আজকের শিরোনাম :

চট্টগ্রামের ১৬টি সংসদীয় আসনের প্রার্থীদের সাথে রিটার্নিং কর্মকর্তাদের মতবিনিময়

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ১৭ ডিসেম্বর ২০১৮, ২১:৩৩

চট্টগ্রামের ১৬টি সংসদীয় আসনের প্রার্থীদের সাথে পৃথক দুটি স্থানে পৃথকভাবে মতবিনিময় করেছে চট্টগ্রামের নির্বাচনী দায়িত্বপ্রাপ্ত রিটার্নিং কর্মকর্তারা।

আজ সোমবার সকালে চট্টগ্রাম আদালত ভবনে রিটানিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক ইলিয়াছ হোসেন জেলার ১০টি আসনের প্রার্থীদের সাথে এবং সার্কিট হাউজে বিভাগীয় কমিশনার ও রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. আবদুল মান্নান নগরের ৬টি আসনের প্রার্থীদের সাথে মত বিনিময় করেন।

চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজে চট্টগ্রাম-৪ (সীতাকুণ্ড-কাট্টলী), চট্টগ্রাম-৫ (হাটহাজারী), চট্টগ্রাম-৮ (বোয়ালখালী-চান্দগাঁও), চট্টগ্রাম-৯ (কোতোয়ালী-বাকলিয়া), চট্টগ্রাম-১০ (ডবলমুরিং-হালিশহর) এবং চট্টগ্রাম-১১ (বন্দর-পতেঙ্গা) আসনের প্রার্থীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেছেন দায়িত্বপ্রাপ্ত রিটার্নিং কর্মকর্তা বিভাগীয় কমিশনার। বাকি ১০টি আসনের প্রার্থীদের সঙ্গে নিজ কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে মতবিনিময় করেছেন জেলা প্রশাসক।

মতবিনিময়কালে বিএনপি প্রার্থীরা প্রশাসনের সমালোচনা করে অভিযোগ তুলেন, চট্টগ্রামের বিভিন্ন নির্বাচনী এলাকায় তাদের জনসংযোগে হামলা করা হচ্ছে, ছিড়ে ফেলা হচ্ছে পোস্টার, ব্যানার। এছাড়া সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ছাড়া নেতা কর্মীদের হয়রানি ও গ্রেফতারের অভিযোগ তুলে নগরীর বিভিন্ন থানার পুলিশ কর্মকর্তাদের রদবদল করার প্রস্তাব রাখে প্রশাসনের কাছে।
অন্যদিকে আওয়ামীলীগ প্রাথীরা চট্টগ্রামে নির্বাচনী পরিবেশ উৎসব মুখর দাবী করেন। তবে ২০১৪ সালের মত কেউ যাতে জ্বালাও পোড়াও করতে না পারে সেদিকে প্রশাসনকে নজর রাখার আহবান জানান। নির্বাচনে সুন্দর পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে উল্লেখ করেন স্বতন্ত্র প্রার্থীসহ অন্যান্য প্রার্থীরাও। তারাও নির্বাচন সুষ্ঠু করতে রিটার্নিং কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্টদের বিভিন্ন পরামর্শ দিয়েছেন।

পৃথক দুটি মত বিনিয়ম সভায় বক্তব্য দেন আওয়ামীলীগের মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, বিএনপির আব্দুল্লাহ আল নোমান, আমীল খসরু মাহমুদ চৌধুরী, চট্টগ্রাম ৮ আসনের মহাজোট প্রার্থী মাঈন উদ্দিন খান বাদলসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রার্থীরা।

নগরীর ছয়টি আসনের প্রার্থীদের নিয়ে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজে অনুষ্ঠিত বিভাগীয় কমিশনার ও রিটার্নিং কর্মকর্তার মতবিনিময়কালে পুলিশ ও স্থানীয় প্রশাসনের ভূমিকার সমালোচনা করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, পুলিশ কোন কারণ ছাড়াই বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের হয়রানি করছে, গ্রেফতার করছে। বাড়ি থেকে বিএনপি নেতাকর্মী, সমর্থক এমনকি এজেন্টদেরও গ্রেফতার করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। প্রার্থীদের প্রচারণার আগে-পরে বিভিন্ন এলাকায় তাণ্ডবের অভিযোগ করলেও প্রশাসন নিরব ভুমিকা পালন করছে উল্টো নির্বাচনী প্রচারণায় পুলিশ ভিডিও করছে অতচ আওয়ামী লীগের কেউ গ্রেফতার হচ্ছে না। তাদের সকল বিষয়ে প্রশাসনের ভুমিকায় সন্দেহ পোষণ করে ডবলমুরিং-হালিশহর আসনের বিএনপির প্রার্থী আবদুল্লাহ আল নোমান বলেন, নির্বাচনে ভোট দেওয়া নিয়ে মানুষের মধ্যে শঙ্কা ছড়িয়ে পড়ছে। সময় থাকতে পুলিশে একটু অদল-বদল করার আহবান জানান তিনি।

একই মতবিনিময় সভায় চট্টগ্রাম ৯ (কোতোয়ালি) আসনের নৌকার প্রার্থী ও আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল ইভিএম নিয়ে নারী ভোটারদের মধ্যে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে বলে দাবি করেন। এছাড়া ভোটারদের মনে ‘ভয়ের আবহ’ থাকার নেপথ্যে ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের দিন চলা বিএনপি-জামায়াতের তাণ্ডব ও ‘আগুন সন্ত্রাসকে’ দায়ী করেন। বিএনপি প্রার্থীরা এ বক্তব্যে আপত্তি জানালে বিভাগীয় কমিশনার নওফেলকে অন্য প্রসঙ্গে কথা বলতে বলেন।

বিভাগীয় কমিশনার আব্দুল মান্নান বলেন, চট্টগ্রামে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের মধ্যে পারিবারিক ও আত্মীয়তার বন্ধন আছে। আইন শৃঙ্খলা রক্ষার জন্য এটা সহায়ক। “আশাকরি শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান থাকবে। প্রার্থীরা যাতে নির্বিঘেœ গণসংযোগ করতে পারে, ভোটররা যাতে কোন ভয়ভীতি ছাড়াই সুষ্ঠভাবে ভোট দিতে পারে সেজন্য প্রশাসন সর্বাত্মক চেষ্টা করবে বলে জানান। এছাড়া বিরোধী দলের কোনো নেতাকর্মী-সমর্থক যাদের বিরুদ্ধে মামলা বা পরোয়ানা নেই তাদের বিষয়ে পুলিশ প্রশাসনের সাথে আলোচনা করে ব্যবস্থা নেওয়ারও আশ্বাস দেন তিনি।

মতবিনিময়কালে আওয়ামী লীগের অন্যান্য প্রার্থীরা চট্টগ্রামে উৎসবমুখর নির্বাচনের পরিবেশ আছে দাবি করেন। একই দাবী অন্যান্য প্রার্থীদেরও। তবে তারা সবাই নির্বাচনী পরিবেশে সুন্দর ও সুষ্ঠু রখতে বিভিন্ন পরামর্শ দিয়ে বক্তব্য রাখেন।

এবিএন/রাজীব সেন প্রিন্স/জসিম/রাজ্জাক

এই বিভাগের আরো সংবাদ