চাকুরি শেষ হওয়ার পরও পাঁচপীর ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ
অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ০৭ জানুয়ারি ২০১৯, ১৬:০৮
চাকুরির মেয়াদ শেষ হওয়ার পরও স্বপদে বহাল রয়েছে পাঁচপীর ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ।
তার বিরুদ্ধে অভিভাবকসহ গভর্নিং বডির সদস্যরা সংশ্লিষ্ট বিভাগের বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ করেছেন।
কুড়িগ্রামের উলিপুরে ১৯৮৭ সালে স্থাপিত হয় পাঁচপীর ডিগ্রি কলেজ। প্রতিষ্ঠার পর থেকে পর্যায়ক্রমে মানবিক, বিজ্ঞান, ব্যবসায় শিক্ষা সহ ¯œাতক (পাশ) এবং ¯œাতক (সম্মান) পর্যন্ত উন্নীত হয়।
বর্তমানে বিভিন্ন শাখায় শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১হাজার ৯’শ ৪৮ জন এবং ৪৯ শিক্ষক কর্মচারি কর্মরত রয়েছেন।
প্রাপ্ত অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, পাঁচপীর ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ নুরুল আমিন সরকার চাকুরির শুরুতে ওই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সহকারি অধ্যাপক হিসেবে যোগদান করেন। পরবর্তিতে ১৯৯৪ সালে তিনি অধ্যক্ষ হিসেবে নিয়োগ পান। অধ্যক্ষ পদে কর্মরত থাকা অবস্থায় গত ১৮ আগষ্ট ২০১৮ইং তারিখে তার ৬০ বছর পূর্ণ হয়। সে অনুযায়ী তার চাকুরির মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা।
কিন্তু বর্তমানেও ওই পদে বহাল থাকায় তার বিরুদ্ধে শিক্ষামন্ত্রলায়ের নীতিমালা ভঙ্গের অভিযোগ উঠেছে।
“শিক্ষামন্ত্রলায়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের স্মারক নং ৩৭.০০. ০০০০. ০৭৪.০৩০ .০০১. ২০১৭. ২৪৫ তারিখ ১২ জুন ২০১৮ ইং মোতাবেক রেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের (স্কুল ও কলেজ) জনবল কাঠামো ও এমপিও নীতিমালা ২০১৮ এর ১১.৬ ধারা অনুযায়ী বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক কর্মচারিদের বয়স ৬০ বছর পূর্ণ হবার পর কোন প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠান প্রধান/সহ প্রধান/ শিক্ষক কর্মচারিকে কোন অবস্থাতেই পূর্ন নিয়োগ কিংবা চুক্তি ভিত্তিক নিয়োগ দেয়া যাবে না।”
এই নীতিমালা জারির পূর্বে চতুর ওই অধ্যক্ষ নুরুল আমিন স্বপদে থাকার জন্য জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ২ বছরের জন্য পূনঃনিয়োগ পত্র নিয়ে আসেন। যা নীতিমালার পরিপন্থি। এই নীতিমালা অনুসরণ করে কলেজের গভর্নিং বডির দাতা সদস্য,বিদ্যুৎসাহী সদস্য অভিভাবক সহ স্থানীয় সচেতন ব্যক্তিবর্গ অধ্যক্ষকে দায়িত্ব হস্তান্তর করে তার পদ থেকে অব্যাহতির জন্য দাবি জানান।
এরপরও স্বপদে বহাল থাকায় ওই অধ্যক্ষর বিরুদ্ধে গভর্নিং বডির একাধিক সদস্যসহ অভিভাবকগন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের কলেজ পরিদর্শক, শিক্ষা মন্ত্রনালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষাসহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
এ ছাড়াও ওই পদের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে অধ্যক্ষকে উকিল নোটিশ দেয়া হয়েছে বলে অভিযোগে জানা যায়।
এ প্রসঙ্গে বিদ্যুৎসাহী সদস্য শামীম আহসান ও আশরাফুল ইসলাম বলেন, অধ্যক্ষ দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষার্থী ভর্তি ও ফরম পূরণে বোর্ড কর্তৃক নির্ধারিত ফিসের চেয়ে দ্বিগুন অর্থ আদায় করাসহ কলেজের বিভিন্ন ফান্ডের টাকা অনিয়ম ও দূর্নীতির মাধ্যমে আত্মসাৎ করে আসছেন।
গভর্নিং বডির সভাপতি সাবেক সংসদ সদস্য আমজাদ হোসেন তালুকদার জানান, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যক্ষ নিয়োগের জন্য গভর্নিং বডির মতামত চাইলে আমরা তাকে পূনঃ নিয়োগের পক্ষে সিদ্ধান্ত দিয়েছি।
অভিযোগ প্রসঙ্গে অধ্যক্ষ নুরুল আমিন সরকার বলেন, চাকুরি শেষ হওয়ার পূর্বে আমি পূনঃনিয়োগের জন্য জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদন করলে কর্তৃপক্ষ আমাকে ২ বছরের জন্য নিয়োগ প্রদান করেন।
জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার শামছুল আলম অভিযোগ পাওয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, বিষয়টি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিনে হওয়ায় সেখানে আমাদের হস্তক্ষেপের এখতিয়ার নেই।
গভর্নিং বডির একাধিক সদস্য, শিক্ষার্থী অভিভাবক, স্থানীয় ব্যক্তিবর্গ ও সচেতন মহল মনে করেন প্রতিষ্ঠানটির সার্বিক উন্নয়ন কল্পে এবং সুষ্ঠু তদন্ত পূর্বক প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়ার জোর দাবী জানান।
এবিএন/আব্দুল মালেক/গালিব/জসিম
এই বিভাগের আরো সংবাদ