আজকের শিরোনাম :

ঝালকাঠিতে চুরির অপবাদে যুবককে আটকে রেখে নির্যাতন

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ০৬ জানুয়ারি ২০১৯, ১৫:৪৫

ঝালকাঠির নলছিটিতে চুরির অপবাদে সেলিম বেপারী (২০) নামের এক যুবককে ইউনিয়ন পরিষদের একটি কক্ষে ২০ ঘন্টা আটকে রেখে সাবেক এক ইউপি সদস্য রাতভর নির্যাতন করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। আজ রবিবার সকাল ১১টায় পুলিশ গিয়ে উপজেলার নাচনমহল ইউনিয়ন পরিষদের একটি কক্ষ থেকে নির্যাতিত ওই যুবককে উদ্ধার করে। 

স্থানীয়রা জানায়, শুক্রবার রাতে নাচনমহল ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক সদস্য নান্না মিয়ার ভাই নজরুল ইসলাম চুন্নুর একটি ইঞ্জিন চালিত ট্রলার বিষখালী নদীর তীর থেকে চুরি হয়। রবিবার বিকেলে সদর উপজেলার দেউরী গ্রামে বিষখালী নদীর তীর থেকে ট্রলারটিসহ সেলিম বেপারী নামে এক যুবককে আটক করে নান্না মিয়া, তাঁর ভাই চুন্নু ও তাদের সহযোগিরা। 

যুবককে আটক করে লাঠি দিয়ে পিটিয়ে আহত করা হয়। পরে তাকে নাচনমহল ইউনিয়ন পরিষদের একটি কক্ষে আটকে রেখে রাতভর লোহার রড দিয়ে শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত করে জিজ্ঞাসাবাদ করেন তারা। এক পর্যায়ে জ্ঞান হারিয়ে ফেলে ওই যুবক। খবর পেয়ে নলছিটি থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আবদুল আজিজ কক্ষের তালা ভেঙে যুবককে উদ্ধার করে। আহত সেলিম বেপারী নলছিটি উপজেলার ভবানীপুর গ্রামের সুলতান বেপারীর ছেলে। 

আহত সেলিম বেপারী বলেন, আমি ট্রলার চুরি করেছি। আমার সঙ্গে অন্যকোন লোকচলি না। কিন্তুনান্না ও চুন্নু লোকজন নিয়ে আমাকে ধরে রাতভর লোহার রড দিয়ে মারধর করেছে। নির্যাতনের সময় আমাকে জিজ্ঞাসা করা হয়, কারা সঙ্গে ছিল। আমি একাই এ কাজ করেছি, তা কেউ বিশ্বাস করে না। আমার বুকে প্রচন্ড আঘাত লেগেছে। আমি গুরুতর অসুস্থ, তার পরেও আমাকে হাসপাতালে রাখা হয়নি। একটু চিকিৎসা দিয়ে পুলিশ থানায় নিয়ে আসে। 

তবে মারধরের কথা অস্বীকারে করে নান্না মিয়া বলেন, চুরি করার অপরাধে তাকে আটক করে ইউনিয়ন পরিষদে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। চেয়ারম্যানের নির্দেশেই তাকে এপরিষদের কটি কক্ষে রাখা হয়। রাতে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল, কারা তার সঙ্গে আছে। সে কারো নাম বলেনি। সকালে পুলিশ গিয়ে তাকে থানায় নিয়ে যায়। 

নাচনমহল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সিদ্দিকুর রহমান বলেন, চুরির সকল তথ্য প্রমানসহ এক যুবককে পরিষদে নিয়ে আসা হয়। আমি রাতে তাকে পরিষদেই রাখতে বলেছি। ছেলেটা নেশা করে মনে হয়। চুরির সঙ্গে জড়িত অন্য কারো নাম বলেনি সে। 

কিন্তু আমার বিশ্বাস এ ঘটনায় আরো লোকজন জড়িত। এই চক্রটি বের করার জন্য আমি অনেক চেষ্টা করেছি। পরে পুলিশ এসে তাকে থানায় নিয়ে যায়। আটক যুবকের বিরুদ্ধে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা করা হবে। 

নলছিটি থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আবদুল আজিজ জানান, সেলিমকে চিকিৎসা দিয়ে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। তার ব্যাপারে এখনো কোন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। 

নলছিটি থানার ওসি (তদন্ত) আব্দুল হালিম তালুকদার বলেন, আমরা রাতেই খবর পেয়েছি। তাকে পরিষদে রাখা হয়েছিল, সকালে গিয়ে পুলিশ নিয়ে আসে। আটক যুবকের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 


এবিএন/কায়কোবাদ তুফান/গালিব/জসিম
 

এই বিভাগের আরো সংবাদ