আজকের শিরোনাম :

প্রতিবন্ধি সাদিয়ার দেওয়া হলো না জেএসসি পরীক্ষা

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ০৬ নভেম্বর ২০১৮, ২১:৪৪

প্রতিবন্ধিরা সমাজের বোঝা নয়, এরা হলো সমাজের উদাহরণ।  প্রতিবন্ধি বলে তারা কোন কাজেই পিছিয়ে নেই। প্রত্যেক কাজেই তারা ভূমিকা রাখার প্রাণপণ চেষ্ঠা চালিয়ে যাচ্ছেন।  এমনকি বর্তমান সময়ে প্রতিবন্ধিরা দেশের বিভিন্ন কাজে তাদের কর্মদক্ষতার পরিচয় দিয়ে অবদান রাখার চেষ্টাও করছেন। তারপরও  ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর উপজেলার এক প্রতিবন্ধি শিক্ষার্থীর শিক্ষা জীবনের পথে বাঁধা হয়ে দাড়ালেন তার বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা।  

এমন ঘটনাটি ঘটেছে বিজয়নগর উপজেলার পাহাড়পুর ইউনিয়নের মুকুন্দপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে।  ঘটনাটি ঘটেছে জেএসসি পরীক্ষার প্রথম দিন।  এ বিষয়ে শিক্ষার্থীর পক্ষ থেকে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও)র বরাবর একটি অভিযোগও দেয়া হয়েছে।
 
জানা গেছে, উপজেলার পাহাড়পুর ইউনিয়নের ঘিলামুড়া  গ্রামের ইউনুছ মিয়ার প্রতিবন্ধী মেয়ে সাদিয়া আক্তার মুকন্দপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের জেএসসি পরীক্ষার্থী। জেএসসি পরীক্ষার প্রথম দিন গত ১লা নভেম্বর বৃহস্পতিবার বাংলা পরীক্ষা  দিতে গেলে বিদ্যালয়ের শিক্ষক হাবিবুর রহমান তাকে পরীক্ষার হল থেকে বের করে দেয়।  

সাদিয়া আক্তার বলে, আমি টেস্ট পরীক্ষায় সকল বিষয়ে পাশ করে ৫‘শ টাকা দিয়ে জেএসসি পরীক্ষায় অংশ নিতে ফরম পূরণ করি।  পরীক্ষার্থীদের  প্রবেশপত্র দেওয়া শুরু হলে আমি স্কুলে একাধিকবার প্রবেশ পত্র আনতে যায়।  তখন প্রধান শিক্ষক আমাকে প্রবেশ পত্র না দিয়ে পরীক্ষার সময় কেন্দ্রে এসে প্রবেশ পত্র নেওয়ার কথা বলেন।

পরে আমি গত বৃহস্পতিবার সকালে প্রথম দিন বাংলা পরীক্ষা দিতে স্কুলে গেলে হাবিবুর রহমান স্যার বলেন, তোমার প্রবেশ পত্র আসেনি, তুমি পরীক্ষা দিতে পারবে না। আগামীতে তুমি পরীক্ষা দিবে এবং তোমাকে বিনামূল্যে পড়ানো হবে। এই কথা বলে কেন্দ্র থেকে বের করে দেন।

এ ব্যাপরে সাদিয়ার বাবা ইউনুছ মিয়া বলেন, আমার মেয়ে একজন প্রতিবন্ধী, সে সরকারীভাবে ভাতা পায় এবং আমি গরীব বলে আগের ইউএনও স্যার আমার মেয়েকে বিনামূল্যে পড়ার ব্যবস্থা করে দিয়ে যান।  তবু আমার মেয়েকে ৫০০ টাকা দিয়ে  জেএসসি পরীক্ষার ফরম পূরণ করানো হয়।  সে সারা বছর লেখাপড়া করে পরীক্ষা দিতে গেলে তাকে কেন্দ্র থেকে বের করে দেয় শিক্ষকরা!  

এ ব্যাপারে শিক্ষক হাবিবুর রহমান মোবাইল ফোনে বলেন, তারা মিথ্যে বলছে।  আমি পরীক্ষার দিন স্কুলে ছিলাম না।  বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কামাল আহমেদ বলেন, টাকা নেওয়ার প্রশ্নই আসে না, সে টেস্ট পরীক্ষায় ফেল করছে।  তার বাবা অশিক্ষিত হওয়ায় টেস্ট পরীক্ষার পরে তারা স্কুলে এসে কোনো খোঁজ খবর নেয়নি।  ফরম পূরন করেনি। এখন পরীক্ষার সময় এসে পরীক্ষা দিতে চাইলে তাদের পরীক্ষা দেওয়ার নিয়ম নাই বলে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।  

এ বিষয়ে শিক্ষা কর্মকর্তা মিলন কৃষ্ণ হালদার বলেন, ঘটনাটি দুঃখজনক।  সাদিয়া শিক্ষকদের বিচারের দাবিতে ইউএনওর কাছে একটি অভিযোগ প্রদান করেছে।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মেহের নিগার বলেন, এ ব্যাপারে মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে তদন্ত করে প্রতিবেদন দেয়ার জন্য বলা হয়েছে এবং বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে কারণ দর্শানোর নোটিশ করা হয়েছে।  তবে তদন্ত করে শিক্ষকরা দোষী হলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এবিএন/জহিরুল আলম চৌধুরী/জসিম/রাজ্জাক

এই বিভাগের আরো সংবাদ