আজকের শিরোনাম :

বগুড়ার শেরপুরে ভিজিডির চাল তছরুপের অভিযোগ

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ০১ নভেম্বর ২০১৮, ১৭:৪৫

বগুড়ার শেরপুরে মির্জাপুর ইউনিয়নের ভিজিডির চাল জনপ্রতিনিধিদের পেটে! গরীব-দুখীদের ভিজিডির এই চাল আত্মসাতের তালিকায়  উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যানের নামও রয়েছে। বিষয়টি জানাজানির পর এই নিয়ে এলাকায় তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে।

প্রাপ্ততথ্যে জানা যায়, উপজেলার ১০টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভার অসহায় ও গরীব দু:খীদের খাদ্য নিরাপত্তার দিক বিবেচনা করে প্রতিমাসে ৩০ কেজি করে চাল প্রদান করা হয়। ২০১৭-১৮ অর্থ বছরে উপজেলার মির্জাপুর ইউনিয়নের ৯ টি ওয়ার্ডে ১২৬ টি কার্ডের মাধ্যমে ১২৬ জন অসহায় ব্যাক্তিদের ৩০ কেজি করে চাল প্রদান করা হচ্ছে।

এই ইউনিয়নের অধিকাংশ কার্ডধারীরা এই কার্ড পাবার উপযুক্ত নন। কোন কোন ওয়ার্ড মেম্বার তাদের আত্মীয় স্বজনদের নামে এই কার্ড বিতরণ করেছেন। আবার কেউ কেউ এই কার্ডের ব্যাক্তিকে না জানিয়ে নাম দিয়ে তিনিই এই চালগুলো তুলে বাজারে বিক্রি করছেন। মির্জাপুর ইউনিয়নের তালিকার ৮৯ নং তালিকায় উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ফিরোজা খাতুনের নামও রয়েছে।

এ ব্যাপারে উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ফিরোজা খাতুন জানান, আমি মির্জাপুরে মেম্বার থাকা অবস্থায় আমার একটা নাম ভিজিড তালিকায় রেখেছিলাম। কিন্তু উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান হওয়ার পরে ফরহাদ মেম্বারকে দায়িত্ব দিয়েছিলাম অন্য কারো নাম দেয়ার। কিন্তু সে দিয়েছে কিনা আমি জানিনা।

সরেজমিনে মির্জাপুর ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডে গিয়ে আরো জানা যায়, ওই ওয়ার্ডের সদস্য কানু তার মেয়ের নাম সহ যে সকল ব্যাক্তির নামে কার্ডগুলো ইস্যু করেছেন তারা একজনও চাল পান না। এই চালগুলো প্রতিমাসে তিনি নিজেই উত্তোলন করে বাজারে বিক্রি করছেন।

তালিকার ৮৭ নং মুনজুয়ারা বেগমের স্বামী একজন ব্যবসায়ী। তিনি এই কার্ডের চাল কখনোই উত্তোলন করেননি বলে এই প্রতিবেদককে জানিয়েছেন।

এছাড়া তালিকার ৮৬ নং শিউলী খাতুন একজন শিক্ষক। তাই তার এই চাল উত্তোলন করার প্রশ্নই উঠেনা। এভাবে যে কয়জন ব্যাক্তির খোঁজ নেয়া হয়েছে, তারা জানিয়েছেন এই চাল তারা কখনোই উত্তোলন করেননি।  এ ব্যাপারে কানু মেম্বারের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, আসলে সবগুলোই নয়, কিছু কার্ডে সমস্যা আছে। এক পর্যায়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে তিনি অনুরোধ করেন এই সংবাদ প্রকাশ না করতে।

মির্জাপুর ইউনিয়নের সচিব আমিনুল ইসলাম জানান, আমি সবেমাত্র এখানে যোগদান করেছি। উপস্থিতি না পেয়ে চাল আটক করেছিলাম কিন্তু চেয়ারম্যানের অনুরোধে সেগুলো দিয়ে দিয়েছি।
মির্জাপুর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলী মুন্টু মাষ্টার জানান, আসলে মেম্বাররা গরীব। তাই তারা কিছু কিছু কার্ডের চাল তুলে বিক্রি করেন। আপনারা বিষয়গুলো না লিখলেই আমাদের জন্য ভাল হয়।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার লিয়াকত আলী জানান, আমি সবে মাত্র যোগদান করেছি। তবে বিষয়টি তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।


এবিএন/শহিদুল ইসলাম শাওন/জসিম/তোহা

এই বিভাগের আরো সংবাদ