নাসিরনগরে বিএনপি প্রার্থীর সংবাদ সম্মেলন

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ২১ ডিসেম্বর ২০১৮, ১৪:০৮

ব্রাহ্মণবাড়িয়া- ১ সংসদীয় ২৪৩ নাসিরনগর আসনের বিএনপি ও জাতীয় ঐক্যফন্ট্র মনোনীত ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী জনাব আলহাজ সৈয়দ এ কে  একরামুজ্জামান (সুখন) সংবাদ সম্মেলন করেছেন। 

২১ ডিসেম্বর ২০১৮ রোজ শুক্রবার সকাল ১১ ঘটিকার সময় ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগর প্রেসক্লাবে তিনি এ সংবাদ সম্মেলন করেন। 

এ সময় তার সাথে ছিলেন সাবেক সংসদ সদস্য সৈয়দ শাফি মাহমুদ, উপজেলা বিএনপির সহ-সভাপতি  মোঃ ওমরাও খান, সাধারণ সম্পাদক এম এ হান্নান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোঃ আজিজুর রহমান চৌধুরী। এ সময় তিনি সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন। 

সংবাদ সম্মেলনে একরামুজ্জামান প্রশাসন ও ক্ষমতাসীন দলের প্রাথীর্র বিমাতাসূলভ আচরণের  বিষয়ে বিভিন্ন অভিযোগ সাংবাদিকদের সামনে তুলে ধরেন । এ সমস্ত অভিযোগ মিডিয়ার মাধ্যমে প্রকাশ করে দেশ বাসীকে অবগত করতে সাংবাদিকদের অনুরোধ করেন তিনি। 

সংবাদ সম্মেলনে  একরামুজ্জামান বলেন ২০ দলীয় জোট ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের মনোনীত প্রার্থী হিসেবে ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে আমি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্ধিতা করছি। 

১১ ডিসেম্বর থেকে আমি আমার নেতাকর্মী ও সমর্থকগণ নির্বাচন কমিশন ঘোষিত ও নির্দেশিত আচরণ বিধি সঠিকভাবে মেনে প্রচারনা করে আসছি। 

তিনি বলেন, আমার মূল প্রতিদ্বন্ধী আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী বিএম ফরহাদ হোসেন সংগ্রাম নিজে ও তার সমর্থক নেতাকর্মীরা কোন প্রকার নিয়ম নীতি বা নির্বাচন কমিশন কর্তৃক নির্দেশিত আচরণ বিধির প্রতি সম্মান প্রদর্শন না করে অব্যাহত ভাবে আচরণ বিধি লঙ্গন করে চলছে।  


তিনি অভিযোগ করে বলেন ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থী আচরণ বিধি লঙ্গন করে নাসিরনগরের প্রবেশদ্বার আশুতোষ পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠের দক্ষিণ পাশে বিশাল প্যান্ডেল তৈরী করে প্রধান নির্বাচনী ক্যাম্প স্থাপন করেন। 

তা ছাড়াও নাসিরনগর মাধবপুর রাস্তার নূরপুরে, গুনিয়াউক-হরিপুর রাস্তার গেদু মিয়ার বাড়ীর নিকট সহ উপজেলার বিভিন্ন স্থানে তোরণ নির্মাণ করেছে।  মোটর সাইকেল শোভাযাত্রা সহ প্রচারাভিযানে বিধি নিষেধ থাকা স্বত্বেও আওয়ামী লীগ প্রার্থী বেপোরায়াভাবে নিয়মিত মোটর সাইকেল শোভা যাত্রা চালিয়ে যাচ্ছে। 

একরামুজ্জামান দুঃখ প্রকাশ করে বলেন যে, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও সিইসি মহোদয় লেভেল প্লেইং ফিল্ড সৃষ্টির আশ্বাস দিলেও নৌকার প্রার্থী নিজে, তার কর্মী সমর্থক ও কতিপয় পুলিশ সদস্য অব্যাহতভাবে আমার নেতাকর্মী ও ভোটাদেরকে নানাভাবে হুমকি প্রদান ও গ্রেপ্তারসহ  আতংকগ্রস্থ করে চলেছে। 

একরামুজ্জামান বলেন  ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থী নিজে  তাহার বক্তৃতা বিবৃতিতে প্রতিনিয়ত আমার কর্মী সমর্থকদের হুমকি প্রদান করে আসছেন। যাহার প্রমান ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থী বিভিন্ন ইউনিয়নের সভা সহ উঠান বৈঠকের বক্তব্য শুনে প্রমাণ পাওয়া যাবে। 

একরামুজ্জামান অভিযোগ করে বলেন পুলিশের ছত্র ছায়ায়  কতিপয় হেলমেট বাহিনী নিয়ে প্রতি রাতেই কোন না কোন গ্রামে গিয়ে বিএনপি নেতাকর্মীদের হুমকি প্রধান সহ শারীরিকভাবে অত্যাচার নির্যাতন চালিয়ে যাচ্ছে। তিনি আরো বলেন ১৪ ডিসেম্বর রাতে গোয়ালনগর ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেমের বাড়ীতে পুলিশী অভিযান চালিয়ে তাকে শারীরিকভাবে  মারপিট করে আহত করে। তার ঘরের জিনিসপত্র তছনছ করে ফেলে। তার বসত ঘরের তোষকের নীচ থেকে নগদ ৬৩ হাজার টাকা কতিপয় দুর্বৃত্ত নিয়ে যায় এবং তাকে ক্রস ফায়ারের ভয় দেখিয়ে ইউনিয়ন সভা না করার নির্দেশ দেয়। একই ইউনিয়নের বিএনপির সভাপতি বৃদ্ধ হাজী তারেক মিয়াকে এলাকা ত্যাগের নির্দেশ দেন। নইলে  জেল হাজতের প্রেরণের ভয় দেখায়। 

তা ছাড়াও ভলাকুট ইউনিয়নের খাগালিয়া গ্রামে কুন্ডা ইউনিয়নের  তুল্লা পাড়া গ্রামের বাহার মিয়া, ফান্দাউক ইউনিয়নের আতুকোড়া গ্রামের বাজারে নিরীহ ভোটারদেরকে মারপিট করার হুমকিতে এলাকায় আতংক বিরাজ করছে। 

একরামুজ্জামান আরও  অভিযোগ  করে বলেন  ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থী খুনের মামলাসহ বিভিন্ন মামলার  গ্রেপ্তারী পরোয়ানা ভূক্ত আসামীদের নিয়ে নির্বাচনী প্রচার প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছে। অথচ আমার দলের নিরপরাধ নেতা কর্মীদের  গ্রেপ্তার করে গায়েবী মামলার আসামী করে জেল হাজতে  প্রেরণ করছে। তিনি বলেন, ১৮ ডিসেম্বর রাতে জাসাস আহবায়ক মোঃ সাখায়াত হোসেন ভূইয়া ও ১৯ ডিসেম্বর  রাতে  গুটমা গ্রামের ইউপি সদস্য  মজিবুর রহমান মজুকে তার নিজ বাড়ী হতে গ্রেপ্তার করে আগষ্ট মাসের গায়েবী মামলার আসামী করে উভয়কে জেল হাজতে প্রেরণ করে। 

এ ছাড়া তিনি আরও বলেন আমার ধানের শীষ প্রতীকের গণজোয়ার দেখে ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থী ও তার নেতাকর্মীরা পরিকল্পিতভাবে বিভিন্ন স্থানে অব্যাহতভাবে শারীরিক নির্যাতন চালিয়ে যাচ্ছে। ২০ ডিসেম্বর বেলা ২ ঘটিকার সময়  উপজেলা যুব দলের ১ম যুগ্ম আহবায়ক এডঃ মোঃ ইয়াছিন পাঠানকে  নাসিরনগর কলেজ মোড়ে আল মদিনা হোটেলের সামনে তার সাঙ্গ পাঙ্গরা মারপিট করে। 

১০ ডিসেম্বর  চাপরতলা গ্রামে আমার দলের কিছু নেতাকর্মীকে ই্উনিয়ন আ্ওয়ামীলীগ সভাপতি সুরুজ আলী তার বাড়ীর পাশ দিয়ে উঠান বৈঠকে যাওয়ার সময় পূর্ব পরিকল্পিত ভাবে  মারপিট করে আহত করে। এই ঘটনায় উল্টো সুরুজ আলী বাদী হয়ে বর্তমান চেয়ারম্যান ফয়েজ উদ্দিন ভূইয়া সহ কয়েক জনের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়ের করে।

একরামুজ্জামান জাতির এ ক্রান্তিলগ্নে ভোটের অধিকার রক্ষা ও গণতান্তিক পরিবেশ ফিরিয়ে এনে একটি অবাধ সুষ্ট ও  নিরপেক্ষ নির্বাচন করার লক্ষ্যে মাননীয় প্রধান  মন্ত্রী, সিইসি, রিটার্নিং অফিসারসহ নির্বাচন সংস্লিষ্ট সকল কর্মকর্তাগণকে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ ও আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়ার জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ করেন। 

সাংবাদকিদের উদ্দেশ্যে একটি অবাধ, সুষ্ট ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের লক্ষ্যে লিখুনির মাধ্যমে জাতির প্রত্যাশিত ভূমিকা পালন করার জন্য অনুরোধ করেন একরামুজ্জামান।  

এবিএন/মোঃ আব্দুল হান্নান/গালিব/জসিম
 

এই বিভাগের আরো সংবাদ