আজকের শিরোনাম :

আশাশুনিতে এআইআরপি কাজে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ২১ অক্টোবর ২০১৮, ২০:২৯

আশাশুনি উপজেলার বিভিন্ন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আর্সেনিক আইরন রিনোভাল প্লান্ট (এআইআরপি) এর কাজে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে।

ডিপিই- ডিপিএইচই, পিইডিটি-৩/২০১৭ এর আওতায় আশাশুনি উপজেলায় আর্সেনিক আইরন রিনোভাল প্লান্ট কার্যক্রম সম্পন্ন করা হয়েছে।  কাজে ব্যাপক অনিয়ম এবং কাজের ধরণ, অর্থ বরাদ্দসহ সকল প্রকার তথ্য অন্ধকারে রেখে কাজ করা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

উপজেলার ১৯টি স্কুলে ১৯টি এআইআরপি কাজ শুরুর জন্য ৮/৫/১৭ তাং ঠিকাদার অসীম কুমার দাশকে দায়িত্ব দেওয়া হয়।  ১৯টি কাজের জন্য ৩১ লক্ষ ৩০ হাজার ৫০১ টাকা বরাদ্দ প্রদান করা হয়।  ৯০ দিনের মধ্যে কাজ শেষ করার কথা ছিল।

তৎকালীন উপ সহকারী প্রকৌশলী (জনস্বাস্থ্য) মনিরুজ্জামান ঠিকাদারকে কাজে লাগিয়ে কাজের সার্বিক দেকভাল করেন।  কিন্তু কাজের কোন তথ্য বা কাগজপত্র সংশ্লিষ্ট স্কুল কর্তৃপক্ষ, উপজেলা শিক্ষা অফিসার বা উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে সরবরাহ করা হয়নি। তাদের সকলকে অন্ধকারে রেখে কিছুটা গোপনীয়তা অবলম্বন করে কাজ করা হয়। কাজের কোয়ালিটি কেমন হয়েছে, তা স্থানীয় পর্যায়ের বা উপজেলা পর্যায়ের কাউকে জানতে দেওয়া হয়নি। জানানোও হয়নি।

সরেজমিন গেলে দেখা যায়, প্লান্টটি অচলাবস্থায় রয়েছে। ভিতরের কাজ সম্পর্কে কিছু বোঝার সুযোগ না থাকলেও প্লাষ্টার, গ্রীল স্থাপনে অনিয়ম, রং না করাসহ অনেকগুলো বিষয়ে সুস্পষ্ট অনিয়মের ছাপ রয়েছে। কাজ শেষ করার কথা ২০১৭ সালের আগষ্ট মাসে, সেখানে আরও একটি বছর অতিরিক্ত পার হয়ে গেছে।

আগরদাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এস এম আলাউদ্দিন ও এসএমসি সভাপতি জানান, কাজ শুরুর আগে তাদেরকে স্টিমেট বা কোন তথ্য দেওয়া হয়নি, পরেও কিভাবে, কত টাকা বরাদ্দে, কি কাজ করা হবে সে সম্পর্কেও তাদেরকে কিছু বলা হয়নি। বাধ্য হয়ে তারা শ্রমিকদের সাথে কথা বলে কাজের ধরন সম্পর্কে জানতে গেলে তারা জানেনা বলে জানিয়ে ইঞ্জিয়ার জানে এবং পরে ঠিকাদার জানে বলে এড়িয়ে যায়।  গত মাসে (সেপ্টেম্বর) অফিস থেকে প্রত্যয়নপত্র নেওয়ার জন্য স্কুলে গেলে তিনি (প্রধান শিক্ষক) কাজ সম্পর্কে কিছুই জানেননা, কিভাবে প্রত্যয়ণপত্র দেবে বলে বিদায় করে দেন।

বুধহাটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জুলহাস উদ্দিন বলেন, তার কাছে কাজের নলকুপ মেকানিক শেখ রেজাউল ইসলাম প্রত্যয়নপত্র নিতে আসে।  তখন আমি কাজ দেখিনি, কিভাবে প্রত্যয়ণ দেব বলি।  তখন সে প্রত্যয়ন দিলেননা, দিলে ভাল হতো। এখন কষ্ট করে সিল বানাতে হবে বলে সতর্ক করে দিয়ে প্লান্ট ব্যবহারের জন্য আমাদের কাছে থাকা রেঞ্জসহ বিভিন্ন যন্ত্রপাতি সে নিয়ে যায় বলে প্রধান শিক্ষক জানান।

উপজেলা শিক্ষা অফিসার মোসাঃ শামসুন নাহার জানান, মৌখিকভাবে কাজ হচ্ছে জানান হয়, কিন্তু প্রকল্প সম্পর্কে কোন কিছু জানান হয়নি বা কাগজপত্রও দেওয়া হয়নি। উপ-সহকারী প্রকৌশলী (জনস্বাস্থ্য) মনিরুজ্জামানের মোবাইলে কয়েকজন সাংবাদিক অনেকবার রিং করেেল তিনি ব্যস্ততা দেখিয়ে তথ্য না দিয়ে এড়িয়ে যান।

মেকানিক রেজাউল বলেন, ২ জন বাদে সবার কাছ থেকে প্রত্যয়ন নেওয়া হয়েছে। তবে সিল বানানোর কথা বলা হয়নি বলে তিনি দাবী করেন। বর্তমান উপ সহকারী প্রকৌশলী (জনস্বাস্থ্য) দারুস সালামের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি কাজের বরাদ্দ, কতদিনে শেষ করার কথা তথ্য দিলেও বিস্তারিত দিতে পারেননি। তবে কাজ সামান্য বাকী আছে বলে নিশ্চিত করেন।

এ কারনে প্রশ্ন থেকে যায়, কাজ শেষ না করে কিভাবে প্রত্যয়নপত্র নেওয়া হয়েছে। তাহলে “ডাল মে কুছ কালা হায়” – প্রবাদ সঠিক বলে মনে হচ্ছে নয় কি? উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাফফারা তাসনীন বলেন, বিষয়টি  খোজ খবর নিয়ে দেখব কি হয়েছে।  

এবিএন/জি এম মুজিবুর রহমান/জসিম/রাজ্জাক

এই বিভাগের আরো সংবাদ