আজকের শিরোনাম :

স্বাস্থ্য স্যানিটেরী ইন্সপেক্টরের নেই পরিদর্শন

সদরপুরে ভেজাল খাবারে সয়লাব বাজার

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ২৩ মে ২০১৮, ১৮:৩৭

সদরপুর (ফরিদপুর), ২৩ মে, এবিনিউজ: ফরিদপুরের সদরপুর উপজেলার বিভিন্ন হাট বাজারে খাদ্যপন্য সামগ্রী দোকান থেকে শুরু করে বেকারি, মিষ্টি, হোটেলসহ ফলের দোকান গুলোতে অস্বাস্থ্যকর বিভিন্ন প্রকার খাদ্য সামগ্রী প্রকাশ্যে বিক্রি হচ্ছে। এব্যাপারে সদরপুর উপজেলার স্বাস্থ্য বিভাগের স্যানেটারি ইন্সপেক্টর এর নেই কোনো পরিদর্শন। বিভিন্ন অযুহাত দেখিয়ে তিনি এড়িয়ে যাচ্ছেন ওইসব অসাধু ব্যবসায়ীদের নিকট থেকে।

সদরপুর উপজেলার ইউনিয়নের বাজার ও মোড় গুলোতে অবাধে খোলা বাজারে বিক্রি হচ্ছে বিস্কুট, চানাচুর, নিমকি, সিঙ্গারা, সমুচা, রুটি, পাউরুটি, মিষ্টি,আম,লিচু ইত্যাদিসহ বাহারি ইফতার খাবার। এসব খাদ্যপণ্যের মান নিয়ন্ত্রণ ও যাচাই-বাছাই করার দায়িত্বে সদরপুর স্বাস্থ্য বিভাগের স্যানেটারি ইন্সপেক্টর মোঃ তোফাজ্জেল হোসেনের থাকলেও কাকতালীয় ভাবে তিনি এড়িয়ে যাচ্ছেন।

অনুসন্ধানে সদরপুর উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে, সরবারহকৃত বেকারী খাদ্যপন্য যেসব প্রতিষ্ঠানে তৈরি হচ্ছে তার বেশির ভাগের নেই কোনো বৈধ লাইসেন্স ও বিএসটিআইর অনুমোদন। স্যাঁতস্যাঁতে নোংরা পরিবেশে ভেজাল ও নি¤œমানের উপকরণ ময়দার পরিবর্তে নিম্ম মানের আটা এবং বিষাক্ত কেমিক্যাল এ্যামোনিয়া ব্যবহার করে অবাধে তৈরি করা হচ্ছে খাদ্য সামগ্রী বেকারি গুলোতে। এছাড়াও উৎপাদন ও মেয়াদোত্তীর্ণ তারিখ ছাড়াই বাহারি মোড়কে বনরুটি, পাউরুটি, কেক, বিস্কুটসহ বিভিন্ন ধরনের বেকারি সামগ্রী উৎপাদন ও বাজারজাত করা হচ্ছে।

বিএসটিআই ও ভ্রাম্যমাণ আদালতের সঠিক নজরদারি সংকীর্ন থাকায় অসাধু ব্যবসায়ীরা আইনের ফাঁক গলিয়ে ফের ভেজাল সামগ্রী দিয়ে অবাধে এসব বেকারি সামগ্রী তৈরি করে খোলা বাজারে সরবরাহ করার কারন খুজে পাওয়া যায়। এছাড়াও মিষ্টি তৈরির কারখানা গুলোতেও অস্বাস্থ্যকর ও নোংরা রয়েছে। অনেক কারখানায় পুরাতন মিষ্টির রস,সামগ্রী দিয়ে আবার তৈরি করা হচ্ছে। উপজেলার বিভিন্নস্থানে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মৌসুমকালীন ফল আম লিচু এনে ওইসব ফলপন্যে কার্বাইট, ফরমালিন ও বিষাক্ত কেমিক্যাল ইলিথিয়ন ব্যবহার শেষে বাজারে প্রকাশ্যে বিক্রি করা হচ্ছে।  

বেকারী অনুসন্ধানে সদরপুর উপজেলার চৌদ্দরশি,আটরশি,সাড়ে সাতরশি, সাতরশি,বাইশরশি, নয়রশি, ঢেউখালী, পিয়াজখালী এলাকায় নামে-বেনামে অন্তত ১০থেকে ১৫টি বেকারি সামগ্রী তৈরির কারখানা রয়েছে। এদের অধিকাংশ কারখানায় নোংরা পরিবেশে তৈরি হচ্ছে খাদ্যপণ্য।

এক কর্মচারী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, দিনের বেলায় তারা কোনো পণ্য উৎপাদন করেন না। ফজরের আগেই পণ্য উৎপাদন শেষ হয়ে যায়। রাতে ঝামেলা একটু কম বলেই পণ্য উৎপাদন রাতেই শেষ করে থাকে। ফজরের পরই কোম্পানির ভ্যানে বিভিন্ন এলাকার পাড়া-মহল্লা ও অলিগলির জেনারেল স্টোর ও চায়ের দোকানে ওই সব পণ্য পৌছে দেন ডেলিভারিম্যানরা। অথচ ওইসব খাদ্য সামগ্রীর মোড়কে কোনো বিএসটিআই লগো নেই ও গায়ে উৎপাদন ও মেয়াদোত্তীর্ণ লেখা থাকলেও কত তারিখে উৎপাদন হয়েছে বা মেয়াদ শেষ হবে কবে তার উল্লেখ নেই।

চা দোকানির কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা গরিব মানুষ, ফুটপাথে চা-পান বিক্রি করে সংসার চালাই, উৎপাদনের তারিখ দেখার সময় নাই, কাস্টমাররা তো আর এসব জিজ্ঞেস করে না। প্যাকেট থেকে কোনো মতে তুলে চা বা কলা দিয়ে খেতে ওই সব বেকারি সামগ্রী কিনে নিচ্ছে।

এব্যাপারে সদরপুর উপজেলার স্বাস্থ্য বিভাগের স্যানেটারি ইন্সপেক্টর মোঃ তোফাজ্জেল হোসেন জানান, আমি বিভিন্ন সময় ট্রেনিং এ থাকি। এছাড়াও শারীরিক ভাবে আমি সুস্থ নেই। তবে দ্রুত এদের বিরুদ্ধে পরিদর্শনে যাবো।

এবিএন/সাব্বির হাসান/জসিম/তোহা

এই বিভাগের আরো সংবাদ