আজকের শিরোনাম :

গ্রেনেড হামলায় আহত হান্নান নিখোঁজের ঘটনায় সরিষাবাড়ীতে মানবন্ধন

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ২৮ অক্টোবর ২০১৮, ২০:৫৮

নিখোঁজ উপাধ্যক্ষ আব্দুল হান্নানকে জীবিত উদ্ধারের দাবিতে জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে আজন রবিবার দুপুরে এলাকাবাসী ও পরিবারের সদস্যরা মানববন্ধন করেছে।  হান্নান বহুল আলোচিত ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় আহত হন।  তাঁর শরীরে গ্রেনেডের স্প্রীন্টারবিদ্ধ ছিল। তিনি কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ছিলেন।

এ ছাড়াও তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও ভিপি, কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক লীগের প্রতিষ্ঠাতা সিনিয়র সহ-সভাপতি (এক-এগারো সরকারের সময় ভারপ্রাপ্ত সভাপতি) ও নিখোঁজের আগ পর্যন্ত বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপ-কমিটির সহ-সম্পাদক ছিলেন। তিন বছর আগে হান্নান নিখোঁজের মামলা দায়ের হলেও রহস্যজনক কারণে তদন্ত থেমে যায়। এ ক্ষোভে  এলাকাবাসি হান্নানকে জীবিত উদ্ধারের দাবিতে মানবন্ধন ও সমাবেশ করেন।

পারিবারিক সুত্র জানায়, সরিষাবাড়ী উপজেলার সাতপোয়া ইউনিয়নের চর চুনিয়াপটল গ্রামের মৃত আব্দুল লতিফের ছেলে উপাধ্যক্ষ আব্দুল হান্নান।  ২০১৫ সালের ৭ ডিসেম্বর (সোমবার) সকাল সাড়ে ৭টার দিকে রাজধানীর ইন্দিরা রোডের কলেজ ছাত্রাবাস সংলগ্ন বাসা থেকে হাটতে বেরিয়ে তিনি নিখোঁজ হন।

২০০৪ সালের একুশে আগস্ট আওয়ামী লীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনার মহাসমাবেশে গ্রেনেড হামলা হলে মাথায় স্পিন্টারবিদ্ধ হয়ে তিনিও গুরুতর আহত হয়েছিলেন।  আব্দুল হান্নান ২০১১ সালের ১ জুন রাজধানীর তেজগাঁও কলেজের উপাধ্যক্ষ-৩ হিসেবে নিয়োগপ্রাপ্ত হন। ২০১৫ সালের জানুয়ারিতে তাঁকে উপাধ্যক্ষ পদ থেকে বিনা নোটিশে অব্যাহতি দেয়া হয়। পরে উপাধ্যক্ষ পদে অধ্যক্ষ আবদুর রশীদের সহোদর ছোটভাই ও সরিষাবাড়ী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হারুন-উর-রশিদকে নিয়োগ দেওয়া হয়।  এ নিয়ে কলেজ কর্তৃপক্ষের সাথে আব্দুল হান্নানের জটিলতা সৃষ্টি হয়।

এছাড়া জামালপুর-৪ (সরিষাবাড়ী) আসনে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশী হিসেবে অধ্যক্ষ আবদুর রশীদ ও উপাধ্যক্ষ আব্দুল হান্নান উভয়েই প্রতিদ্বন্ধি ছিলেন।

দল ক্ষমতায় থাকা সত্ত্বেও তিনি নানাভাবে অপমানিত হওয়ায় মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন। এরই মধ্যে তিনি হঠাৎ নিখোঁজ হয়ে যান। নিখোঁজের পরদিন ২০১৫ সালের ৮ ডিসেম্বর তাঁর স্ত্রী একই কলেজের শিক্ষিকা (দর্শন) আফরোজা সুলতানা শেরেবাংলা নগর থানায় জিডি করেন। জিডি নং ৫৫২। কিছুদিন এ জিডির তদন্ত চললেও রহস্যজনক কারণে তা মাঝপথে থমকে যায়।

এদিকে নিখোঁজ রহস্য উদঘাটন করে জড়িতদের গ্রেফতার ও তাঁকে জীবিত উদ্ধারের দাবিতে জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে পুণরায় আন্দোলন শুরু হয়েছে। রবিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে সরিষাবাড়ী বাস স্ট্যান্ডে পরিবারের সদস্য ও দুই সহস্রাধিক এলাকাবাসী মানববন্ধন করে। পরে মহাদান ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আজমত আলী মাস্টারের সভাপতিত্বে প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়।

সভায় বক্তব্য রাখেন নিখোঁজ আব্দুল হান্নানের বৃদ্ধা মা আছমা বেগম, তাঁর ছোটভাই অধ্যাপক শহিদুর রহমান, পৌর কাউন্সিলর কালাচান পাল, উপজেলা যুবলীগের সভাপতি একেএম আশরাফুল ইসলাম, মহাদান ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আনোয়ার হোসেন, মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হক গুদু, উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি কেএম সোহেল রানা প্রমুখ। অনুষ্ঠানের সভাপতি আজমত আলী মাস্টার জানান, ‘তিনি উদ্ধার না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।’

এবিএন/মো: শাহ্ জামাল/জসিম/রাজ্জাক

এই বিভাগের আরো সংবাদ