আজকের শিরোনাম :

অর্থের অভাবে দিন মুজুরের ছেলের চিকিৎসা করতে পারছেনা

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ২৩ মে ২০১৮, ১৬:৪৫

শিবপুর (নরসিংদী) , ২৩ মে, এবিনিউজ : আমারও স্কুলে যেতে মন চায়। কতদিন হয় স্কুলে যাই না। স্কুল ছুটির দিনে আমার বন্ধুরা বিকেলে মাঠে খেলাধুলা করে, কেউবা আবার ঘুরে বেড়ায়। বন্ধুরা আমাকে মাঝে মধ্যে দেখতে আসে। আমার পাশে কিছুক্ষণ বসে থাকে। তখন আমার খুব কষ্ট হয়। আমি সুস্থ্য হতে চাই, আমাকে একটু সহযোগিতা করেন। সহপাঠীদের মত চলতে আমারও মনে চায়। 

 

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার দুলালপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের ৭ম শ্রেণীর শিক্ষার্থী মো বাবুল মিয়া (১৫)। তিন বছর যাবৎ ঘরের বিছানায় ও বাড়ির উঠানে হুইল চেয়ারে বসে সময় কাটায়। তার বাবার নাম মো: দেলোয়ার হোসেন পেশায় একজন দিনমুজুর। স্ত্রী জরিনা বেগম একজন গৃহীনি। শিবপুর উপজেলার দুলালপুর ৪নং ওয়ার্ডে বিলপাড় গ্রামের বাসিন্দা। 

 

বাবুল আকুতি-মিনতি করে কান্নাজড়িত কন্ঠে বলে একটি আম গাছ আমার জীবনটা শেষ করে দিয়েছে। আমাদের বাড়ির পিছনে একটি বড় আম গাছ ছিল। আম গাছে অনেক আমের মুকুল এসেছে। গাছে উঠে ঔষধ দেওয়ার সময় হঠাৎ পা পিছলে গাছ থেকে প্রথমে টিনের চালে পড়ে যাই। টিনের চাল থেকে আবার মাটিতে পড়ে যাই। মাটিতে পড়ে আমি আহত হই। তার পর আমি আর কিছুই বলতে পারবো না।

 

জ্ঞানহীন অবস্থায় আমাকে আমার পরিবার শিবপুর উপজেলা হাসপাতালে জন্য নিয়ে আসে। এখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসকরা জেলা হাসপাতালে প্রেরণ করেন। জেলা হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়ার পর জেলা হাসপাতাল থেকে ঢাকার পঙ্গু হাসপাতালে পাঠানো হয়। নিয়ম মাফিক টিকেট কেটে হাসপাতালে ভর্তি হই। হাসপাতালের  ডাক্তার আমার বাবা মার নিকট বলেন, কোমড়ে উপরে মেরুদন্ডের হাড়ঁ ভেঙ্গে গেছে। 


১মাস চিকিৎসা করার পর হাসপাতালের একজন ডাক্তার আমার পরিবারকে জানায় তাকে অপারেশন করাতে হবে। পরিবারের প্রশ্ন অপারেশন করতে কত টাকা লাগবে। ডাক্তার বলেন প্রায় ১লাখ টাকা। পরবর্তীতে টাকা জোগার করতে না পেরে বিনা চিকিৎসায় গ্রামে বাড়িতে চলে আসি। নিকট আত্বীয় স্বজন, এলাকাবাসীর দ্বারে দ্বারে ঘুরে অর্থ জোগার করতে না পেরে বিনা চিকিৎসায় বিছানায় পড়ে আছি। 

 

বাবুলের বাবা বলেন, আমি একজন দিন মুজুর আমার পরিবারে সদস্য সংখ্যা ৬জন। আমি একা উপার্জন করি। প্রায় লাখ খানে টাকার দরকার এতো টাকা কোথাও পাব। অভাব অনটনের সংসারে ধারদেনা করে কোন রকম ছেলে মেয়েদেরকে নিয়ে সংসার চালাইতেছি। ছেলেকে চিকিৎসা করাব কি ভাবে?  

 

বাবুলের মা জরিনা বেগম কান্নাজড়িত কন্ঠে বলেন, আমার এই অসুস্থ পোলাকে নিয়ে বহু কষ্টে দিন যাপন করছি। আমার ছেলেকে দয়া করে কেউ যদি চিকিৎসা ব্যবস্থা করতো আমি ও আমার পরিবার কষ্ট থেকে রেহাই পাইতাম । যখন তার মনটা খারাপ থাকে তখন  মাঝে মধ্যে ঘর থেকে তাকে উঠানে এনে হুইল চেয়ারে বসিয়ে রাখি।

 

অসুস্থ বাবুল বলেন, স্থানীয় এমপি সিরাজুল ইসলাম মোল্লাকে সাংবাদিকরা আমার বিষয়ে জানালে আমি আশা করি, তিনি আমার চিকিৎসার ব্যাপারে সহযোগীতা করবেন।

এবিএন/আনোয়ার হোসেন স্বপন/জসিম/নির্ঝর

এই বিভাগের আরো সংবাদ