আজকের শিরোনাম :

উলিপুরে ব্রহ্মপুত্র নদে নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে চলছে মা ইলিশ নিধন

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ২৫ অক্টোবর ২০১৮, ২০:০৩ | আপডেট : ২৫ অক্টোবর ২০১৮, ২০:৫৩

কুড়িগ্রামের উলিপুরে ব্রহ্মপুত্র নদে এবারও ধরা পড়ছে মা ইলিশ।  তবে গত বছরের তুলনায় এবারের ইলিশের আমদানি কম হলেও ব্যবসায় লাখ লাখ টাকা ছাড়িয়েছে।

উপজেলার সীমান্ত ঘেঁষা ব্রহ্মপুত্র নদীতে এতদিন ইলিশের আবির্ভাব দেখা না গেলেও গত দু’বছর থেকে এখানে ইলিশের বিচরণ লক্ষ্য করা যাচ্ছে।  পদ্মা-যমুনা ব্রহ্মপুত্র হয়ে ইলিশ চলে যাচ্ছে ভারতের আসাম রাজ্যে। কিন্তু ইলিশ ধরার নিষেধাজ্ঞার সময়ে ব্রহ্মপুত্রের বিভিন্ন পয়েন্টে গোপনে শত শত মণ ইলিশ ধরে তা বিক্রি করছেন জেলেরা।  প্রকাশ্যে বিক্রি করতে না পারলেও গোপনে ইলিশের বাণিজ্য চলছে কয়েক লাখ টাকার। তাই নিষেধাজ্ঞা উঠে যাওয়ার পর ইলিশের সংখ্যা কমে যাওয়ার আশংকা স্থানীয় জেলেদের।  

জানা গেছে, উপজেলার হাতিয়া, বুড়াবুড়ি ও বেগমগঞ্জ ইউনিয়নের, অন্তপুর, বাগুয়া, ফেইচকার চর, চর গুজিমারি, জাহাজের আলগা, নামাজের চর সহ বিভিন্ন এলাকায় প্রায় শতাধিক ডিঙ্গি নৌকায় কারেন্ট জাল দিয়ে মাছ ধরছেন জেলেরা।  হাতিয়া গ্রামের জেলে পালন চন্দ্র দাস, নিপেন চন্দ্র, ভুবেন চন্দ্র, পোড়ার চরের লাল চান, শহিদুল ইসলাম সহ অনেকে জানান, নিষেধাজ্ঞা চলাকালীন ইলিশ ধরা বন্ধ হয়নি। আমরা মাছ ধরা বন্ধ করে চলব কিভাবে সরকারি কোনো সহায়তাও পাই না। তাই বাধ্য হয়েই সরকার নিষেধাজ্ঞা করে মাছ ধরতে হয়।

নিষেধাজ্ঞা থাকায় রাত ৮ টার পর থেকে ভোর রাত পর্যন্ত কারেন্ট জাল দিয়ে অনেক জেলে মাছ ধরছেন। এছাড়াও  প্রশাসনকে ম্যানেজ করে দিনের বেলায় মাছ ধরা হচ্ছে বলে জানা গেছে। তবে জেলেদের অভিযোগ, মাছ ধরার সময় প্রশাসনের অনেকেই এবং স্থানীয় কিছু প্রতারক এসে টাকা না দিয়েই ভয়ভীতি দেখিয়ে ইলিশ নিয়ে যায়। চলতি মৌসুমে ইলিশ কম আসায় এবার তেমন মাছ ধরা পড়ছে না। সারারাত মাছ ধরলে ১০/২০ কেজি পর্যন্ত ওঠে আর দিনের বেলায় এর সংখ্যা কমে ৫/১০ কেজি পর্যন্ত হয়।

নিষেধাজ্ঞার শুরুতেই ইলিশের কেজি ছিল ২৫০ টাকা। আর বর্তমানে এর দাম বেড়ে ৪’শ ৫০ টাকা পর্যন্ত হয়েছে। নিষেধাজ্ঞা উঠে যাওয়ার পর এর দাম আরও বেড়ে যাবে বলে জানান তারা। মোল্লারহাটের নৌকার মাঝি আব্দুস ছালাম মিয়া বলেন, মোটরমাইকেল যোগে শত শত ক্রেতা এসে মোল্লারহাট থেকে বস্তায় করে ইলিশ নিয়ে যাচ্ছে। এখানে গড়ে প্রতিদিন ৫০/৬০টি ডিঙ্গি নৌকা মাছ ধরে।

হাতিয়া ইউপি চেয়ারম্যান এবিএম আবুল হোসেন বিএসসি জানান, তার ইউনিয়ন সহ বুড়াবুড়ি বেগমগঞ্জ ইউনিয়নে প্রায় ১ হাজার ৬’শ জেলে পরিবার রয়েছে। তারা নিষেধাজ্ঞা চলাকালীন সময়ে কোনো সরকারি সহায়তা না পাওয়ায় গোপনে ইলিশ মাছ ধরছে।
সিনিয়র উপজেলা মৎস অফিসার জাহাঙ্গীর আলম জানান, প্রশাসনের সহায়তায়  প্রতিদিন অভিযান অব্যাহত রয়েছে। এখন পর্যন্ত প্রায় ৬০ হাজার মিটার কারেন্ট জাল নষ্ট করা হয়েছে। উপজেলায় কার্ডধারী জেলের সংখ্যা প্রায় ৩ হাজার ২’শ জন। এদেরকে সরকারিভাবে কোন সহায়তা প্রদান করা হয়েছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, উর্ধ্বতন কতৃপক্ষকে বিষয়টি অবহিত করা হয়েছে।

এবিএন/আব্দুল মালেক/জসিম/রাজ্জাক

এই বিভাগের আরো সংবাদ