তেঁতুলিয়ায় মাকে পুকুরে ফেলে দিলো সন্তান!
অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ২৬ মে ২০১৮, ১৩:৪৫
পঞ্চগড়, ২৬ মে, এবিনিউজ : পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় শতবর্ষী এক বৃদ্ধা মাকে তার নিজের একমাত্র গর্ভধারী সন্তান বাড়ি থেকে বের করে পুকুর পাড়ে ময়লা স্তুপে ফেলে দিলেন। বৃদ্ধা মা বয়সের ভারে চলতে ফিরতে পারছেন না, একই স্থানে খাওয়া-দাওয়া, ঘুমানো এবং মলত্যাগ তাই বৌয়ের কথায় ময়লার স্তুপে মায়ের স্থান।
মায়ের এক ধার দুধের দাম, কাটিয়া গায়ের চাম, পাপস বানাইলেও ঋণ শোধ হবে না। অথচ শতবর্ষী অসুস্থ এক গর্ভধারীণীর ঋণ তার ছেলে ও ছেলে-বৌ শোধ করছে তাকে পুকুর পারে ময়লার স্তুপে ফেলে দিয়ে। আর চিকিৎসা তো দূরের কথা যে মা ১০ মাস সন্তানকে গর্ভে ধরেছেন, স্তন্য পান করিয়ে বড় করেছেন, সন্তানের সুখের জন্য নিজের সব সুখ বিসর্জন দিয়েছেন- তার এমন দুর্দশার চিত্র দেখা গেছে পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলায়।
বাড়ির পাশে পুকুর পারে ময়লার স্তুপে পড়ে থাকা বৃদ্ধার কান্না-কাটি আর আকুতি দেখে এলাকাবাসী তার সন্তানকে মাকে ঘরে তুলে নেওয়ার কথা বল্লে সে কথা না রেখে প্রতিবেশীদের বলেন “ওই বুড়িকে নদীতে ফেলে দাও”।
এলাকাবাসী বৃদ্ধার এমন দূর অবস্থা দেখে সন্তানের বাড়ির পাশে সেই পুকুর পারের ময়লার স্তুপে প্লাস্টিক আর ছেড়া বস্তা দিয়ে এক ছোট ছালা তেরি করে দেয়। বাড়ি থেকে বের করে দেওয়ার ঘটনার ১৫ দিন অতিবাহীত হলে আমাদের প্রতিবেদকের দৃষ্টিগুচর হয়।
গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় তেঁতুলিয়া উপজেলার দেবনগর ইউনিয়নের ভজনপুর নিজবাড়ি গ্রামে দেখা মিলে এই অমানবিক দৃশ্যটি। দেখা যায় বাড়ি থেকে ১৫ গজ দূরে ছোট ছালার কুটির ভিতরে আকুতি আর আহাজারি করছেন শতবর্ষী বৃদ্ধা নেজামন। স্বামী মৃত সেকেত আলী। তার একমাত্র সন্তান নিজামদ্দীন (নাজিম)।
দেখা গেছে, নিজামদ্দীনের পাকা দালান বাড়ির ৫টি রুম। সেখান থেকে তার কপালে জুটেনি একটিও রুম। বাড়ি থেকে ১৫ গজ দূরে ঝড়-বৃষ্টি আর মশার কামুর ও খেয়ে না খেয়ে সন্তানের চোখের সামনে দিনের পর দিন মৃত্যুর প্রহর গুণছেন নেজামন। গায়ে জ্বর, চোখেও দেখতে পান না। শুধুমাত্র কয়েকটি কাঠের তক্তার উপর একটি বস্ত্রনিয়ে কোন মতে ঠেসদিয়ে বসে রয়েছেন।
মানুষের উপস্থিতি টের পেয়ে কান্না আর আহাজারীতে বার বার বলছেন আমার আর এই কষ্ট সজ্য হয় না। প্রতিবেশী মৃত বীরমুক্তিযোদ্ধা ছলিমদ্দীনের স্ত্রী শাহারা খাতুন সেই বৃদ্ধার কিছুটা দেখভাল করছেন।
বৃদ্ধার সন্তান নিজামদ্দীনের সাথে কথা বল্লে তিনি জানান, ওই বুড়ির সব-সময় কেন কেন আর কান্না আমার ভালো লাগে না।
এলাকাবাসী সপিজুল হক, সলেমান আলী ও সপিকুল ইসলাম জানান, বৃদ্ধা নেজামনের এই অবস্থার কোন কিছু না করা হলে ভবিষ্যতে আমাদের ছেলে মেয়েরা তা দেখে আমাদের সাথে এমনটা করতে পারে। তাই প্রশাসনের পক্ষ থেকে এর একটা সঠিক ব্যবস্থার দাবি জানাচ্ছি।
তেঁতুলিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সানিউল ফেরদৌসের সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি এলাকাবাসীর মাধ্যমে একটি অভিযোগ দাখিলের কথা বলেন। এ বিষয়ে পঞ্চগড় জেলা প্রশাষক জহুরুল হক জানান, বিষয়টি খুবই মর্মান্তিক ও দুঃখজনক। আমি ইউনিয়ন চেয়ারম্যান ও ইউএনওর সাথে কথা বলে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। এরপর বিষয়টি জানা জানি হলে, গতকাল শুক্রবার দিবাগত রাতে দু'ঘন্টার ব্যবধানে ভজনপুর নিজবাড়ি গ্রামে দ্রুত ছুটে যান তেঁতুলিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান রেজাউল করিম শাহিন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সানিউল ফেরদৌস, উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান সুলতানা রাজিয়া, তেঁতুলিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জহুরুল ইসলাম, দেবনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মহসিন আলীসহ ইউপি সদস্যরা। পরে প্রশাসনের হস্তক্ষেপে বাড়িতে জাইগা হয় বৃদ্ধা নেজামনের। তবে প্রশাসনের উপস্থিতি টের পেয়ে বাড়ি থেকে পালিয়ে যায় ছেলে নিজামদ্দীন। এমন অমানবিক ঘটনায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ওই পরিবারের স্বামী-স্ত্রীকে আইনের আওতায় নেওয়ার আগে এলাকাবাসীর অনুরোধে প্রথমবারের মত তাদের ছেড়ে দেন। এবং বৃদ্ধা নেজামনকে বাড়ির একটি কক্ষে জায়গা করে দেন। এসময় উপজেলা পরিষদের পক্ষ থেকে ওই বৃদ্ধার জন্য সুকনো খাবার, পরণের বস্ত্র, তেল-চাল-ডালসহ নানা সামগ্রী তুলে দেন। এবং একই সাথে উপজেলা চেয়ারম্যান ওই বৃদ্ধার পরিবারকে আগামী রবিবারের মধ্যে একটি ঘর নির্মাণের জন্য টিন ও অর্থ বরাদ্দের প্রতিশ্রতি দেন। নির্বাহী কর্মকর্তা, ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্যদের জানান, ওই পরিবারের পক্ষ থেকে একটি প্লডে জমি দেওয়া হলে সরকারি বরাদ্দে ১টি বাড়ি নির্মাণ করে দেওয়া হবে। দ্রুত অসুস্থ বৃদ্ধা মহিলাটিকে চিকিৎসার জন্য উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়ার পরামর্শ দেন। এবিএন/ডিজার হোসেন বাদশা/জসিম/এমসি
তেঁতুলিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সানিউল ফেরদৌসের সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি এলাকাবাসীর মাধ্যমে একটি অভিযোগ দাখিলের কথা বলেন। এ বিষয়ে পঞ্চগড় জেলা প্রশাষক জহুরুল হক জানান, বিষয়টি খুবই মর্মান্তিক ও দুঃখজনক। আমি ইউনিয়ন চেয়ারম্যান ও ইউএনওর সাথে কথা বলে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। এরপর বিষয়টি জানা জানি হলে, গতকাল শুক্রবার দিবাগত রাতে দু'ঘন্টার ব্যবধানে ভজনপুর নিজবাড়ি গ্রামে দ্রুত ছুটে যান তেঁতুলিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান রেজাউল করিম শাহিন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সানিউল ফেরদৌস, উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান সুলতানা রাজিয়া, তেঁতুলিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জহুরুল ইসলাম, দেবনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মহসিন আলীসহ ইউপি সদস্যরা। পরে প্রশাসনের হস্তক্ষেপে বাড়িতে জাইগা হয় বৃদ্ধা নেজামনের। তবে প্রশাসনের উপস্থিতি টের পেয়ে বাড়ি থেকে পালিয়ে যায় ছেলে নিজামদ্দীন। এমন অমানবিক ঘটনায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ওই পরিবারের স্বামী-স্ত্রীকে আইনের আওতায় নেওয়ার আগে এলাকাবাসীর অনুরোধে প্রথমবারের মত তাদের ছেড়ে দেন। এবং বৃদ্ধা নেজামনকে বাড়ির একটি কক্ষে জায়গা করে দেন। এসময় উপজেলা পরিষদের পক্ষ থেকে ওই বৃদ্ধার জন্য সুকনো খাবার, পরণের বস্ত্র, তেল-চাল-ডালসহ নানা সামগ্রী তুলে দেন। এবং একই সাথে উপজেলা চেয়ারম্যান ওই বৃদ্ধার পরিবারকে আগামী রবিবারের মধ্যে একটি ঘর নির্মাণের জন্য টিন ও অর্থ বরাদ্দের প্রতিশ্রতি দেন। নির্বাহী কর্মকর্তা, ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্যদের জানান, ওই পরিবারের পক্ষ থেকে একটি প্লডে জমি দেওয়া হলে সরকারি বরাদ্দে ১টি বাড়ি নির্মাণ করে দেওয়া হবে। দ্রুত অসুস্থ বৃদ্ধা মহিলাটিকে চিকিৎসার জন্য উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়ার পরামর্শ দেন। এবিএন/ডিজার হোসেন বাদশা/জসিম/এমসি
এই বিভাগের আরো সংবাদ