আজকের শিরোনাম :

কলমাকান্দায় সাত বছরের শিশুকে অমানষিক নির্যাতন

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ২৪ মে ২০১৮, ১৪:৩৫

কলমাকান্দা (নেত্রকোনা), ২৪ মে, এবিনিউজ : কোনো কাজে সামান্য ত্র“টি পেলেই লৌহদন্ড গরম করে শরীরের বিভিন্ন স্থানে ছ্যাঁকা দিতেন গৃহকর্ত্রী। পান থেকে চুন খসলেই গরম পানি আর তেলে ঝলসে দেওয়া হতো ছোট্ট শিশু স্মৃতি আক্তারের (৭) দেহ।

একদিন অনুমতি না নিয়ে সেম্পু ব্যবহার করায় অমানবিক নির্যাতনের পর স্মৃতির দুটি হাত ভেঙ্গে দেন পাষন্ড ওই নারী। আবার কোন কোন সময় শিশুটির হাতের আঙ্গুল গুলো কাঠ দিয়ে থেঁতলে দিতেন। নির্মমতার স্বীকার হতভাগ্য এই শিশুটি নেত্রকোনা জেলার কলমাকান্দা উপজেলার নাজিরপুর ইউনিয়নের উলুকান্দা গ্রামের দিন মুজুর সুলতান মিয়ার মেয়ে।

তার উপর এমন নির্যাতন চালানো হয় রাজধানীর একটি বাসায়। তবে স্মৃতির বাবা ও মা নির্যাতনকারী গৃহকর্ত্রী বা তার পরিবারের কোন সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানেন না। গতকাল বুধবার বিকালে স্মৃতির মা জুলেখা খাতুন বলেন, পাশের কয়রা গ্রামের বাসিন্দা দুলাল মিয়ার স্ত্রী হাজেরা খাতুন প্রায় তিন মাস আগে স্মৃতিকে ঢাকায় একটি বাসায় বাচ্চার সাথে খেলাধুলার কথা বলে নিয়ে যায়।

কিছুদিন পরে স্মৃতিকে একটি বাসায় কাজ করতে দিয়েছেন বলে জানান হাজেরা। কিন্তু এ সময়ের মধ্যে স্মৃতির সঙ্গে কোন যোগাযোগ করতে পারেনি তার পরিবার। স্মৃতির ব্যাপারে তার পরিবার খোঁজ খবর জানতে চাইলে হাজেরা বলেন স্মৃতি যে বাসায় আছে ভাল আছে আনন্দে আছে।

গত শুক্রবার রাতে আহত অবস্থায় স্মৃতিকে তার নিজ বাড়ীতে নিয়ে এসে পরিবারের কাছে তুলে দেন হাজেরা। সুস্থ্য-সবল শিশুর শরীরে এত ক্ষত চিহ্ন পুরা দাগ আর দুই হাতও বাঁকা কেন জানতে চাইলে হাজেরা কোন সুদুত্তর না দিয়ে বরং ঝগরায় লিপ্ত হয়ে যায়।

এ বিষয় নিয়ে বেশি বারাবারি করলে স্মৃতির পরিবারকে দেখা নেয়ার হুমকিও দেন তিনি। ফিরে আসার পর বাবা মায়ের কাছে কান্নাজড়িত কণ্ঠে প্রতিদিন তার উপর নির্যাতনের বর্ণনা দেয় শিশুটি। স্মৃতির সমস্থ শরীর জুড়ে নির্যাতনের ক্ষত চিহ্ন! বয়সের চেয়ে এখন তার শারীরিক যন্ত্রণা ও দু:সহ স্মৃতির ওজনই বেশি। পায়ুপথ ও স্পর্শকাতর অঙ্গও রক্ষা পায়নি নির্মমাতা থেকে!

এ খবর পেয়ে উপজেলা ছাত্রলীগ নেতা পল্টন আচার্য্য, সোহেল রানা, অমিত সরকার ও মানিক মির্জাসহ ১০/১২ কর্মী স্মৃতিকে বাড়ীতে এনে বুধবার সকালে কলমাকান্দা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন।

স্মৃতির দাদা বয়োবৃদ্ধ রমজান আলীসহ স্থানীয় অনেকে জানান, হাজেরা কাজ ও অর্থের প্রলোভন দেখিয়ে বিভিন্ন গ্রাম থেকে নারী-শিশু নিয়ে যান। ওই বিষয়ে হাজেরা খাতুনের সাথে মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্ঠা করলেও তাকে পাওয়া যায়নি। পরে ওই শিশুটির বাবা হতদরিদ্র সুলতান বাদী হয়ে কলমাকান্দা থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ওসি একেএম মিজানুর রহমান বলেন, অভিযোগ পেয়েছি কিন্তু ঘটনা ঘটেছে অন্য এলাকায়। আমরা হাজেরাকে গ্রেফতারের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। হাজেরাকে গ্রেফতার করতে পারলে নির্যাতনকারীর নাম ঠিকানা পাওয়া যাবে।

এবিএন/রশিদ আকন্দ/জসিম/এমসি

এই বিভাগের আরো সংবাদ