আজকের শিরোনাম :

আনন্দ স্কুল টিকিয়ে রাখার কৌশল

শরণখোলায় ৬’শ টাকার চুক্তিতে সমাপনী পরীক্ষা

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ১৮ নভেম্বর ২০১৮, ১৯:০২

বাগেরহাটের শরণখোলায় প্রথম দিন অনুষ্ঠিত চলতি প্রাথমিক ও এবতেদায়ী সমাপনী পরীক্ষায় গুরুতর অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে।

 মাত্র ৬’শ টাকার চুক্তিতে মাধ্যমিক শিক্ষার্থীদের পরীক্ষায় অংশগ্রহন করিয়ে উপজেলার বিভিন্ন আনন্দ স্কুলগুলি টিকিয়ে রাখতে এবং শিক্ষকদের চাকুরী বাঁচাতে এ পন্থা অবলম্বন করা হচ্ছে বলে জানা গেছে।

 প্রাথমিক শিক্ষকদের একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট প্রতি বছর নানা কৌশলে এমন অনিয়ম ও দূর্নীতি চালিয়ে গেলেও কেউ তাদের লাগাম টানার চেষ্টা করছে না। ফলে, সরকারে বিপুল পরিমান টাকা গচ্ছাসহ কোমলমতি শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ শিক্ষা জীবন নিয়ে টালবাহানা করা হচ্ছে।  

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, আজ রবিবার শরণখোলা উপজেলার ৪ ইউনিয়নের ৮টি পরীক্ষা কেন্দ্রে উপজেলার ১১৪ টি প্রাথমিক, ৫৯ টি আনন্দ ও ২০টি মাদ্রাসার ২ হাজার ৬’শ ৮৪ জন শিক্ষার্থী পিইএসসি (সমাপনী) পরিক্ষায় অংশ নেয়।

 এর মধ্যে উপজেলার জনতা মাধ্যমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে দ্বিতীয় তলার ৫, ৬ ও ৭ নং কক্ষে উত্তর তাফালবাড়ী মান্নান হাওলাদারের বাড়ী, উত্তর তাফালবাড়ী ফারুক হাওলাদারে বাড়ী, উত্তর তাফালবাড়ী লুৎফর রহমান বাড়ী, ক্ষিতিশি চন্দ্রের বাড়ী, কদমতলা এমাদুল হকের বাড়ী, উত্তর তাফালবাড়ী হক ফরাজী বাড়ী, কাঞ্চন জোমাদ্দার বাড়ী, রনজিৎ হাওলাদার বাড়ী, মজিব রহমান বাড়ী,  রায়েন্দা বাজার তৌহিদের বাড়ী, ডাঃ সাইয়েদুর রহমান বাড়ী, দক্ষিণ আমড়াগাছিয়া আঃ আজিজ মোল্লার বাড়ী, মালিয়া দেলোয়ার মোল্লার বাড়ী,

রাজাপুর আলী হোসেনের বাড়ীসহ অন্যান্য আনন্দ স্কুলের ১৩৩৮, ১৭৭২, ৭৩, ৭৪, ৭৫, ৭৬, ৭৭, ৭৮, ৭৯, ৮০, ৮১, ৯৩, ১৬৯৪, ৯৫, ৯৬, ৯৭, ৯৮, ৯৯, নং রোল নম্বরের প্রায় ৩০/৩৫ জন শিক্ষার্থী প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষায় অংশ নিলেও এদের অধিকাংশ উপজেলার আর,কে,ডি,এস পাইলট বালিকা বিদ্যালয়, জনতা মাধ্যমিক বিদ্যালয, সুন্দরবন মাধ্যমিক বিদ্যালয়, সুন্দরবন মাদ্রাসা, তাফালবাড়ী মাধ্যমিক বিদ্যালয়সহ বিভিন্ন স্কুলের ষষ্ঠ, সপ্তম ও অষ্টম শ্রেণীর শিক্ষার্থী বলে জানা গেছে।

ওই কেন্দ্রের পরীক্ষার্থী সাদিয়া, মরিয়ম ও রাবিনা আর,কে,ডি,এস বালিকা বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণীর ছাত্রী, সাউথখালী সিএসবি কেন্দ্রে অংশ নেয়া সুন্দরবন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ৮ম শ্রেনীর ছাত্রী মহুয়া আক্তার, ৬ষ্ঠ শ্রেনীর চাত্র সবুজ এবং সুন্দরবন মাদ্রসার ৬ষ্ঠ শ্রেণীর ছাত্র শামীম সত্যতা স্বীকার করে জানায়, তারা সংশ্লিষ্ট আনন্দ স্কুলের দায়ীত্বরত শিক্ষকদের কাছ থেকে ৬’শ টাকায় চুক্তিতে স্ব স্ব আনন্দ স্কুল থেকে পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে।

নাম প্র্রকাশে অনেচ্ছুক এক শিক্ষক বলেন, স্কুলকে টিকিয়ে রাখতে প্রতি বছর কতিপয় অসাধু শিক্ষকদের একটি শক্তিশালী চক্র বিভিন্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও মাদ্রাসার ষষ্ঠ, সপ্তম ও অষ্টম শ্রেনীর শিক্ষার্থীদের ছাত্র সাজিয়ে পরীক্ষায় অংশ গ্রহন করানো হয়।
এ ব্যাপারে ওই কেন্দ্রের হল সুপার প্রধান শিক্ষক জাকির হোসেন ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, আনন্দ স্কুলের পক্ষে পরীক্ষায় অংশ নেয়া পরীক্ষার্থীদের দৈহিক গঠন দেখলেই রোঝা যায় এরা মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থী। কিন্তু উপযুক্ত প্রমানের অভাবে পরীক্ষা থেকে ওই শিক্ষার্থীদের আটকানো যাচ্ছেনা।

 এ ব্যাপারে আনন্দ স্কুলের অত্র উপজেলার দায়িত্বরত কর্মকর্তা আলমগীর হোসেনের বক্তব্য নেয়ার জন্য একাধিকবার তার মুঠোফোনে চেস্টা করে করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

 উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আশরাফুল ইসলাম শিক্ষকদের যোগসাজশের বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, আনন্দ স্কুলের কেউ অনিয়ম করলে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা লিংকন বিশ্বাস জানান, অভিনব এ জালিয়াতির বিষয়ে তিনি অবগত নন। তবে, খোঁজখবর নিয়ে জড়িতদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহন করা হবে।


এবিএন/নজরুল ইসলাম/জসিম/তোহা

এই বিভাগের আরো সংবাদ