আজকের শিরোনাম :

খুলনার কপিলমুনি হাসপাতালের শয্যা বৃদ্ধি দাবি জনসাধারনের

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ২৩ অক্টোবর ২০১৮, ১৬:১২

খুলনার কপিলমুনির ঐতিহাসিকতা ও বর্ধিষ্ণু জনপদের শত বছরের পুরনো কপিলমুনি হাসপাতালটির শয্যা সংখ্যা বৃদ্ধি ও আধুনিক চিকিৎসা সেবা প্রাপ্তি এখন সময়ের দাবি। হাসপাতালের অবকাঠামো উন্নয়ন ও শয্যা সংখ্যা বৃদ্ধির দাবিটা এলাকার মানুষের শুধু প্রানের দাবিই নয় সঠিক স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করন এখন অতীব জনগুরুত্বপূর্ণ বিষয়।

জানা গেছে, ১৯১৫ সালের ৭ এপ্রিল রায় সাহেব বিনোদ বিহারী সাধু ২০ শয্যা বিশিষ্ট যাদব চন্দ্র চ্যারিটেবল ডিসপেনসারী ও ভরত চন্দ্র হাসপাতাল হিসেবে এটি প্রতিষ্ঠা করেন। পরবর্তিতে ১৯৭৫ সালে প্রতিষ্ঠানটি সরকারি করন করা হলে শয্যা সংখ্যা কমে ১০ শয্যার হাসপাতাল হয়।

 তৎকালীন জেলা পরিষদ, হাসপাতাল প্রতিষ্ঠাতার প্রদেয় অর্থের লভ্যাংশ দ্বারা পরিচালিত হত। হযরত পীর জাফর আউলিয়া, মহাভারতীয় যুগে মুনি কপিল, বৌদ্ধ যুগে বাগনাথমহন্ত স্মৃতি বিজড়িত এবং কপোতাক্ষ তীরবর্তী দক্ষিণ খুলনার সর্ববৃহৎ বাণিজ্যিক কেন্দ্র।

 দানবীর রায় সাহেব বিনোদ বিহারী সাধু যার আধুনিক রূপকার। ভৌগলিক অবস্থান বিন্যাসে খুলনা, সাতক্ষীরা ও যশোর সীমানা প্রায় ২০ কিলোমিটার ব্যাসার্ধের মধ্যে স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয়ের অধীনে কপিলমুনি হাসপাতাল প্রায় অর্ধ কোটি মানুষের স্বাস্থ্য সেবা প্রদানের একমাত্র সরকারী হাসপাতাল। জগৎ বিখ্যাত বিজ্ঞানী আচার্য স্যার পি সি রায় এর অনুপ্রেরণায় বিনোদ বিহারী সাধু হাসপাতাল প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি শিক্ষা, অর্থনৈতিক স্বনির্ভরতার জন্য বাণিজ্যিক কেন্দ্র, টেকনিক্যাল স্কুল, উপসানালয় সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করেন।

 স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে হাসপাতাল নির্মাণে তৎকালীন সময়ে নিজস্ব বিদ্যুৎ ব্যবস্থা সহ এক্স-রে মেশিন স্থাপন করেন। তৎকালীন খুলনা সদর হাসপাতালেও উন্নত চিকিৎসার জন্য ছিলনা কোন এক্স-রে মেশিন। উর্দ্ধতন কর্মকর্তার বিশেষ অনুরোধে কপিলমুনি হাসপাতালের এক্স-রে মেশিনটি সদর হাসপাতালে নিজ খরচে ভবন নির্মান সহ প্রতিস্থাপন করা হয়, যাহা আজও দৃশ্যমান। নাছিরপুর গ্রামে অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা শেখ নেছার আলী জানান, এই ঐতিহাসিক ও বর্ধিষ্ণু জনপদের বিশাল জনগোষ্ঠির চিকিৎসা সেবা প্রদানে প্রয়োজনীয় জনবল এবং অবকাঠামোগত অবস্থা কপিলমুনি হাসপাতালের নাই।

এলাকার প্রবীন ব্যক্তিত্ব আলহাজ্ব এরফান আলী মোড়ল জানান, হাসপাতাল শয্যা বৃদ্ধি  এখন সময়ের দাবি। সাবেক উপাধ্যক্ষ আফসার আলী জানান, বৃহত্তর খুলনার ইতিহাসে ও ঐতিহ্যের অন্যতম দাবিদার প্রবীন জনপদ কপিলমুনি। এখানে জন্ম গ্রহন করেছেন দেশ বরেণ্য ব্যক্তিবর্গ। ঐতিহাসিক স্থান ও বাস্তব প্রেক্ষাপট বিবেচনায় হাসপাতালে শয্যা বৃদ্ধি দ্রুত বাস্তবায়ন করতে হবে।

 খুলনা-৬ আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ্ব এ্যাড. শেখ মো. নূরুল হক স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয়ের সচিব বরাবর কপিলমুনি হাসপাতালের শয্যা সংখ্যা উন্নীত করনে ডিও দিয়েছেন। তিনি বাজাসস/১০৪/খুলনা-৬/২০১৮-১০৯১ নং স্মারকে উল্লেখ করেন, ঐতিহাসিক বর্ধিষ্ণু জনপদ কপিলমুনি হাসপাতালের অবকাঠামোর উন্নয়ন ও শয্যা সংখ্যা কমপক্ষে ২০ শয্যায় উন্নিত করন এলাকার মানুষের প্রাণের দাবি এবং সময়ের দাবিও বটে।

 বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে হাসপাতালের দায়িত্ব প্রাপ্ত মেডিকেল অফিসার ডা. আ. রব এ প্রতিনিধিকে জানান, কপিলমুনি হাসপাতালটি দুই একর জমির উপর প্রতিষ্ঠিত। এখানে একতলা বিশিষ্ট বহি:বিভাগ, দ্বিতল বিশিষ্ট আন্ত:বিভাগ, পুকুর ২ টি, বেড সংখ্যা ১০টি, অক্সিজেন সিলিন্ডার -৬টি, অক্সিজেন ফ্লোমিটার ২টি, আবাসিক ভবন (সবগুলি পরিত্যাক্ত) এবং জনবল কাঠামো, ডাক্তার (পদ ২টি) শূন্য ১টি, নার্স (পদ ৪টি) শূন্য ১টি, ফার্মসিষ্ট, অফিস সহকারী ২জন এবং রয়েছে ২জন পরিদর্শন কর্মী।

আয়া, বাবুর্চি, নাইটগার্ড, ওয়ার্ডবয় ও ফ্লোর ক্লিনার নাই। হাসপাতালে এ্যাম্বুলেন্স, অপারেশন থিয়েটার, লেবার রুম ও লেবার ওয়ার্ড নাই। এলাকাবাসী অতি দ্রুত হাসপাতালের শুন্য পদ পুরনসহ প্রতিষ্ঠানটির শয্যা সংখ্যা বৃদ্ধির জন্য সংশ্লিষ্ঠ কর্তৃপক্ষের নিকট জোর দাবি জানিয়েছেন।

 

এবিএন/তৃপ্তি সেন/জসিম/তোহা

এই বিভাগের আরো সংবাদ