মির্জা আজমের স্বপ্নপূরণ
অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ০৪ জানুয়ারি ২০১৯, ১০:৩৭
জামালপুর-৩ (মেলান্দহ-মাদারগঞ্জ) আসনের নির্বাচিত এমপি আলহাজ মির্জা আজমের স্বপ্নপূরণ হয়েছে।
সর্বশেষ একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিপুল ভোটে বিজয়ী হওয়ার স্বপ্ন ছিল এক চ্যালেঞ্জ। বিপুল ভোটে বিজয়ী হবার স্বপ্নও পূরণ হয়েছে তাঁর।
এজন্য তিনি বিগত দিনের তুলনায় এবারই সবচেয়ে বেশি নির্বাচনী প্রচারণা চালিয়েছেন। নির্বাচনে কে আসবে-কে আসবে না, কী হবে-নাহবে এ নিয়ে মির্জা আজমের কোন পিছু টান ছিল না। সকাল ৮ টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত তিনি মাঠ চষে বেড়াচ্ছিলেন।
এরপরও তিনি জেলার আরো ৪টি আসনের আ.লীগ প্রার্থীদের পক্ষে নির্বাচনী প্রচারণার সাথে যুক্ত ছিলেন। জেলা-উপজেলা এমনকি ইউনিয়ন পর্যায়ে দলীয় কার্যালয়ে নিয়মিত হাজির থাকতেন। এতেই শেষ নয়; নির্বাচনের এক সপ্তাহ আগে তিনি জেলার দলীয় কার্যালয়ে বিভিন্ন দল থেকে আগতদের নিয়মিত যোগদানের অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকতে দেখা গেছে।
মির্জা আজম আরো ৫বার এমপি নির্বাচিত হয়েছিলেন। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে তিনি বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়ে পাট ও বস্ত্র প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছেন। মির্জা আজমের স্বপ্ন ছিল তিনি মন্ত্রীত্ব পাবেন। এই মন্ত্রীত্ব পাবার বিষয়ে তাঁর নির্বাচনী এলাকার জনগণেরও একই দাবিতে স্বোচ্ছার ছিলেন। ছাত্রলীগের নেতৃত্বের পরপরই তিনি দেশের সর্বকনিষ্ঠ এবং আনমেরিটএমপি নির্বাচিত হন।
তৎকালিন ক্ষমতাসিন দল বিএনপির মহাসচিব-স্থানীয় সরকার-পল্লীউন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী ব্যরিস্টার আ: সালাম তালুকদারের বিরুদ্ধে পার্লামেন্টে কথা বলার মধ্যদিয়ে সারাদেশে পরিচিতি লাভ করেন। পার্লামেন্টে মির্জা আজমের কথা বলার পরপরই সালাম তালুকদারের নির্বাচনী এলাকা সরিষাবাড়েতেও এর প্রভাব পড়ে। ফলে আ.লীগ মনোনীত মাও. নূরুল ইসলামের কাছে সালাম তালুকদার হেরে যান। এর কিছুদিন পরেই সালাম তালুকদার মারা যান।
আ.লীগের বিশ্বস্ত এবং মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অত্যন্ত আস্থাভাজন তরুণ নেতা হিসেবে মির্জা আজম সবার নজর কাড়েন। সেই সুবাদে তিনি যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক-বিরোধী দলীয় হুইপ পরে সরকার দলীয় হুইপ মনোনীত হন। কেন্দ্রীয় আ’লীগের সদস্য নির্বাচিত হন। বিশেষ করে যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হবার পর মির্জা আজম দাপটের সাথে সারাদেশে সাংগঠনিক কার্যক্রম জোরদার করেন।
নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মির্জা আজমের নির্বাচনী এলাকায় প্রবেশ করতে নাপারলেও বিপুল ভোটে বিজয়ী হয়ে ইতিহাস গড়েছেন। ওই সময় তিনি বেশ ক’টি হত্যা মামলার আসামী হয়েছিলেন। পরে তিনি মামলা থেকে বেকসুর খালাস পান। যারা মির্জা আজমের গতিরোধ করতে পিছু লাগছিলেন। নিজেদের ভুল স্বীকার করে একাদশ সংসদ নির্বাচনে তারাও মির্জা আজমের সাথে একাট্রা হয়ে কাজ করছেন।
সেই সময়েও মির্জা আজমের প্রভাব-পরিচিতি গোটাদেশেই ছড়িয়ে পড়ে। মির্জা আজমের নেতৃত্বের মধ্যদিয়ে আ.লীগের অসংখ্য রাজনৈতিক ভক্তের সৃষ্টি হয়।
দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন শেষে সরকার গঠনের পরপরপই বিডিআর বিদ্রোহে মির্জা আজম-নানককে পিলখানায় পাঠান শেখ হাসিনা। পিলখানার বিডিআর বিদ্রোহের সময় গুলাগুলির মুখে মির্জা আজম সাদা পতাকা হাতে নিয়ে পিলখানায় প্রবেশ করে শেখ হাসিনার পক্ষে বিডিআরদের শান্ত থাকার আহবান জানালে মুহুর্তেই পরিস্থিতি শান্ত হয়। কিন্ত ততক্ষণে বহু অফিসারের প্রাণহানি ঘটেছে। বাদ যায় নি সেনা পরিবারের লোকজনও। তখন মির্জা আজমের নাম আন্তর্জাতিক মহলে আলোচিত হয়।
বিশ্ব মিডিয়ায় প্রধান শিরোনাম হন আজম-নানক। পরিস্থিতি শান্ত হবার কিছুদিন পর মির্জা আজমকে পাট বস্ত্র প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব দেয়া হয়। প্রতিমন্ত্রী হয়ে অনুন্নত পাট বস্ত্র খাতকে অগ্রসর করেন। দেশে-বিদেশে পাট ও পাট পণ্যের চাহিদা বৃদ্ধি করেছেন। সোনালী আঁশ কৃষকের পাট গলার ফাসের অভিশাপ ঘোচাতে সক্ষম হন। এবারও মির্জা আজম নির্বাচিত হবার পর মনে করছিলেন-পূর্ণ মন্ত্রীত্ব পাবেন। মির্জা আজমের ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটার পথও সুগম হয়েছে। আজ শপথ গ্রহণ করলেন। হয়ত মির্জা আজমের শেষ ইচ্ছা পূর্ণ মন্ত্রীত্বের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র।
এবার মন্ত্রী হলে তিনি জামালপুর জেলাকে বাংলাদেশের মধ্যে সর্বপ্রথম মডেল জেলা হিসেবে উন্নীত করবেন বলে নির্বাচনী প্রচারণায় বলে আসছিলেন।
জামালপুরবাসি মির্জা আজমের স্বপ্ন পূরণে পাশে থাকার প্রত্যাশাও পেতে শুরু করেছেন। লেখক-ইত্তেফাক সংবাদদাতা, সভাপতি মেলান্দহ রিপোর্টার্স ইউনিটি, জামালপুর ও কার্যনির্বাহী সদস্য জামালপুর জেলা প্রেসক্লাব।
এবিএন/মো. শাহ্ জামাল/গালিব/জসিম
এবিএন/মো. শাহ্ জামাল/গালিব/জসিম
এই বিভাগের আরো সংবাদ