আজকের শিরোনাম :

বকুলবাড়িয়ায় আবাদি জমির পাশে ইট ভাটার কারণে হুমকিতে কৃষকরা

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ২৪ জানুয়ারি ২০১৯, ১৩:৩৯

পটুয়াখালীর গলাচিপা উপজেলার বকুলবাড়িয়া ইউনিয়নের পাতাবুনিয়া এলাকায় কৃষি জমি ধ্বংস করে কৃষি আবাদি জমির পাশেই, প্রাকৃতিক পরিবেশ বান্ধব বিভিন্ন প্রজাতির গাছ কেটে  প্রতিনিয়ত জ্বলছে ইট ভাটা । 

এ যেন আইন আছে প্রয়োগ নেই বলে অভিযোগ করেছেন স্থানী কৃষক মোঃ সুলতান মৃধা, ইউনুচ মুন্সী, আব্দুল সত্তার বিশ্বাস, খলিল হাওলাদার, আজিজ মুন্সী, কালাম বিশ্বাস, নাসির বিশ্বাস ও হারুন মুন্সী সহ আরো অনেকই। 

তাদের দাবী আইন পরিচালক সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ যেন অবৈধ ইট ভাটা বন্ধ করে কৃষি আবাদি জমি যেন রক্ষা করে কৃষকগোষ্ঠীরর পাশে দ্বারায়।

স্থাপন (নিয়ন্ত্রণ) আইন ২০১৩ সংশোধন করে নতুন অধ্যাদেশের গেজেট জারি করা হয়েছে সম্প্রতি। সংশোধনীতে আইন লঙ্ঘনের শাস্তি বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড বহাল রয়েছে। তবে জরিমানার পরিমাণ দ্বিগুণ থেকে পাঁচগুণ পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। 

সংশোধিত আইনে বলা হয়েছে, ইটের বিকল্প হিসেবে ব্লক উৎপাদন ও ব্যবহার বাধ্যতামূলক করতে পারবে সরকার। 

অধ্যাদেশে বলা হয়েছে, লাইসেন্স ছাড়া ইট প্রস্তুত নিষিদ্ধ। এ জন্য প্রত্যেক জেলা প্রশাসকের কাছ থেকে লাইসেন্স নিতে হবে। 

তবে কংক্রিট, বালি ও সিমেন্ট দিয়ে তৈরি কংক্রিট কম্প্রেসড ব্লক তৈরিতে লাইসেন্স লাগবে না। 

লাইসেন্স ছাড়া ইট তৈরি, ভাটা স্থাপন ও পরিচালনা করলে অনধিক এক বছরের কারাদণ্ড বা ৫ লাখ টাকা জরিমানা কিংবা উভয় দণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে। 

তবে আগে এ অপরাধে এক বছরের কারাদণ্ড বা ১ লাখ টাকা জরিমানা কিংবা উভয় দণ্ড ছিল। 

এ হিসাবে জরিমানা পাঁচগুণ বেড়েছে। ইটভাটার লাইসেন্স পেতে হলে আবেদনপত্রে এখন থেকে প্রস্তাবিত ভাটায় ইট তৈরির জন্য মাটির উৎস হলফনামায় দাখিল করতে হবে। 

এ ছাড়া আইনে নিষিদ্ধ এলাকায় ইটভাটা স্থাপন করলে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড বা অনধিক পাঁচ লাখ টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ডের বিধান বহাল রাখা হয়েছে। 

ইট তৈরির জন্য কৃষিজমি, পাহাড় ও টিলা কেটে ইটের কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহার করা যাবে না। এটি ভাটা মালিকরা করলে কিংবা জেলা প্রশাসকের অনুমোদন ছাড়া ইট তৈরির জন্য মজা পুকুর, খাল, বিল, খাঁড়ি, দীঘি, নদ-নদী, হাওর-বাঁওড়, চরাঞ্চল ও পতিত জায়গার মাটি কাটলে দুই বছরের কারাদণ্ড বা ৫ লাখ টাকা জরিমানা অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন। 

যদিও আগে এ আইনে জরিমানার পরিমাণ ছিল ২ লাখ টাকা। এ ক্ষেত্রে জরিমানা আড়াইগুণ বেড়েছে।  

এ আইনে নতুন করে সংযোজন হয়েছে নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে সরকার নির্ধারিত হারে ছিদ্রযুক্ত ইট বা হলো ব্রিক ও ব্লক তৈরি না করলে ২ লাখ টাকা জরিমানা করা হবে। 

এ ছাড়া ইটভাটায় ইট পোড়ানোর কাজে জ্বালানি হিসেবে নির্ধারিত মাত্রার অতিরিক্ত সালফার, অ্যাশ, মারকারি বা এমন উপাদান সংবলিত কয়লা ব্যবহার করলে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা ছিল। 

এ জরিমানার পরিমাণ বাড়িয়ে এখন এক লাখ টাকা করা হয়েছে। আইন লঙ্ঘন করে ইটভাটা থেকে নির্ধারিত মাত্রার অতিরিক্ত গ্যাসীয় নিঃসরণ ও তরল বর্জ্য ফেললে এক বছরের কারাদণ্ড বা অনধিক একলাখ টাকা জরিমানা কিংবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হওয়ার বিধান থাকলেও তা বাস্তবে আইন প্রয়োগ না হওয়ায় জনসাধারণ আইনের প্রতি আস্থা হারিয়ে ফেলছে বলে অভিমত পাওয়া যায়।

অবৈধ ইটা ভাটার বিষয়ে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ জাফর খান বলেন, আমিও এ নিয়ে বহুবার উপর মহলে জানিয়েছি, কিন্তু কোন ফলাফল হয়নি, আমিও চাই আইন প্রয়োগ কারি কর্তৃপক্ষ যেন পরিবেশ দূষণ ইট ভাটা বন্ধ করে দিয়ে যেন প্রান্তিক কৃষকের পাশে দ্বারায় এটাই জনসাধারণের দ্বাবী।

এ বিষয়ে গলাচিপা সহকারী কমিশনার (ভূমি) সুহৃদ সালেহিন এর কাছে মুঠোফোনে জানতে চাইলে, কৃষি জমিতে ইট ভাটা করার কোন বাধা নিষেধ নেই, তবে যদি গ্রাম চুল্লি থাকলে সরজমিনে গিয়ে আইনি ব্যবস্থা নিবেন বলে প্রতিবেদককে জানান। 

সঠিক আইন প্রয়োগ করে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ অতিদ্রুত আইনি ব্যবস্থা নিবেন এমনটাই দাবি করছেন প্রান্তিক কৃষকগোষ্ঠী। 

এবিএন/মু. জিল্লুর রহমান/গালিব/জসিম
 

এই বিভাগের আরো সংবাদ