয়েছে। ফলে বাল্য বিয়ে ও ঝড়ে পরা শিক্ষার্থীর সংখ্যা বৃদ্ধি সমূহ সম্ভাবনা দেখা দেওয়া আশঙ্কা করছে তারা।
এ প্রকল্পের সুবিধা ভোগি শিমুলিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী শিলা খাতুন জানায়, তার বাবা একজন ইট ভাটার শ্রমিক। যা আয় করে তা দিয়ে তিন ভাইবোনের লেখাপড়া চালানো কষ্ট। উপবৃত্তির টাকা দিয়ে খাতা-কলম কেনা, স্কুলের যাওয়া-আসা, পরীক্ষার ফিসসহ কিছু খরচ মিটত। এ বছর কিছুই পায়নি। তাই সব খরচ বাবার কাঁধে পরেছে। যেকোন সময় তার পড়া লেখা বন্ধ হয়ে যেতে পারে বলে সে জনান। একই স্কুলের ছাত্রী রিমা খাতুন, আমীর হামজাসহ অনেকেই জানালেন একই সমস্যার কথা। এই স্কুলের প্রধান শিক্ষক মোহাঃ আশরাফুজ্জামান জানান, প্রকল্পটির মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা উপকৃত হচ্ছিল। প্রকল্পটি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষার্থী ঝড়ে পরা ও বাল্য বিয়ের প্রবনতা বৃদ্ধি পাবে।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার ফারুক আহম্মেদকে মোবাইল ফোনে চেষ্টা করা হয় তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায় তবে সহকারী উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, সেকায়েপ প্রকল্পের মাধ্যমে দরিদ্র শিক্ষার্থীরা আর্থিক ভাবে উপকৃত হচ্ছিল। নতুন করে এ জাতীয় কোন প্রকল্প চালুর সম্ভাবনাও নাই। তিনিও আশঙ্কা করছেন, প্রকল্পটি বন্ধ হলে উপজেলার মাধ্যমিক স্তরে শিক্ষার্থী ঝড়ে পরা ও বাল্য বিয়ের প্রবনতা বেড়ে যেতে পারে। এবিএন/সুমন কুমার মন্ডল/জসিম/নির্ঝর
এই বিভাগের আরো সংবাদ