আজকের শিরোনাম :

পটিয়া-১২ আসনে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকে এগিয়ে সামশুল হক

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ১৯ নভেম্বর ২০১৮, ২০:০১ | আপডেট : ১৯ নভেম্বর ২০১৮, ২০:০৮

চট্টগ্রাম শহরের নিকটবর্তী শিক্ষা ও ইতিহাস ঐতিহ্যে সমৃদ্ধ পটিয়া উপজেলার ১৭টি ইউনিয়ন নিয়ে চট্টগ্রাম-১২ আসন।  আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকে পর পর দুইবার নির্বাচিত এমপি শামসুল হক চৌধুরী এগিয়ে রয়েছেন।  সামশুল হককে আওয়ামী লীগের হয়ে অপ্রতিদ্ধন্ধী প্রার্থী মনে করছেন পটিয়াবাসী।

 পটিয়া আওয়ামী লীগের তৃণমূল নেতারাও দাবি করছেন বিগত দশ বছরের পটিয়ায় নজিরবিহীন উন্নয়নে এমপি সামশুল হককে হ্যাট্রিক জয়ের সম্ভাবনা জাগিয়েছে। আওয়ামী লীগের প্রার্থী হয়ে তৃতীয়বারে মত মনোনয়ন পেলে প্রিয় নেত্রীকে আসনটি হ্যাটট্রিক বিজয় উপহার দেবারও চ্যালেঞ্জ করেছেন এমপি শামসুল হক নিজেই।  

জানা যায়, ১৯৮৮ সালে এ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন জাতীয় পার্টির শিল্পবিষয়ক উপদেষ্টা সিরাজুল ইসলাম। এর আগে এ আসন থেকে দুইবার নির্বাচন করে পটিয়া পৌরসভার সাবেক মেয়র ও দক্ষিণ জেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি সামশুল আলম মাস্টার।

এর পরবর্তী ৯১ সাল থেকে তিন মেয়াদে এ আসনটি ছিল বিএনপির দখলে। ২০০৮ সালের আগ পর্যন্ত আসনটি বিএনপির ঘাঁটি হিসেবেই খুব পরিচিত ছিল। দীর্ঘ ৩৭ বছর পর ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর ঐতিহাসিক নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকে নির্বাচন করে বিপুল ভোটে জয়ী হলে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন মো. সামশুল হক চৌধুরী।

বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর থেকে হাতছাড়া হয়ে যাওয়া পটিয়া আসনটি সামশুল হকের হাত ধরেই ফিরে পাই আওয়ামী লীগ। ২০০৮ সালের ওই নির্বাচনে এক লাখ ৩৮ হাজার ৬৯ ভোট পেয়ে বিজয়ী হন শামসুল হক।

 তিন বারের এমপি বিএনপির শক্তিশালী প্রার্থী গাজী মোহাম্মদ শাহজাহান জুয়েলকে ৬২ হাজার ৯শ ১৩ ভোটের ব্যবধানে পরাজিত করে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়। দশম জাতীয় সংসদ সির্বাচনেও জাতীয় পার্টির সিরাজুল ইসলাম চৌধুরীকে বিপুল ভোটে পরাজিত করে আওয়ামী লীগ প্রার্থী হিসেবে এমপি নির্বাচত হন সামশুল হক।


আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামীলীগের প্রার্থী হিসেবে একাধিক মনোনয়ন সংগ্রহ করলেও পটিয়াবাসী ও তৃণমূল আওয়ামী লীগ নেতাদের পছন্দের ও অপ্রতিদ্বন্ধী প্রার্থী হিসেবে মত প্রকাশ করেছেন পরপর দুইবারের নির্বাচিত সংসদ সদস্য সামশুল হক চৌধুরীর পক্ষে।

এ আসনটি থেকে আওয়ামীলীগের মনোনয়ন দৌড়ে প্রার্থী হিসেবে মাঠে রয়েছেন চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাংস্কৃতিক সম্পাদক ও বিজিএমই-এর সহসভাপতি মোহাম্মদ নাছির, চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সংরক্ষিত আসনের সাবেক এমপি চেমন আরা তৈয়ব ও আওয়ামী যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বদিউল আলম।

সামশুল হক চৌধুরী নির্বাচন প্রস্তুতি এবং মনোনয়ন সম্পর্কে বলেন, জাতির পিতার কন্যা ২০০৮ সালে আমাকে মনোনয়ন দিয়েছিলেন। আমিই প্রথম আসনটি ছিনিয়ে আনি। নেত্রীর আশির্বাদ নিয়ে পর পর দুইবার এ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে বিগত দশ বছরে এলাকাবাসীর চাহিদা মোতাবেক পরিকল্পনা অনুয়ায়ী উন্নয়নকাজ করেছি। বিগত সকল সংসদ সদস্যর তুলনায় শতগুণ বেশি উন্নয়ন কাজ করেছি।

 এ দশবছরে দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দিইনি। প্রায় ৩০০ কোটি টাকার উন্নয়ন প্রকল্প চলমান রয়েছে। ফলে যেখানেই যাই যে এলাকায় যাই সেখানেই মানুষের ঢল নামে। উন্নয়নের মাধ্যমে পটিয়ার মানুষের মন জয় করতে সমর্থ হয়েছি। ফলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবারও আমাকে মনোনয়ন দেবে বলে শতভাগ আশা করছি। আর মনোনয়ন পেলে নেত্রীকে আসনটি হ্যাটট্রিক বিজয় উপহার দিবো এটাই আমার চ্যালেঞ্জ।

পটিয়ার ১০ বছরের উন্নয়ন চিত্র নিয়ে পটিয়া উপজেলা তথ্য অফিসারের সংবাদ সম্মেলন : এদিকে ২০০৯ সাল থেকে চলতি বছর পর্যন্ত পটিায়য় ২ হাজার কোটি টাকার উন্নয়ন্ন প্রকল্প বাস্তবায়ন হয়েছে বলে জানিয়েছেন পটিয়া উপজেলা তথ্য অফিসার কামরুজ্জামান। তিনি সোমবার পটিয়া নিজ কার্যালয়ে গণমাধ্যম কর্মীদের এক প্রেস ব্রিফিংয়ের মাধ্যমে উন্নয়ন প্রকল্পগুলো তুলে ধরেন।

তিনি বলেন পটিয়ার এমপি আলহাজ্ব সামশুল হক চৌধুরীর নেতৃত্বে গত ১০ বছর পটিয়ায় যে সব উন্নয়ন হয়েছে তা নজিরবিহীন। দেশের অন্যান্য সংসদীয় এলাকার তূলনায় পটিয়ার দৃশ্যমান উন্নয়ন প্রকল্পগুলো তুলে ধরে তিনি বলেন এটা সম্ভব হয়েছে পটিয়ার এমপি’র যোগ্য নেতৃত্বে। এসময় তিনি প্রধানমন্ত্রীর ১০ টি উন্নয়ন প্রকল্পের ব্যান্ডিং তুলে ধরেন।

রস্তাাঘাট ছাড়াও যে সব দৃশ্যমান উন্নয়ন প্রকল্প তিনি তুলে ধরেন সেগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে উপজেলা চত্ত্বরে নির্মিতব্য আবদুল করিম সাহিত্য বিশারদ অডিটোরিয়াম, প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদার কমপ্লেক্স ভবন নির্মাণ, পটিয়া থানা ভবন নির্মাণ, খাসমহলে আধুনিক ভূমি অফিস নির্মান, পটিয়া-বোয়ালখালী, পটিয়া-বৈলতলী সড়ক নির্মান, ৭টি  ইউনিয়ন কমপ্লেক্স ভবন নির্মাণ, ৪ হাজার ২শটি গভীর নলকূপ স্থাপন, ৫৮টি কমিউনিটি ক্লিনিক ও ২৮টি ই-পোস্ট সেন্টার স্থাপন, পটিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সকে ৫১ শয্যায় উন্নীতকরণ, পটিয়া পৌরসভার নিজস্ব ভবনসহ পৌর সদরে লাইটিং ও ড্রেনেজ সিস্টেম গড়ে তোলা, পটিয়া বাস স্ট্যান্ড নির্মাণ, পটিয়া বাইপাস সড়ক নির্মান, শিকলবাহা খালের ভাঙ্গনরোধ ও কাশিয়াইশ বেড়িবাঁধ নির্মাণ,

এলজিইডির আওতাধীন প্রকল্পের অধীন ১০০.৮০ কিলোমিটার সড়ক কাজ ও গ্রোথ সেন্টার নির্মান, ১২৫টি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভবন নির্মান, ২৯ টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও মাদ্রাসা ভবন নির্মাণ, ১০ টি কলেজের একাডেমিক ভবন নির্মান, মুক্তিযোদ্ধা ভবন নির্মান, পটিয়া কেন্দ্রিয় স্মৃতিসৌধ ও ঘৃণাস্তম্ভ নির্মান, পানি উন্নয়ন বোর্ডের অধীন ৩টি স্লুইচ গেট ও বেড়িবাঁধ নির্মান, আনসার একাডেমিক ভবণ নির্মান, পিটিআই ভবন নির্মান সহ অনেক উল্লেখযোগ্য ও ছোট খাটো প্রকল্প বাস্তবায়ন হয়েছে। তাছাড়া প্রতিটি মসজিদ, মন্দির, প্যাগোডায়ায় জেনারেটর, আইপিএস, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কম্পিউটার ল্যাব প্রদান করা হয়েছে।

তিনি বলেন,পটিয়ার এসব উন্নয়ন প্রকল্প ছাড়াও মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর উন্নয়ন প্রকল্পগুলো নিয়ে পটিয়া ছাড়াও দক্ষিণ চট্টগ্রামের ৭ থানায় উঠান বৈঠক, মহিলা সমাবেশ ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে গিয়ে শিক্ষার্থীদের মাঝে সেগুলো প্রচার করছে পটিয়া উপজেলা তথ্য অফিস।

তিনি পটিয়ার উন্নয়ন প্রকল্পগুলো জনসাধারনের মাঝে তুলে ধরতে গণমাধ্যম কর্মীদের সহযোগিতা কামনা করে বলেন, পটিয়ার এমপি আলহাজ্ব সামশুল হক চৌধুরী পটিয়ার উন্নয়নে যেসব প্রকল্প নিয়েছেন সেগুলোর ধারাবাহিকতা বজায় রাখার জন্য গণমাধ্যম কর্মীরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারেন।
 

এবিএন/রাজীব সেন প্রিন্স/জসিম/তোহা

এই বিভাগের আরো সংবাদ