আজকের শিরোনাম :

গুল-গুলাতে ঘুরলো ভাগ্যের চাকা

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ১৫ নভেম্বর ২০১৮, ১৭:৩৯

দু’টি বেঞ্চ, একটি টেবিল, কিছু আসবাবপত্র নিয়ে গুল গুলা বিক্রির ছোট্ট একটি দোকান। এতেই ভাগ্যের চাঁকা বদলে গেল কুড়িগ্রাম জেলার সীমান্ত ঘেষা উপজেলার বড়ভিটা ইউনিয়নের জিয়াউর রহমানের।  সে উপজেলার বড়ভিটা গ্রামের খরেজ্জামানের ছেলে। এক ভাই ও এক বোনের সংসার, তবুও অভাবের কারনে লেখা-পড়া করতে পারেনি। এক সময় কাজের সন্ধানে বাংলাদের বিভন্ন জেলায় এমনকি ভারতের দিল্লীতে ইটভাটায়ও কাটিয়েছেন কয়েক বছর। তবুও অভাব পিছু ছাড়েনি তার।

বাবা-মা, বোনকে নিয়ে খেয়ে না খেয়ে কোন রকমে তাদের জীবন চলছিল। শেষমেষ উপায় না পেয়ে ছোটবেলায় বাবার কাছ থেকে শেখা গুল গুলা তৈরীর ব্যবসা শুরু করেন। তার পিতা এই ব্যবসায় সফলতা না পেলেও স্বল্প পুজির ব্যবসায় ভাগ্য খুলে যায় জিয়াউর রহমানের।  আশপাশের ৪-৫ গ্রামের মানুষসহ বহু দুর দুরান্তর থেকে ছুটে আসে তার দোকানের তৈরী শ্বাদের গুল গুলা খেতে।  

স্বাদে ও গন্ধে অতুলনীয় হওয়ায় দুরের পথচারীরাও তার ক্রেতা। প্রতিদিন বিকালে দোকান খুলে রাত ৯ টার মধ্যে তৈরী সব গুলগুলা বিক্রি হয়ে যায়।  নিত্য দিন আট-দশ কেজি ময়দা, ৩-৪ কেজি চিনি দিয়ে তৈরী গুলগুলা ৩ থেকে ৪ হাজার টাকা বিক্রি করেন   এতে লাভ হয় ৭শ-৮শ টাকা। বিশেষ কোন দিনে নিত্যদিনের চেয়ে গুলগুলার বিক্রি বেশি হয়।  দোকানটি ফুলবাড়ী-কুড়িগ্রাম পাঁকা রাস্তার পার্শ্বে হওয়ায় দুরের পথচারীরাও তার তৈরি গুলগুলা কিনে নিয়ে যান।  ব্যবসা দিয়েই চলে তার পুরো পরিবার। ব্যবসার ফাঁকে-ফাঁকে অন্য কাজও করেন জিয়াউর।  ফলে পরিবারে ফিরছে স্বচ্ছলতা। গ্রামে এখন  জিয়াউর রহমানের পরিবার হচ্ছে একটি স্বচ্ছল পরিবার।  নিজে জমি কিনে বাড়ী করেছেন। কিছু আবাদি জমিও বন্ধক নিয়েছেন।  ছেলে মেয়েদেরকে লোখা পড়া করাচ্ছেন। নিজে লেখা পড়া না শিখলেও ছেলে মেয়ের লেখা পড়া শিখিয়ে প্রতিষ্ঠিত করাই তার একমাত্র লক্ষ্য।

স্বচ্ছল জিয়াউর রহমান বলেন, গুলগুলা ময়দা, চিনি, লবণ, মসল্লা ও পানি দিয়ে প্রথমে মিশ্রণ তৈরী করা হয়। তারপর এটি ডুবা তেলে ভাজলে গোল, গোল লালচে রঙ্গের হয়। খেতে সুস্বাদু হওয়ায় ক্রেতারা সহজেই আকৃষ্ট হয়ে তা কিনে নেন।  গুলগুলা বিক্রি করে সংসারে সফলতা এসছে বলে সবাই তাকে ডাকে গুলগুলা জিয়া বলে।

বড়ভিটা গ্রামের মাঝি পাড়া স্কুলের প্রধান শিক্ষক সিদ্দিকুর রহমান বলেন, নিজ চেষ্ঠা ও সততা দিয়ে স্বল্প পুঁজিতেও যে স্বাবলম্বী হওয়া যায় তার প্রমাণ জিয়াউর রহমান।  তার পথ ধরে অনেকেই স্বাবলম্বী হতে পারে।

এবিএন/বিশ্বনাথ রায়/জসিম/রাজ্জাক

এই বিভাগের আরো সংবাদ