আজকের শিরোনাম :

অভয়নগরে কনকনে শীতে শিশুরা ডায়রিয়া ও ব্রক্কিউলাইটিসে আক্রান্ত হচ্ছে

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ২৪ ডিসেম্বর ২০১৮, ১১:২১

বৈরি আবহাওয়া ও কনকনে শীতের কারণে অভয়নগরের শিশুরা ডায়রিয়া ও ব্রক্কিউলাইটিস রোগে আক্রা›ত হচ্ছে। 

গত দুই দিনে উপজেলার তিন শতাধিক শিশু ডায়রিয়া ও ব্রক্কিউলাইটিস রোগে আক্রা›ত হয়েছে। এর মধ্যে অভয়নগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেই চিকিৎসা নিয়েছে প্রায় দুই শত রোগী। অন্যান্যরা ডাক্তারদের প্রাইভেট চেম্বার, শিশু ক্লিনিকসহ গ্রাম্য ডাক্তারদের স্মরণাপন্ন হয়েছে। 

তবে এ আবহাওয়ায় সবচেয়ে বেশি শিশু আক্রান্ত হচ্ছে ডায়রিয়। অভয়নগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে এমনটিই জানা গেছে । উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ বিবিভন্ন প্রাইভেট কিøনিকে শিশু রোগীর সংখ্যা বাড়তে শুরু করেছে।

গত তিনদিনে প্রায় তিনশতাধিক রোগীর সেবা প্রদানসহ মারাত্মক অসুস্থ রোগীদের ভর্তি করা হয়েছে। তাদেরকে প্রতিনিয়ত চিকিৎসকদের পরামর্শ ও ঔষধ প্রদান করা হচ্ছে। 

গতকাল রবিবার সকালে অভয়নগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে দেখা গেছে, গত দুই দিনের তীব্র শীতের প্রকোপে নিউমোনিয়া, ডায়রিয়া ও শ্বাসকষ্ট জনিত রোগে আক্রান্ত কয়েকজন শিশু রোগী চিকিৎসাধীন তিন মাসের শিশু ছায়াতের পিতা উপজেলার শুভরাড়া ইউনিয়নের লেবুগাতী গ্রামের মাসুদুর রহমান বলেন, দুইদিনের শীতে তার ছেলেটি অসুস্থ হয়ে পড়লে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে আসেন। শিশু ডাক্তার দেখে ছায়াতকে ভর্তি করতে বলেন। চিকিৎসা সেবা দেয়ার পর এখন আগের থেকে অনেক সুস্থ আছেন তার সন্তান। প্রয়োজন মত ঔষধও পাচ্ছেন তিনি। পাশের বেডে ডায়রিয়ার আক্রান্ত ১৭মাস বয়সি ইরজানের পিতা উপজেলা শংকরপাশা গ্রামের সুমন বিশ্বাস বলেন, ১৭ তারিখে বৃষ্টির পর তার শিশুর বমি শুরু হয়,পরে বমি ও পায়খানা একসাথে।

এ অবস্থায় দ্রুত উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসলে ডাক্তার ভর্তি করতে বলেন। এখন আগের থেকে অনেক ভালো আছে তার সন্তান। হাসপাতালের দ্বিতীয় তলায় নেবুলাইজার মেশিন লাগিয়ে নওয়াপাড়া পৌড়সভার বুইকারা গ্রামের ইমরানের শ্বাসকষ্ট নিবারনের চেষ্টা করছিলেন ২ বছর বয়সি শিশু ইমরানের পিতা আব্বাস আলী। 

তিনি জানালেন, শীতের প্রকোপে তার শিশুর শ্বাসকষ্ট বেড়ে যাওয়ায় হাসপাতালের নেবুলাইজার ব্যবহার করতে হয়েছে। বিনামূল্যে এ সেবা পেয়ে তিনি সন্তুষ্টী প্রকাশ করেন।

এ ছাড়া ৮ থেকে ১০ জন শিশু রোগীকে রিলিজ দেয়া হয়েছে বলে কর্তৃপক্ষ জানায়। অধিকাংশ শিশুই শীত জনিত রোগে আক্রান্ত ছিল বলে কর্তব্যরত চিকিৎসক জানায়। কথা হয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের শিশু বিশেষগ্য ডাক্তার মারুফুজ্জামানের সাথে, তিনি বলেন শীতের প্রকোপ বৃদ্ধি পাওয়ার প্রতিদিন প্রায় একশত রোগী দেখতে হচ্ছে। 

বৈরি আবহাওয়ার কারণে শিশুদের হঠাৎ রোটা ভাইরাস, ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়ার প্রকোপ দেখা দিয়েছে। এ বিষয়ে তিনি  পিতা-মাতাসহ পরিবারের প্রতি শিশুদের ঠান্ডা কে এড়িয়ে চলা ,শীতের পোষাক পরিধান, ধুলা-বালু ও ধোয়া থেকে দুরে রাখতে পরামর্শ প্রদান করেন।

প্রয়োজনে নিকটস্থ চিকিৎসকের নিকট রোগীকে নিয়ে যেতে বলেন। তিনি আরও জানান, বর্তমানে এ হাসপাতালে রোগীদের উন্নত সেবা প্রদানের লক্ষ্যে বিনামূল্যে গায়ে পুশ সেলাইন , খাবার সেলাইন ও কট্রিম সিরাপ, মেট্রোনিডাজল সিরাপ, প্যারাসিটামল সিরাপসহ বিভিন্ন ঔষুধ সরবাহ করা হয়ে থাকে। পাশাপাশি শিশু-বৃদ্ধসহ শ্বাসকষ্ট জনিত রোগীদের জন্য অক্সিজেন নেবুলাইজার স্যাকার মেশিনে ফ্রি সেবা প্রদান করা হচ্ছে।

এ ব্যাপারে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকতা মনজুরুল মুরশীদ বলেন, প্রতিদিন প্রায় একশত শিশু রোগীর চিকিৎসা পত্র দেয়া হচ্ছে শিশু বিভাগ থেকে। এর মধ্যে ঝুঁকিপূর্ণ রোগীদের ভর্তি করা হচ্ছে এবং তাদেরকে যথাযথ চিকিংসা সেবা প্রদান করা হচ্ছে।  

এবিএন/মো: সেলিম হোসেন/গালিব/জসিম
 

এই বিভাগের আরো সংবাদ